বিশ্বকাপের বদলা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে!
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে ব্যর্থ হলেও, একদিনের ক্রিকেটে ক্যাঙ্গারুদের বিরুদ্ধে কথা বলল বিরাট কোহলির ব্যাট। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে একটুর জন্য জোড়া শতরান হাতছাড়া।
পাকিস্তানের পর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একশো করার সুযোগ ছিল। কিন্তু ৯৮ বলে ৮৪ রান করে আউট হলেন। বিরাটের শতরান হাতছাড়া হলেও, ভারতের জয় আটকাতে পারেনি।বিশ্বকাপ থেকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি।
আহমেদাবাদের বদলা দুবাইয়ে। মঙ্গলবার দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়াকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে চলে গেল টিম ইন্ডিয়া। এক বছর সাড়ে তিন মাস আগে আহমেদাবাদে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল রোহিতদের। চোখের জলে মাঠ ছাড়তে হয়।
মঞ্চ বদলালেও সুদে আসরে বদলা নিল ভারত। ৫৩ বলে অর্ধশতরান সম্পন্ন করেন বিরাট। তাতে ছিল মাত্র চারটে চার। দলের স্বার্থে ঠাণ্ডা মাথায় আরও একটি অনবদ্য ইনিংস কোহলির। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দেন শ্রেয়স আইয়ার, কেএল রাহুল। পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ৪৯.৩ ওভারে ২৬৪ রানে শেষ হয় অজিদের ইনিংস। রান তাড়া করতে নেমে ৪৮.১ ওভারে জয়সূচক রানে পৌঁছে যায় টিম ইন্ডিয়া। ১১ বল বাকি থাকতে জয়। চার রান প্রয়োজন ছিল। ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জেতান রাহুল। ৩৪ বলে ৪২ রানে অপরাজিত।
২৬৪ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল করে রোহিত শর্মা-শুভমন গিল জুটি। তবে ছন্দে থাকা গিল এদিন রান পাননি। ৮ রানে বোল্ড হন। রোহিত শুরুটা ভাল করলেও বেশিক্ষণ উইকেটে টিকে থাকতে পারেননি। ২৯ বলে ২৮ রান করে আউট হন। তাতে ছিল ১টি ছয়, ৩টি চার। ৪৩ রানে জোড়া উইকেট হারায় ভারত। স্বভাবসুলভ ভাবে নিজের কাঁধে বাকি দায়িত্ব তুলে নেন বিরাট কোহলি।
তৃতীয় উইকেটে ৯১ রান যোগ করেন কোহলি এবং শ্রেয়স। এটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। ৬২ বলে ৪৫ রান করে আউট হন মুম্বইকর। ইনিংসে ছিল তিনটে চার। দুবাইয়ের পিচ মন্থর। ব্যাটে বল আসে না। শট খেলা সহজ নয়। নিজের ইনিংস পরিকল্পিতভাবে সাজান কোহলি।
অঙ্ক কষে এগোন। আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন, তিনি ফুরিয়ে যাননি। এখনও তিনি চেজমাস্টার। এদিন শিট অ্যাঙ্করের ভূমিকা পালন করেন বিরাট। একটা দিক আঁকড়ে ধরে থাকেন। কিন্তু অল্পের জন্য শতরান হাতছাড়া হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ২৭ রান যোগ করেন অক্ষর প্যাটেল। ছয় নম্বরে নেমে ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখেন কেএল রাহুল। ৪৭তম ওভারে অ্যাডাম জাম্পার বলে জোড়া ছক্কা হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন হার্দিক পাণ্ডিয়া। ১৮ বলে ১২ রান বাকি ছিল। অনায়াসে জয়ে পৌঁছে যায় টিম ইন্ডিয়া।
টসে জিতে এদিন প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অস্থায়ী অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। শুরুটা নড়বড়ে ছিল অস্ট্রেলিয়ার। শূন্যতে ফেরেন কুপার কোন্নোলি। শুরুতে সামিকে খেলতে বিপাকে পড়েন ট্রাভিস হেড।
স্বচ্ছন্দ বোধ করছিলেন না। তাঁকে কেন্দ্র করেই ইনিংস সাজানোর পরিকল্পনা ছিল অজিদের। দু’বার ভারতের স্বপ্নভঙ্গ করেছেন হেড। একবার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে, অন্যবার বিশ্বকাপে। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পারলেন না। ৩৩ বলে ৩৯ রান করে আউট হন। অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন স্মিথ। তাঁকে কেন্দ্র করেই এগোয় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। ৯৬ বলে ৭৩ রান করে আউট হন। ইনিংসে ছিল ১টি ছয়, ৪টি চার।
অজিদের মিডল অর্ডার ব্যর্থ। কিছুক্ষণ উইকেটে টিকে থাকলেও বড় রান পাননি লাবুশেন। ২৯ রানে ফেরেন। একটা সময় বড় রানের দিকে এগোচ্ছিল অজিরা। কিন্তু জস ইংলিস, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল রান না পাওয়ায় টার্গেটের থেকে ২০ রান কমে শেষ করে অস্ট্রেলিয়া। শেষদিকে অনবদ্য অ্যালেক্স ক্যারি। তাঁর ব্যাট ভর করে দেড়শোর গণ্ডি পেরোয় অজিরা। ১টি ছয়, ৮টি চারের সাহায্য ৫৭ বলে ৬১ রান করেন। তিন উইকেট নেন মহম্মদ সামি। জোড়া উইকেট বরুণ চক্রবর্তী এবং রবীন্দ্র জাদেজার।