Allegations, beating , SSC unemployed teachers, bikash Bhavanশিক্ষকদের বিকাশ ভবন অভিযানে ধুন্ধুমার! চাকরিহারাদের হেলমেট দিয়ে মারার অভিযোগ, কাঠগড়ায় সব্যসাচী দত্তও

0
11

বিকাশ ভবনে আন্দোলনরতন চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশকে মারধর করার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে । অভিযোগ, সল্টলেকের তৃণমূল নেতা সব্যসাচী দত্তর উপস্থিতিতেই চাকরিহারা শিক্ষকদের ওপর বিকাশ ভবনের মধ্যেই হামলা চালানো হয়েছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিকাশভবন চত্বরে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। যদিও তৃণমূল নেতা সব্যসাচী দত্ত বা পুলিশের তরফে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সব্যসাচীর দাবি, “আমি এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় আমার ওপরেই হামলার চেষ্টা করা হয়েছে। পাল্টা হামলার অভিযোগ মিথ্যে।”

অভিযোগ, হেলমেট পরে ভেতরে ঢুকে সেই হেলমেটে করেই চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। ঘটনায় বেশ কয়েকজন গুরুতর জখম হয়েছেন বলে খবর। এমনকী একটি বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যমের এক সাংবাদিককেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ যদিও পাল্টা হামলার অভিযোগ এনেছেন সব্যসাচীও। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে  উত্তেজনা আরও বেড়েছে বিকাশভবন চত্বরে।এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।

বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা থেকে বিকাশ ভবন ঘেরাও অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের’ সদস্যেরা। সেইমতো বেলা বাড়তে না বাড়তেই বিকাশ ভবনের সামনে জড়ো হন শয়ে শয়ে চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। তৃণমূল নেতা সব্যসাচী দত্ত এলাকায় পৌঁছলে উত্তেজনা আরও বাড়তে থাকে।

দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা হকের চাকরির দাবিতে রাস্তায় বসে ছিলেন তাঁরা। করছিলেন অনশনও। আর চারদিকে মোতায়েন বিধাননগর পুলিশ। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ছিলেন তাঁরা। কিছুদিন আগে পর্যন্ত করুণাময়ীর বুকে ছিল এই চিত্র। পরে যুদ্ধ আবহে  পুলিশের তরফ থেকে নির্দেশিকা জারি করা হয়। জরুরি পরিস্থিতিতে উঠে যেতে বলা হয় চাকরিহারাদের। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি বিকাশভবনে। ব্যারিকেড ভেঙে বিধাননগর পুলিশের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে লোহার গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে যান চাকরিহারারা। রীতিমতো বিকাশভবনের দখল নেন তাঁরা! কিন্তু কেন হঠাৎ এই হেন তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হল? চাকরিহারা শিক্ষকদের বক্তব্য, ‘রাজ্য সরকার তলায় তলায় পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

চাকরিহারা শিক্ষকদের প্রতিনিধি মেহবুব মণ্ডল বলেন, “আমরা অবস্থান আন্দোলন চালাচ্ছিলাম। আমাদের কাছে খবর ছিল, আমাদের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা না করে ভিতরে ভিতরে একটা পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। শুধু প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে এমন নয়, তারা নোটিফিকেশনও রেডি করে ফেলেছে। আমরা চেষ্টা করেছিলাম, এখানে অবস্থান করছি, যাতে ওনারা দেখা করেন, সামগ্রিক বিষয়টা জানান। কারণ প্রতিশ্রুতিভঙ্গের কাহিনী শুনেছি।”

রাজ্য সরকার রিভিউ পিটিশন করার সময়েও চাকরিহারাদের অন্ধকারে রেখেছিল বলে অভিযোগ। তিনি বলেন, “আমাদের বলা হয়েছিল, যখন রিভিউ পিটিশন ফাইল করবে, সে সম্পর্কে সামগ্রিক আলোচনা আমাদের সঙ্গে করবে। করেনি। চুপি চুপি অন্ধকারে রিভিউ পিটিশন করে দিয়েছিল। আমরা যখন পরীক্ষার প্রস্তুতি, তখন অবস্থানে বসি। তাও আমাদের সঙ্গে দেখা করা হয়নি।”

চাকরিহারারা এদিনের আন্দোলনে স্পষ্ট করে দেন, “আমরা দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেব না। নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতেই দেব না। যতক্ষণ পর্যন্ত সদর্থক কোনও ইঙ্গিত না আসছে, আমরা বিকাশভবন ছাড়ব না।”
চাকরিহারা আপাতত বিকাশভবনের ভিতরে রয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সরকারের তরফ থেকে তাঁদের কাছে এসে আলোচনায় বসছেন, যতক্ষণ না অবস্থান স্পষ্ট করছে, ততক্ষণ তাঁরা বিকাশভবন ছাড়বেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন।

অবিলম্বে যোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে এবং চাকরি দিয়ে টাকা পাওয়া অযোগ্যদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, এই দাবিতে গত ৯দিন ধরে বিকাশ ভবনের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছেন এসএসসি ২০১৬ প্যানেলের যোগ্য চাকরিহারা অধিকার মঞ্চের শিক্ষকরা। এদিন আচমকা বিকাশ ভবনের সামনে বড় ধরনের জমায়েত করেন তাঁরা। চাকরিহারা শিক্ষকদের আচমকা অভিযানের জেরে অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে পুলিশও। দ্রুত পুলিশের তরফে বিকাশভবনের সামনে ব্যারিকেড তৈরি করা হয়। লোহার প্রধান ফটক লাগিয়েও দেওয়া হয়। বাইরে তখন হাজার হাজার চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক, শিক্ষিকা। তাঁদের হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা, “চোরেদের বিচার চায়, আমাদের চাকরি ফেরত চায়!”

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। চাকরিহারাদের অভিযোগ, অযোগ্যদের বাঁচাতে চাইছে রাজ্য। এরই মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত গ্রুপ সি কর্মীদের মাসিক ২৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়ার কথা বুধবার নবান্ন থেকে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই এদিন বিকাশ ভবনে অভিযানে নামে চাকরিহারারা। সেখান থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে দেড় ঘণ্টার ডেডলাইনও বেঁধে দেন চাকরিহারারা। এরপরই সব্যসাচীর নেতৃত্বে তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। 

Previous articleUkil Burman: অবশেষে ঘরে ফিরলেন উকিল বর্মন
Next articleSSC Movement বাড়িতে অসুস্থ মা , চরম সিদ্ধান্ত  তরুণীর ! বিকাশ ভবনের দোতলা থেকে দিলেন ঝাঁপ ! তারপর…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here