Theatreবাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চস্থ হলো কলকাতার নারকেলডাঙা স্বপ্নিল এর নাটক ‘অমলের চিঠি’ ও ‘নন থিয়েট্রিক্যাল’

0
99
ইরফান রহমান, ঢাকা:

রবি ঠাকুরের ডাকঘর নাটকের সেই অমল, যে ডাক হরকরার চিঠির আশায় আলো হয়ে গিয়েছিল, এখনও আকাশে প্রতিচ্ছবি ভেসে ওঠে অমলের, আর চিঠিগুলো জমা হতে হতে কখন যেন দোপাটির পাহাড় হয়ে গেছে৷ কলকাতার নাটকের দল নারকেলডাঙা স্বপ্নিল সেই অমলকেই এবার ডাক হরকরারুপে হাজির করে মাতালো ঢাকার মঞ্চ৷ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতেই শুধু নয়, ৩০ জুন সোমবার সিলেট ও ১ জুলাই খুলনাতেও তারা দুটি করে নাটক মঞ্চায়ন করেছে৷

৩ জুলাই বুধবার ঢাকার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে এক সন্ধ্যায় পরপর দুটি নাটক ‘অমলের চিঠি’ ও শব্দহীন নাটক ‘নন থিয়েট্রিক্যাল’ মঞ্চস্থ করেছে এই নাটকের দল৷ সন্ধ্যা সাতটা থেকে শুরু হয় প্রদর্শনী৷

প্রথম নাটক ‘অমলের চিঠি’তে গুরুদেবের সেই অমলকে নাট্য নির্দেশক প্রীতম চক্রবর্তী তুলে আনলেন ডাক হরকরার চরিত্রে যেখানে অমল নিজেই ঝোলা কাঁধে নিয়ে, পায়ে ঘুঙুর পরে বেরিয়েছে চিঠি বিলি করতে… ছুটির চিঠি, আলোর চিঠি, স্বপ্ন আলোড়নের চিঠি, যে চিঠি পথ দেখায় অন্তরের, গহীন অন্দরের৷ এতে অমলের চরিত্রে মঞ্চ আলোয় পূর্ণ করেছেন সুমনা মিত্র৷ এছাড়াও অন্যান্য চরিত্রে ছিলেন অভীপ্সা, প্রীতম৷ মঞ্চ পরিকল্পনা, আলোক পরিকল্পনা ও আবহসঙ্গীতে ছিলেন জয়দীপ, তমোঘ্ন, পায়েল, নিরজ ও সঞ্জয়৷

দ্বিতীয় নাটক ‘নন থিয়েট্রিক্যাল’ এ দেখানো হয় মানুষের নিত্যকার জীবনের রোজনামচা৷ যে রোজনামচার শুরু আছে, মৃত্যুতেও যার শেষ নেই৷ অন্যান্য সব প্রাণির মতোই মানুষ জন্ম নেয় এই ধরায়, কিন্তু কাল পরিক্রমায়, সমাজের বাস্তবতায়, সমাজের চাপানো অযাচিত নিয়মের দরুন মানুষ পরিণত হয় যন্ত্রে৷ এমন একটি যন্ত্র যার হৃদয় শুধুই স্পন্দন করতে পারে, অনুভবনীয় কোনো কিছু আর অবশিষ্ট থাকে না তার৷ এই সমাজ- এই পরিবেশ, প্রতিবেশ মানুষকে যেমন গড়ে তোলে, এই গড়ে তোলার পথে আরোপিত করে অজস্র অপ্রয়োজনীয় জিনিস আর বাধা যা মানুষের বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে, মানুষের মননকে ধীরে ধীরে মেরে ফেলে৷ তবু আমরা সকলেই, আমরা মানুষমাত্রই সংগ্রাম করে চলি উন্নত ও নিখুঁত মানুষ হবার তীব্র বাসনায়৷ এ নাটকে কোনো সংলাপ ছিল না৷ মঞ্চের আলো আঁধারের মায়াবী নীরবতায় প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভীপ্সা ঘোষ ও নিরজ মণ্ডল৷ এছাড়াও ছিলেন রাজীব, সঞ্জয় ও প্রীতম৷ সংলাপবিহীন এই নাটক উপস্থিত দর্শকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে৷ এ নাটকটিরও রচনা ও নির্দেশনায় ছিলেন প্রীতম চক্রবর্তী৷

দুটি নাটক মঞ্চায়নের পর উপস্থিত দর্শকের মুহুর্মুহু করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে স্টুডিও থিয়েটার হল৷ এরপর ঢাকার বাতিঘর থিয়েটার কলকাতা হতে আগত নারকেলডাঙা স্বপ্নিল সাংস্কৃতিক সংস্থার সকল সদস্যকে উত্তরীয় পরিয়ে দেয় ও ক্রেস্ট দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করে৷ নাটক মঞ্চায়নের পর বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের নাট্যকার অলোক বসু, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও অধ্যাপক শফি আহমেদ৷ এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নাট্য অভিনেতা ও নাট্যকার আজাদ আবুল কালাম, কামাল বায়েজীদ, জাকির হোসেন প্রমুখ৷

নারকেলডাঙা স্বপ্নিল সাংস্কৃতিক সংস্থার দলনেতা প্রীতম চক্রবর্তী বললেন, ‘বাংলাদেশে নাটক মঞ্চায়ন করতে পেরে আমরা আনন্দিত৷ দুই বাংলার যে অমোঘ অনন্য বন্ধন, তা আরও একবার দেখতে পেলাম এই বাংলায় এসে৷ সবার প্রচুর ভালোবাসা পেয়েছি৷ আমরা অভিভূত৷ আবারও বাংলাদেশে আসতে চাই৷’

Previous articleRath Yatra 2024: সোনার কুঠার দিয়ে কাটা হয় জগন্নাথ দেবের রথ তৈরির কাঠ! জানুন রথের অজানা তথ্য
Next articleL K Advani Hospitalized : ফের অসুস্থ লালকৃষ্ণ আদবাণী, আবার ভর্তি হাসপাতালে,কেমন আছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here