

কলকাতা : দুর্গাপুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই শিল্পীর তুলিতে টান পড়েছে শ্যামা রঙে। কদিনবাদেই দীপাবলি। আলোর উৎসবে সেজে উঠবে গ্রাম থেকে শহর সর্বত্র। কলকাতার উপকন্ঠেই উত্তর ২৪ পরগণার দত্তপুকুর। এখানকার পালপাড়া এখন ব্যস্ত মাটির প্রদীপ তৈরিতে। সারা বছর মাটির বিভিন্ন জিনিস বানালেও দীপাবলির আগে সবিতা, মইনুদ্দিন, রাখালদের বাড়ির দাওয়া, উঠোন, পাঁচিল, টিনের চালা ভরে ওঠে মাটির প্রদীপে। লক্ষ্মী গনেশের চাহিদা থাকলেও মাটির প্রদীপের সংখ্যাটা আরও বেশি।

দত্তপুকুরের এই পাল পাড়ার প্রায় কয়েক হাজার ঘরে তৈরি হয় এই মাটির প্রদীপ। সারাদিন ধরে চলে মাটি মেখে প্রদীপ বানানোর কাজ, তারপর তাকে রোদে শুকিয়ে আগুনে পোড়ানো হয়। এরপর রঙের পালা, লাল, নীল, হলুদ, সবুজ, গোলাপী, গোল্ডেন নানান রঙের আর নকশার টানে সেজে ওঠে বাংলার এই গ্রামের পোড়া মাটির প্রদীপ। দিনে প্রায় একশোর বেশি প্রদীপ বানাতে হয়। টাকা এবং কর্মচারী থাকলে সেই পরিমাণ আরও বাড়ে। পরিমাণ অনুযায়ী দাম। এরপর মহাজন এসে পাইকারি দরে নিয়ে চলে যায় বাজারে।

স্থানীয় বাজার ঘুরে এই মাটির প্রদীপ চলে আসে কলকাতার বাজারে, কুমোরপাড়ার বিভিন্ন দোকানে। এমনকি বাংলার বাইরে বিহার, উড়িসষ্যা, মহারাষ্ট্রে। বিদেশেও রফতানি হয় এই প্রদীপ। সেখানকার মানুষ, প্রবাসী ভারতীয়রাও কিনে নিয়ে যান এই প্রদীপ জানালেন স্থানীয় প্রদীপ ব্যবসায়ী। দেখুন ভিডিও

এইসব মাটির প্রদীপের দাম এক টাকা থেকে শুরু করে ২০০, ৩০০, ৫০০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে। ছোটো, বড়, মাঝারি নানান আকৃতির গোল, চৌকো, ত্রিকোণ, তুলসী মঞ্চ, হাতি, ঘোড়া, বাড়ি, ঘন্টা ইত্যাদি নানান ডিজাইনের প্রদীপ বিভিন্ন রঙের প্রদীপের মেলা বসেছে কলকাতার কুমোরটুলিতে। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে ক্রেতারও উৎসাহ সহকারে কিনে নিচ্ছেন সেই সব প্রদীপ।

প্রায় চল্লিশ পঁয়তাল্লিশ বছরের পুরনো প্রদীপের ব্যবসা ব্যবসা শিবানী পালের। দেশের সময়কে জানালেন, ‘কালিপুজোর সময় প্রদীপের চাহিদা এমন হয় যে দিয়ে ওঠা যায় না, পাঁচ, সাত, এগারো, চোদ্দ প্রদীপ, ঘট প্রদীপ, স্ট্যান্ড প্রদীপ, মানুষের চাহিদা অনুযায়ী সবরকম প্রদীপই রয়েছে তাদের। বারাসাত থেকে পোড়া মাটির প্রদীপ কিনে এনে নিজেই নানান রঙে সাজিয়ে তোলেন এইসব প্রদীপ। বৈশাখ মাস থেকে শুরু হয়ে যায় প্রদীপ বানানোর কাজ চলে কালিপুজোর পর্যন্ত’।





