দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কী ঘটতে চলেছে কাশ্মীরে? সঠিক ভাবে না জানলেও এতক্ষণে এটা পরিষ্কার যে বড়সড় কিছুই ঘটতে চলেছে জম্মু ও কাশ্মীরে। রাজ্যের তিন প্রধান নেতা ওমর আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতি ও সাজ্জাদ লোনকে রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ গৃহবন্দি করা হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে নটায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে বসছে কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট বৈঠক। সেখানেই বড়সড় কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক বলেছেন, কোনও সিদ্ধান্ত গোপনীয় ভাবে নেওয়া হবে না। যা হবে, সংসদে আলোচনা করেই হবে।
কেন্দ্রের বিজেপি সরকার কি বড়সড় আঘাত হানতে চলেছে জঙ্গিদের উপর, নাকি ৩৫ এ অথবা ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়ার পথেই যেতে চলেছে?
পর্যটকেরা তো বটেই রাজ্য ছেড়ে দলে দলে চলে যাচ্ছেন অন্য রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকেরাও। হস্টেল ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের। রেলওয়ে সূত্রের খবর, টিকিট পরীক্ষা নিয়ে কোনওরকম কড়াকড়ি করা হবে না। জম্মু, কাটরা ও উধমপুর থেকে যে সব ট্রেন ছাড়বে আগামী ৪৮ ঘণ্টায়, সেই সব ট্রেনের যাত্রীদের টিকিট না থাকলেও ব্যবস্থা নেবে না রেল। অসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রক সূত্রের খবর, বিমানসংস্থাগুলিও শ্রীনগরের বিমানের ক্ষেত্রে ভাড়া নিয়ন্ত্রণে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আসুন দেখে নেওয়া যাক গত ২৪ ঘণ্টায় কী কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কাশ্মীরকে ঘিরে, কোনগুলিই বা কার্যকর করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি জারি হয়েছে রবিবার গভীর রাতে।
◙ মধ্য রাত থেকে শ্রীনগর ও জম্মুতে জারি হলো ১৪৪ ধারা। মোবাইল পরিষেবা বন্ধ করা হলো। শ্রীনগর জেলায় সমস্ত স্কুল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাখার নির্দেশ। সোমবার জম্মু, কিস্তওয়ার, ডোডা, রেসাই ও উধমপুর জেলায় সমস্ত স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ।
◙ রাজ্যের কোথাও কোনওরকম মিটিং, মিছিল করা সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ।
◙ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ, আধাসামরিক বাহিনীর টহল।
রবিবার কাশ্মীরি নেতারা একযোগে কেন্দ্রকে বলে, কাশ্মীরের স্পেশ্যাল স্টেটাস তুলে নিলে তার পরিণাম ভালো হবে না।গৃহবন্দি হওয়ার পরে মেহবুবা টুইট করে বলেন, “আমাদের মতো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের এ ভাবে গৃহবন্দি করা হলো। জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের কী ভাবে কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে তা দেখছে সমগ্র বিশ্ব।” ওমর আবদুল্লা টুইটে লিখেছেন, “আমার মনে হচ্ছে আমাকে গৃহবন্দি করা হচ্ছে। যা ভাগ্যে আছে হবে, সকলের সঙ্গে আবার দেখা হবে। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন।”
ওমর লেখেন,“জানি না আমাদের রাজ্যের ভাগ্যে কী আছে। কাশ্মীর তো বটেই, কার্গিল, লাদাখ ও জম্মুর মানুষদেরও বলছি, আপনারা শান্ত থাকুন।”
গত দুদিন ধরে সাউথ ব্লকে চূড়ান্ত ব্যস্ততা কাশ্মীরকে নিয়ে। অমরনাথ যাত্রা বাতিল করে ফিরে যেতে বলা হয়েছে পূণ্যার্থীদের। অতিরিক্ত ৩৫ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও র-এর প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ।
ওমর বলেছেন, রাজ্যে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়িয়ে যাতে না পড়ে সে জন্য কেন্দ্র ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে তিনি আশা করছেন। বিশেষত পির পাঞ্চাল ও চেনাব উপত্যকার মানুষদের জন্য তিনি উদ্বিগ্ন বলে মন্তব্য করেন ওমর।
এরই মধ্যে কংগ্রেস নেতা শশী তারুর টুইট করে জানতে চান, কাশ্মীরে ঠিক হচ্ছেটা কী? কাশ্মীরি নেতারা কোনও অন্যায় না করা সত্ত্বেও তাঁদের বন্দি করা হচ্ছে কেন, প্রশ্ন তোলেন তারুর। ওমরদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরিও।
এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কট্টর সমর্থক বলে পরিচিত অভিনেতা অনুপম খের টুইট করে বলেছেন, কাশ্মীর সমস্যার সমাধানের সূচনা হলো।