নবান্নের নীচে নেমে এলেন শীর্ষ আমলা-পুলিশকর্তারা, সরাসরি সম্প্রচারের দাবি নিয়ে অনড় চিকিৎসকেরা
দেশের সময় , কলকাতা ডাক্তারি ছাত্ররা বৈঠকে আসতে রাজি হওয়ার পর বিকেল পাঁচটাতেই সভাঘরে চলে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট অপেক্ষা করার পরও বৈঠকে এলেন না জুনিয়র ডাক্তাররা। এরপরই সাংবাদিকদের উদ্দেশে নবান্ন সভাঘর থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ডাক্তার ভাই-বোনদের জন্য ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট অপেক্ষা করেছি। তাঁরা এলেন না।’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ডাক্তারদের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতি নিয়ে আলোচনায় রাজি ছিলাম। ৩৪ জন ডাক্তার এসেছিলেন, সবাকে ঢুকতে অনুমতি দিয়েছিলাম। তার পরও তাঁরা লাইভ স্ট্রিমিং দাবিতে অনড়। বিচারাধীন মামলার কারণেই লাইভ সম্প্রচারে সমস্যা আছে আমরা বলেছিলাম, খোলা মনে আলোচনায় আসুন’। তিনি মনে করিয়ে দেন, সুপ্রিম কোর্ট লাইভ স্ট্রিমিং করতে পারে, সরকার পারে না।
আরজি কর ইস্যুতে বৈঠক করতে জুনিয়র ডাক্তাররা নবান্নে পৌঁছলেও জট খুলল না এখনও। তাঁদের ৩০ জন প্রতিনিধিকেই সরকার বৈঠকে থাকার অনুমতি দিলেও লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবি মানতে রাজি হয়নি। কিন্তু জুনিয়র ডাক্তাররা জানিয়ে দিয়েছেন, লাইভ স্ট্রিমিং না হলে বৈঠকে যাবেন না তাঁরা।
সভাঘরে ২ ঘন্টা ১০ মিনিট অপেক্ষায় রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সঙ্গে রয়েছেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে নীচে নেমে আসেন স্বরাষ্ট্র সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার, এডিজি আইনশৃঙ্খলা মনোজ বর্মা।
নবান্নে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন আরজি কর হাসপাতালের চার জন চিকিৎসক।
বিকেলে নবান্নে ঢোকার মুখেই ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান তোলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তবে এখনও পর্যন্ত তাঁরা পুরোপুরি সিদ্ধান্ত নেননি যে বৈঠকে যোগ দেবেন কিনা। কারণ তাঁরা লাইভ স্ট্রিমিং চান। আন্দোলনকারীরা অনড়, বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার না হলে তাঁরা নবান্নর সভাঘরে ঢুকবেন না। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক যদি সরাসরি সম্প্রচার হয়, তাহলে এই বৈঠক হবে না কেন।
নবান্নের বাইরে দাঁড়িয়েই নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। ইতিমধ্যে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং ডিজি রাজীব কুমারের সঙ্গেও কথা হয়েছে তাঁদের। তবে লাইভ স্ট্রিমিং-এর বিষয় নিয়ে তাঁরা অনড় রয়েছেন। নবান্নের তরফে জুনিয়র ডাক্তারদের বুধবারই আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছিল। কিন্তু জুনিয়র ডাক্তাররা তাঁদের বেশ কয়েক দফা শর্ত রেখে নবান্নে আলোচনায় যোগ দিতে যাননি।
বৃহস্পতিবারও বৈঠক হবে কিনা তা এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নিশ্চিত নয়। মুখ্যসচিব নিজে জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী বিকেল ৫টা থেকে অপেক্ষা করছেন ডাক্তারদের জন্য। রাজ্য সরকার চায় আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হোক। ডাক্তাররা যা দাবি করেছেন তার বেশিরভাগটা মেনে ইতিমধ্যে কাজ হয়েছে। আরও কাজ হবে যার জন্য ডাক্তারদের পরামর্শ চাইছে সরকার। কিন্তু আদৌ এই বৈঠক হবে কিনা, তা এখনও বড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে।
প্রসঙ্গত বৃহস্পতিবার নবান্নের তরফে চিঠি দিয়ে বৈঠকের কথা জানানো হয় আন্দোলনকারীদের। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর থাকার কথাও জানানো হয়। জেনারেল বডির বৈঠকে চিকিৎসকেরা বৈঠকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।