- হীয়া রায় দেশের সময়
পুরী : ৪৬ বছর পর খোলা হল পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের এই রহস্যময় রত্ন ভাণ্ডার। সিক্রেট চেম্বার। যেখানে দু’টি কুঠুরিতে ঠাসা হয়েছে রাশি রাশি সোনাদানা। প্রকাশ্যে এসেছে যাবতীয় রত্নের তথ্য।
ওডিশা সরকারের পক্ষ থেকে ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তাঁরাই রবিবার রত্ন ভাণ্ডারের ভিতরে প্রবেশ করেন। এই টিমে ছিলেন ওডিশা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বনাথ রথ, জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষের মুখ প্রশাসক অরবিন্দ পাড়ি, ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগের আধিকারিত ডিহি গড়নায়ক এবং পুরীর আলঙ্কারিক রাজা গজপতি মহারাজ। রত্ন ভাণ্ডার খোলা হলেও সে ভাণ্ডারের সমস্ত রত্নের পরিমাপ এখনও সম্ভব হয়নি।
কী কী রয়েছে রত্ন ভাণ্ডারে?
ভগবান জগন্নাথদেবকে ভেট দেওয়া সোনা এবং হীরেতে ঠাসা রত্ন ভাণ্ডার। ওডিশা ম্যাগাজিনে প্রকাশিত একটি খবর অনুযায়ী, রাজা অনঙ্গভীমাদেব দেড় হাজার কেজি সোনা দিয়েছিলেন জগন্নাথদেবের গয়না তৈরির জন্য।
রত্ন ভাণ্ডারের অন্দরে রয়েছে দু’টি কুঠুরি। ভিতর ভাণ্ডার এবং বহির ভাণ্ডার। ম্যাগাজিনে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, বাইরের কুঠুরিতে রয়েছে জগন্নাথদেবের সোনার মুকুট, তিনটি নেকলেস। ১২০ তোলার অর্থাৎ গ্রামের এই নেকলেসগুলিকে বলা হয় হরিদাকান্তি মালি। এ ছাড়াও রয়েছে জগন্নাথদেব এবং বলরামের সোনার বাহু এবং সোনার পা।
ভিতরের কুঠুরিতে রয়েছে ৭৪টি সোনার গয়না। প্রতিটি ১০০ তোলা (গ্রাম) ওজনের। এ ছাড়াও রয়েছে সোনা, হীরে, কোরাল, মুক্তর থালা। ১৪০ রকমের রুপোর গয়নাও রয়েছে ভিতরের কুঠুরিতে।
এ ছাড়া জগন্নাথের অলঙ্কারসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে সোনার তৈরি ময়ূরের পালক। কপালে পরার সোনার পট্টি। যা চালুপাটি নামেও চিহ্নিত। রয়েছে জগন্নাথের সোনার কানের দুল শ্রীকুণ্ডল।
সোনার কদম্ব মালা, সোনার চক্র, সোনার গদা, সোনার পদ্ম এবং সোনার শাঁখ। রত্নখচিত একটি ত্রিনয়নও রয়েছে জগন্নাথ এবং সুভদ্রার গয়নার তালিকায়। যার মাধের অংশে রয়েছে একটি ঝলমলে পান্না ।
রত্ন ভাণ্ডারের চাবি বিগত ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে খোলার চেষ্টা করা হয় রত্ন ভাণ্ডার। তবে সে প্রচেষ্টা বিফল হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তালা ভাঙতে হয় ভিতরের কুঠুরির।
বাইরের কুঠুরি থেকে যাবতীয় অলঙ্কার সিন্দুকে ভরে অস্থায়ী ভল্টে রাখা হলেও ভিতরের কক্ষ থেকে প্রায় কিছুই বের করে আনা সম্ভব হয়নি। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সময় পেরিয়ে যাওয়ার কারণেই মাঝপথে কাজ বন্ধ করতে হয়। ভিতরের কুঠুরি থেকে সোনাদানা বের করে আনার জন্য আরও একটি দিন ধার্য করা হবে।ছবি সংগৃহীত