দেশের সময়, ঠাকুরনগর: তৃণমূলের নব জোয়ার কর্মসূচির আওতায় রবিবার ঠাকুরনগরে যান তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি এদিন বীণাপাণি দেবী (বড়মা)-র ঘর ঘুরে দেখবেন বলে জানা গিয়েছে।
তাঁর সুরক্ষায় আঁটসাঁট নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু, তাঁর আসার আগেই মন্দিরে বসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে দেখা যায় মতুয়াদের একাংশকে। অন্যদিকে, তাঁকে স্বাগত জানানোর জন্য উপস্থিত হওয়া সমর্থকদের মধ্যেও হুড়োহুড়ি লক্ষ্য করা যায়।
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে রীতিমতো সাজো সাজো রব ছিল মতুয়াদের একাংশের মধ্যে। বাদ্যযন্ত্রের আয়োজনও করা হয়েছিল। কিন্তু, সেই ভিড়ের মধ্যেই একাংশকে নিজেদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। যদিও কয়েকজন বর্ষীয়ান নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এদিকে অভিষেকের সফরের আগেই সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পোস্টার পড়তে দেখা যায়। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা মতুয়া মহাসংঘের নেতা শান্তনু ঠাকুর বলেন, “আমি মন্ত্রী হিসেবে বা সাংসদ হিসেবে কিছু জানি না। এটা মতুয়াদের আবেগের বিষয়।” এদিন বিক্ষোভের মধ্যে বেলা ৩.৫০ মিনিট নাগাদ ঠাকুরবাড়িতে পৌঁছন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, এদিন মূল মন্দিরে যেতে পারেননি তিনি। পাশের একটি মন্দিরে তিনি যান।
এরপর বীণাপাণি দেবীর ঘরে যান তিনি। এদিকে মন্দিরে ঢুকতেই তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করেন শান্তনু ঠাকুরের অনুগামীরা। এদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঠাকুরবাড়িতে যাওয়ার আগেই শান্তনু ঠাকুর বলেছিলেন, “মতুয়াদের অন্যতম ধাম ঠাকুরবাড়ি। সেখানে আমরা থাকি। সেখানে যদি এত পুলিশ আসে এবং বিরক্ত করে আমাদের লোকজনদের সেক্ষেত্রে আমরা তাঁদের সঙ্গে সহজভাবে কথা বলব না।”
পাশাপাশি তাঁর আরও মন্তব্য ছিল, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এখানে এসেছেন। কিন্তু, আজকের মতো পুলিশ সেই সময়ও ছিল না।” এদিন বিক্ষোভের মধ্যে আদৌ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঠাকুরবাড়িতে পৌঁছতে পারবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু, তিনি নির্ধারিত সময়েই সেখানে উপস্থিত হন।
এদিন শান্তনু ঠাকুরকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি। শান্তনু ঠাকুর যে বাড়িতে থাকেন সেখানে জলের ব্যবস্থা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্তব্য করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “মতুয়া মন্দির কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়। মতুয়া মাটিকে কালিমালিপ্ত করা হল। আমি যাতে মন্দিরে ঢুকতে না পারি তার জন্য মন্দির ঘিরে রেখেছে বিজেপি।”
‘আমি ৩ মাস অন্তর ঠাকুরবাড়িতে আসব, দম থাকলে আটকে দেখাক।’ উত্তপ্ত মতুয়াগড়ে দাঁড়িয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শান্তনু ঠাকুরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “উনি যে বাড়িতে থাকেন, সেখানকার জলের ব্যবস্থা মমতা করেছেন। যে রাস্তা দিয়ে হেঁটে তৃণমূলকে চমকাচ্ছেন সেই রাস্তাও মমতার করে দেওয়া। চাইলে ভিড় ভেঙে মন্দিরে ঢুকতে ৫ মিনিট লাগবে। ধর্মকে সামনে রেখে রাজনীতি করছেন শান্তনু ঠাকুর। মতুয়া-মাটিকে কালিমালিপ্ত করা হচ্ছে। আমার কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না, আমি পুজো দিতে এসেছিলাম।”