দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সামনেই দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন।বিরোধী শিবিরের পক্ষ থেকে লড়াই করবেন কে? প্রশ্ন উঠলেও উত্তর এখনও নির্দিষ্ট হয়নি। আর ঠিক সেই কারণেই বৈঠকের ডাক দিয়েছেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী ঠিক করতে আগামী মঙ্গলবার দ্বিতীয় বার বৈঠকে বসার কথা বিরোধী দলগুলির। এই বৈঠকের আহ্বায়ক এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার । কিন্তু রবিবার সন্ধ্যা পযন্ত ওই বৈঠক নিয়ে বিরোধী শিবিরে কোনও হেলদোল নেই। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন না। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, মমতার সিদ্ধান্তে পরশুর বৈঠকের গুরুত্ব অনেকটা কমে গিয়েছে। তবে তৃণমূল যোগ দিচ্ছে এই বৈঠকে। দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যোগ দেবেন এমনই ঠিক আছে। কিন্তু বাকি সব দলের তরফে এখনও স্পষ্ট করা হয়নি তারা যোগ দিচ্ছে কিনা। যদিও কংগ্রেস এবং বাম দলগুলি যাবে।
গত ১৫ জুন দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে বিরোধী দলগুলিকে বৈঠকে ডেকেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিন শুধু পাওয়ারের নাম নিয়ে কথা হয়। কিন্তু পাওয়ার নিজে জানিয়ে দেন, তিনি রাজি নন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন জন্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ এবং বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর নাম প্রস্তাব করেন। কিন্তু সেই নাম নিয়ে কোনও আলোচনা সেদিনের বৈঠকে হয়নি।
শনিবার ফারুক জানিয়ে দেন তিনিও রাজি নন। আপাতত জম্মু-কাশ্মীরের পাশে থাকতে চান। সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার ইচ্ছা নেই। তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, ৮৩ বছর বয়সি ফারুকও আসলে নিশ্চিত হারের সম্ভাবনা মাথায় রেখেই রাষ্ট্রপতি হওয়ার দৌড়ে নামতে চান না। একই কারণে পিছিয়ে গিয়েছেন শরদও
পরশুর বৈঠকে অংশ নেওয়া দলগুলি নিজেদের পছনের প্রার্থীর কথা জানাতে পারে। পাওয়ারকে প্রার্থী করার ক্ষেত্রে যেমন বেরোধী নেতারা একমত হয়েছিলেন, বাকিদের ক্ষেত্রে তা নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে কংগ্রেস ও বামেরা বিরোধী প্রার্থী বাছাইয়ে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে।
কংগ্রেসের ঘরের লোককে প্রার্থী করার ব্যাপারে তৃণমূলেরও আপত্তি আছে। কিন্তু কংগ্রেসকে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া থেকে দূরে ঠেলে রাখতে চাননি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেসকে আমন্ত্রণ জানানোয় বৈঠক বয়কট করেছে আম আদমি পার্টি ও তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি। ফলে পরশুর বৈঠকে কোনও প্রার্থীর ব্যাপারে সহমত না হওয়া গেলে কংগ্রেস পরের বৈঠকের আহ্বায়ক হতে যেতে পারে। দু’দুটি বৈঠকে যোগ দেওয়ার পর কংগ্রেস এই প্রস্তাব দিতেই পারে।
রাজনীতির বাইরের কোনও ব্যক্তিকে রাজি করানো এবং তাঁর ব্যাপারে বিরোধীরা সহমত না হলে কংগ্রেস দলীয় নেতাকে প্রার্থী হিসাবে এগিয়ে দিয়ে বিরোধী শিবিরের রাশ নিজেদের হাতে নেওয়ার চেষ্টা চালাবে, মনে করছে রাজনৈতিক মহল। লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার মীরা কুমার তো আছেনই, মহারাষ্ট্রের সুশীল কুমার সিন্ধে, কেরলের একে অ্যান্টনির মতো নেতারা আছেন কংগ্রেসে।
তবে তৃণমূল নেত্রী একটি কথা স্পষ্ট করে রেখেছেন, সর্বসম্মত না হলে বিরোধীরা কোনও প্রার্থী দেবে না। সেক্ষেত্রে দলগতভাবে কোনও দল প্রার্থী দিতেই পারে। ফলে বিরোধী শিবিরের পরিণতি কোন দিকে গড়াবে তা নিয়ে ঘোর সংশয় তৈরি হয়েছে। এমনীতেই এনডিএ তথা বিজেপি প্রার্থীর জয় নিয়ে খুব একটা সংশয় নেই। যেটুকু ভোট এনডিএ-র কম আছে বিজু জনতা দল বা ওয়াইএসআর কংগ্রেসের মধ্যে যে কোনও একটি দল সমর্থন দিলেই ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে।