দেবন্বিতা চক্রবর্তী : ৭৩তম স্বাধীনতা দিবস পালনে মেতে উঠেছে গোটা দেশ। কোথাও বন্যা আবার কোথাও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও স্বাধীনতা প্রাপ্তির এই বিশেষ দিন পালনে কোনও খামতি নেই কোথাও। তার সঙ্গে এবার অতিরিক্ত পাওনা একই দিনে রাখি বন্ধন উত্সব।
এক নজরে:
- নিছক একটি উত্সব থেকে আন্দোলনের অংশে পরিণত হয় রাখি বন্ধন।
- সবাই সবার হাতে রাখি পরিয়ে একজোট থাকার বার্তা দেওয়া ব্রিটিশ সরকারকে।
১৯ বছর পর স্বাধীনতা দিবসের সঙ্গে একই দিনে পালিত হচ্ছে রাখি বন্ধন। ২০০০ সালে এর আগে ১৫ আগস্ট পড়েছিল রাখি পূর্ণিমা।
সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, প্যারেড সেরেই সবাই ব্যস্ত রাখির আনন্দে। ইতিহাসেও স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে রাখির বিশেষ যোগ রয়েছে। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাখি বন্ধনের মাধ্যমে আন্দোলন গড়ে তোলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
নিছক একটি উত্সব থেকে আন্দোলনের অংশে পরিণত হয় রাখি বন্ধন। সবাই সবার হাতে রাখি পরিয়ে একজোট থাকার বার্তা দেওয়া ব্রিটিশ সরকারকে।
দিল্লি থেকে বাংলার পেট্রাপোল সীমান্ত শহর বনগাঁ সহ বিভিন্ন শহর ও জেলায় পালিত হল দেশের ৭৩ তম স্বাধীনতা দিবস ও রাখি উৎসব রইল তারই কিছু অংশ বিশেষ:
একদিকে রাখি বন্ধন অন্যদিকে স্বাধীনতা দিবস। পরপর দু দিনের এই অনুষ্ঠানে জমজমাট বনগাঁ। পেট্রাপোল থানার উদ্যোগে পেট্রাপোল সীমান্তে কর্তব্যরত বিএসএফের হাতে রাখি পরানো হলো। ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিএসএফ জওয়ানদের রাখি পরিয়ে সম্প্রীতির নজির গড়লেন স্থানীয়রা।
এর পাশাপাশি বুধবার বনগাঁ বিজেপির উদ্যোগে বাটার মোড়ে পথ চলতি মানুষদের রাখি পরিয়ে, মিষ্টিমুখ করিয়ে বরণ করে নেওয়া হয় ।
বৃহস্পতিবার বনগাঁ সাব ডিভিশনাল চেম্বার অব কমার্সের উদ্যোগে এবং বনগাঁ পৌরসভার উদ্যোগে রাখি বন্ধন উৎসব পালন করা হয়।
জয়পুর উজ্জ্বল সংঘ ক্লাবের উদ্যোগে স্থানীয় সংগীত স্কুল সুরাঙ্গন মিউজিক এ্যাকাডেমির ছাত্র- ছাত্রীরা তাদের সংগীতের মাধ্যমে এদিন স্বাধীনতা দিবস পালন করেন৷
রাখি বন্ধন উৎসবে মেতে ওঠেন বিভূতিভূষণ বিএড কলেজ সহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে সম্প্রতির উৎসব রাখিবন্ধন পালিত হয়।
নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে বৃহস্পতিবার সকালে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতীয় পতাকা তুলে, নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী এবং খরিদ্দার দের হাতে রাখি পরিয়ে, লাড্ডু খাইয়ে তার সঙ্গে রক্তদান শিবির এবং ডেঙ্গু মোকাবেলায় মশারি বিতরণ করে বিশেষ অনুষ্ঠান পালন করা হয় ।
এদিন বনগাঁ পুরসভার উদ্যোগে নীলদর্পণ ভবনের সামনে ভারতের ৭৩ তম স্বাধীনতা দিবস নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করা হয়।
বোলপুর – শান্তিনিকেতনে যথা মর্যাদায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপন।
যথা মর্যাদায় দেশের ৭৩ তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হল বোলপুর ও শান্তিনিকেতনে। শুক্রবার সকাল ৮ টায় শান্তিনিকেতনের বিনয় ভবন ময়দানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দিল্লির প্রাক্তন আমলা পিনাকরঞ্জন চক্রবর্তী।
পতাকা উত্তোলন করার পর “তোমার পতাকা যারে দাও” ও জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন সংগীত ভবন এর ছাত্রছাত্রীরা। এরপর প্যারেডে অংশগ্রহণ করেন বিশ্বভারতী পাঠভবন, শিক্ষাসত্র, এন.এস.এস. ইউনিট, ফিজিক্যাল এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট ও বিশ্ব ভারতীর নিরাপত্তা কর্মীদের একটি দল।
প্যারেডে বিজয়ী ফিজিক্যাল এডুকেশনের ডিপার্টমেন্টের আধিকারিকের হাতে ট্রফি তুলে দেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। ত্রিবর্ন রঞ্জিত বেলুন আকাশে ছাড়েন বিশ্বভারতীর উপাচার্য ও অন্যান্য অতিথিবর্গ।
বিশ্বভারতীর পাশাপাশি বোলপুরেও সাড়ম্বরে উদযাপন করা হয় স্বাধীনতা দিবস। বোলপুরের মহাকুমা তথ্য সংস্কৃতিক দপ্তরের উদ্যোগে বোলপুর প্রশাসনিক ভবনে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তথ্য সাংস্কৃতিক আধিকারিক অরিত্র চক্রবর্তী জানান- “জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সূচনা হয় অনুষ্ঠানের।
এরপর দেশাত্মবোধক স্বদেশী গান ও ও রবীন্দ্র নৃত্যের মাধ্যমে স্মরণ করা হয় স্বাধীনতা সংগ্রামী মহামনীষীদের; পাশাপাশি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেওয়া হয় বিভিন্ন রকমের সামাজিক বার্তা” অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বোলপুরের মহকুমা শাসক অভ্র অধিকারী।
বুধবার বনগাঁয় বিজেপি কর্মী সমর্থকরা যশোর রোডে রাখি উৎসব এর সূচনা করেন পথচারীদের কে রাখি ও লাড্ডু খায়িয়ে৷
ছবি তুলেছেন- রতন সিনহা, দীপ বিশ্বাস, ঈন্দ্রজিৎ রায়, দীপক পাল, সোমনাথ পাল।