Fake Voter: ছাব্বিশে ভূতেরাই কি বাংলার ভবিষ্যৎ গড়বে? ‘ভূত’ ধরতে নতুন ফন্দি , মমতার অভিযোগের পরেই নড়েচড়ে বসল নবান্ন

0
11

Mamata Banerjee – Election Controversy: মনে পড়ে ২০১৬ সালের ভোটে বাম-কংগ্রেস একত্রে বলেছিল, ভোটের দিন বুথে বুথে  ভূতের নৃত্য ঠেকাতেই হবে। নইলে ভূতেরাই ভবিষ্যৎ লিখে ফেলবে বাংলার। সূর্যকান্ত মিশ্র -অধীর চৌধুরীরা সেই সময়ে ভূত বলতে বুঝিয়েছিলেন, যারা ভোটের দিন বুথে বুথে ভুয়ো ভোট দেয়। 

এবার ভূত দেখছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তবে এ ভূত অন্যরকম। অভিযোগ হল, এঁরা আছেন কি নেই, কেউ জানেন না। তবে পালে পালে নাম ঢুকে যাচ্ছে ভোটার তালিকায়।

সম্প্রতি বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন নির্বাচন কমিশনকে ব‍্যবহার করে অনলাইন ভোটার তালিকার নামে কারসাজি করা হচ্ছে। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, মহারাষ্ট্র-দিল্লিতে যা হয়েছে, তা বাংলায় হতে দেবেন না। সে যে শুধু বলার জন্য বলা নয়, তা আরও স্পষ্ট হল শনিবার।

মুখ‍্যমন্ত্রীর অভিযোগের পরেই ভুতুড়ে ভোটার তালিকা সংশোধন করতে কড়া নির্দেশ নবান্নের। নির্দেশ দিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজে বাড়তি নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হল জেলাশাসকদেরও। তা নিয়ে জোর চাপানউতোর প্রশাসনের অন্দরে। 

নবান্ন থেকে এদিন এক ভার্চুয়াল বৈঠকে জেলা শাসকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কোনওভাবেই ভুয়ো ভোটার কার্ড তৈরি হতে দেওয়া যাবে না। আবেদন জমা পড়ার পর যথাযথ যাচাই করতে হবে। কোনও নির্দিষ্ট এলাকায় যদি অস্বাভাবিক সংখ্যক ভোটার কার্ডের আবেদন জমা পড়ে, তবে সেখানে আরও কড়া নজরদারি চালাতে হবে। কোনও অনিয়ম ধরা পড়লে দায় সুনিশ্চিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

মুখ্যসচিব আরও স্পষ্ট করেছেন, যদি প্রশাসনের কেউ ভুয়ো ভোটার তালিকা তৈরির কাজে যুক্ত থাকেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। এমনকি, প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থাও নেবে সরকার।

প্রসঙ্গত ,শনিবার সব জেলার জেলাশাসক এবং একাধিক দফতরে সচিবদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন মুখ‌্যসচিব।

সূত্রের  খবর, বেশ কিছু জেলায় ইতিমধ্যেই ভুতুড়ে ভোটারের তালিকা ধরা পড়েছে বলে অভিযোগ জমা পড়তে শুরু করেছে। কয়েকদিন আগেই বারুইপুরের চম্পাহাটি পঞ্চায়েতের ভোটার তালিকার স্ক্রুটিনি করতে গিয়ে দেখা যায় একেবারে ভুতুড়ে কাণ্ড। গত লোকসভা ভোটেও যে পঞ্চায়েত এলাকায় ভোটার সংখ্যা ছিল সাড়ে ১৮ থেকে ১৯ হাজারের মতো তাতেই বেড়ে ২২ হাজার ৪০০ হয়ে গিয়েছে। এত কম সময়ে একই এলাকায় এত ভোটার বাড়ল কী করে? স্ক্রটিনির তথ্য সামনে আসতেই তা নিয়ে শোরগোল শুরু হয়ে যায়। 

বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, অনলাইন ভোটার তালিকার নামে কারসাজি করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে এই কাজ করা হচ্ছে এবং কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে কাজে লাগানো হচ্ছে। মমতার দাবি, একটি “ভুতুড়ে রাজনৈতিক দল” বিহারের লোকেদের নাম অনলাইনে ভোটার তালিকায় ঢুকিয়ে দিচ্ছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “ভোটার কার্ড বা আধার কার্ডের জন্য তো সশরীরে হাজিরা দিতে হয়, তাহলে অনলাইনে কেন তালিকা সংশোধন করা হচ্ছে?”

মমতা আরও বলেন, “বিজেপি মহারাষ্ট্রে ৪০ লক্ষ ভোট বাড়াল কী করে? দিল্লিতেও একই কাজ হয়েছে। এখানে প্রত্যেক বিধানসভায় ২০-৩০ হাজার বাইরের লোকের নাম ঢোকানোর পরিকল্পনা চলছে। নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করাবে, আর এই বাইরের লোকেরা ভোট দেবে। আমরা এই ষড়যন্ত্র ভেস্তে দেব। আমরা চুরিটা ধরে ফেলেছি।”  

ভুতুড়ে ভোটার নিয়ে সরব হয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনিও বলেছিলেন, “দিল্লিতেও একইভাবে ভোটার তালিকায় কারসাজি করা হয়েছে। মাত্র আট মাসে ৪ লক্ষ নতুন নাম যুক্ত হয়েছে, যা গত ১৪ বছরে হয়নি। নয়াদিল্লি আসনে ২০ হাজার ভোট কমে গিয়েছে, আবার কোথাও ৩০ হাজার বেড়েছে। গোটা দিল্লিতে ৪-৪.৫ লক্ষ নতুন ভোটার যোগ হয়েছে।” অভিষেক নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

তবে এই অভিযোগের পাল্টা মত রয়েছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। তাঁর কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৪ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী, কিন্তু ইলেক্টোরাল রোল সংশোধনের দায়িত্ব কার, তা জানেন না? রেজিস্ট্রেশন অফিসার হলেন জেলাশাসক। আমাদের পক্ষ থেকে ১৬ লক্ষ ডুপ্লিকেট ভোটারের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে এবং বিধানসভা নির্বাচনের আগেই তা বাতিল করা হবে।”  

মুখ্যসচিব স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যে কেউ এই অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত থাকলে তার পরিণতি হবে মারাত্মক। ভুতুড়ে ভোটার নিয়ে বিতর্ক চরমে, তবে এবার কঠোর প্রশাসনিক পদক্ষেপের পথে হাঁটল নবান্ন।

Previous articleSaktikanta Dasমোদীর দফতরে পুনর্বাসন , বড় দায়িত্বে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর, প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি-২ হলেন শক্তিকান্ত দাস
Next articleSuvendu Adhikari বাংলায় ‘ভুতুড়ে’ ভোটার নিয়ে হইচইয়ের আবহেই ফের এনআরসি -র দাবি তুললেন শুভেন্দু

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here