দিন্নি : বাংলাদেশ ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার ও জামিন নাকচের পর অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ। ঢাকা, রংপুর, চট্টগ্রামে আগুন জ্বলছে। পথে নেমে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন সে দেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা।বাংলাদেশ পশ্চিমবঙ্গের পড়শি দেশ। ইতিমধ্যেই ভারত সরকার এ নিয়ে কড়া বিবৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশের হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে।
সেখানে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর যা অত্যাচারের ঘটনা ঘটছে ও সমাজমাধ্যমে যে সব ছবি দেখা যাচ্ছে, তাতে এপার বাংলাতেও উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ওপার বাংলার সঙ্গে এপার বাংলার হিন্দুদের সংস্কৃতি ও মননের আত্মীয়তা থাকায় সেটাই স্বাভাবিক।
প্রশ্ন হল, এ ব্যাপারে বাংলায় শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থান কী?
বুধবার এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও নতুন জাতীয় মুখপাত্র অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। জবাবে অভিষেক বলেন, “বাংলাদেশে যা ঘটছে তা নিন্দনীয় ও সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক”। তবে অভিষেক এও বলেন, বাংলাদেশে চলতি পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের অবস্থান কী হবে তা দিল্লির সরকার স্থির করবে। মানুষ তাদের সেজন্য জনাদেশ দিয়েছে। এটা আন্তর্জাতিক বিষয়। সুতরাং এ ব্যাপারে নয়াদিল্লি তথা বিদেশ মন্ত্রক যে অবস্থান নেবে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সেটাই তৃণমূলের অবস্থান হবে।
https://x.com/KunalGhoshAgain/status/1861695279122002083?t=RjsF0Jp9AMDzuGuo9Thp-g&s=19
বাংলাদেশ নিয়ে অভিষেক কৌশলগতভাবেই এর বেশি কিছু বলতে চাইনি। বরং অনেকটা কপি বুক কেতায় বিবৃতি দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সেটাই দস্তুর। তবে এও ঠিক যে, বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে নবান্নের উৎকন্ঠাও বাড়ছে। কারণ, যেভাবে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার শুরু হয়েছে তাতে এপার বাংলায় নতুন করে শরণার্থী সমস্যা মাথা তোলার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
তবে এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে নবান্নকে এখনও কোনও অ্যাডভাইজারি পাঠানো হয়নি। নবান্নের এক আমলার কথায়, বিদেশ মন্ত্রক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নিশ্চয়ই গোটা ঘটনার উপর নজর রাখছে। আমরাও কেন্দ্রের অ্যাডভাইজারির অপেক্ষায় রয়েছি। কারণ, যেভাবে পড়শি দেশে অশান্তি ছড়িয়েছে তা নতুন করে অস্থিরতা করতে পারে।
ইসকনের চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তার, রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা এবং তার প্রতিবাদ করায় সে দেশের হিন্দুদের উপর যথেচ্ছ অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশে ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনকালে সংখ্যালঘুদের এ হেন নিরাপত্তাহীনতার ছবি, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলে ইতিমধ্যেই পথে নেমেছে হেফাজতে ইসলাম-সহ বাংলাদেশের একাধিক সংগঠন। সে দেশের উচ্চ আদালতে মামলাও দায়ের হয়েছে।
ঘটনার প্রতিবাদে ময়দানে বঙ্গ বিজেপিও। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, আগামী রবিবারের মধ্যে কাজ না হলে পেট্রাপোল সীমান্তে অবরোধে বসবেন তাঁদের বনগাঁর বিধায়ক। তবে হাসিনা সরকারের পতনের সময় তৃণমূল ঠিক যে ভাবে ভারত সরকারের অবস্থানের সমর্থনে থেকেছে, এ বারও সেই পথেই যে থাকছে, অভিষেকের মন্তব্যে তা স্পষ্ট।