২০২২ সালে গ্রেফতার হন পার্থ। মাসের পর মাস জামিন আবেদন জানিয়েছে আদালতে ঘুরেছেন তিনি। ইডি-র মামলায় জামিন দেওয়া হচ্ছে পার্থকে।
নয়া দিল্লি: অবশেষে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মঞ্জুর করল সুপ্রিম কোর্ট। পয়লা ফেব্রুয়ারির পরে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার সম্ভাবনা তাঁর। প্রায় ২৮ মাস জেলে রয়েছেন তিনি।
তবে সুপ্রিম কোর্ট ইডি মামলায় জামিন মঞ্জুর করেছে। বেল পাওয়ার পরে কোনও তথ্য ও নথি নষ্ট করতে পারবেন না তিনি, এই শর্তে এদিন তাঁর জামিন মঞ্জুর করল সুপ্রিম কোর্ট।
গত ৪ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টে পার্থর জামিন মামলার শুনানি শেষ হয়ে গিয়েছিল। রায় ঘোষণা স্থগিত রেখেছিলেন বিচারপতিরা। তাঁর আইনজীবী মুকুল রোহতগি আদালতে জানিয়েছিলেন, এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া প্রায় সকলেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন।
তাঁর মক্কেলের বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার হয়নি। এমনকি, যাঁর বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছিল, সেই অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। কিন্তু বিচারপতি মন্তব্য করেছিলেন, ‘বাকিরা জামিন পেতেই পারেন, কারণ তাঁরা কেউ মন্ত্রী ছিলেন না। এক জন দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে কি জামিন দেওয়া যায়?’
পার্থের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল কোটি কোটি টাকা। উদ্ধার করা হয়েছিল। ঘনিষ্ঠের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া টাকার দায় মন্ত্রী এড়াতে পারেন না বলেও মন্তব্য করেছিল শীর্ষ আদালত।
২০২২ সালে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে ৫০ কোটি টাকার বেশি নগদ উদ্ধার হয়েছিল। এরপরেই অর্পিতার পাশাপাশি পার্থকেও গ্রেফতার করা হয়। ইডির দাবি নিয়োগ মামলায় দুর্নীতির অন্যতম চক্রী পার্থ।
গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে জেলেই ছিলেন তিনি। ইতিমধ্যে জামিন পেয়েছেন অর্পিতা। জামিনের জন্য বারবার আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছিলেন পার্থ। কিন্তু বারবারই তাঁর আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়। অবশেষে শুক্রবার সুপ্রিমকোর্টে মঞ্জুর হল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন।
ডেডলাইন বেঁধে শর্ত দিল সুপ্রিম কোর্ট
১. শীতকালীন ছুটি শুরু হওয়ার আগে অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে আগে ট্রায়াল কোর্টে চার্জ ফ্রেম করার প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২. ২০২৫-এর জানুয়ারির দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে সংবেদনশীল প্রত্যক্ষদর্শী, অর্থাৎ যাঁদের প্রভাবিত হওয়ার বা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাঁদের বয়ান রেকর্ডের প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।
৩. তদন্তকারী সংস্থা এবং কোর্টের এই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরই জামিন পাবেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জামিন দিতে হবে পার্থকে।
৪. জামিন পাওয়ার পর কোনও সরকারি দফতরের দায়িত্ব নিতে পারবেন না পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অর্থাৎ মন্ত্রী হতে পারবেন না। তবে বিচারে দোষী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিধায়ক হয়ে থাকতে পারবেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০২২-এর ২৩ জুলাই প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডি-র হাতে গ্রেফতার হন পার্থ। আর চলতি বছরে গত ১ অক্টোবর ২০২৪ প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই গ্রেফতার করে পার্থকে।