রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রমর একাংশ মহারাজ ‘পলিটিক্স’ করে দেশের সর্বনাশ করছে। শনিবার আরামবাগের নির্বাচনী সভা থেকে বড় অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের কথায়, “সব সজ্জন সমান হয় না। সব সাধুও নয়। আমাদের মধ্যেই কি সবাই সমান আছেন? আমি আইডেনটিফাই করেছি বলেই বলছি।”
এরপরই মমতা বলেন, “ভারত সেবাশ্রমকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। আমার শ্রদ্ধার তালিকায় ওরা দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। বহরমপুরের একজন মহারাজ আছেন। কার্তিক মহারাজ। তিনি ওখানে বলছেন- তৃণমূলের এজেন্টকে বসতে দেব না। সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না, কারণ তিনি ডাইরেক্ট পলিটিক্স করে দেশটার সর্বনাশ করে দিচ্ছেন। আমি আইডেনটিফাই করেছি, কে কে করেছেন।”
বাম জমানার প্রসঙ্গ টেনে মমতা মনে করিয়েছেন, “আসানসোলে একটা রামকৃষ্ণমিশন আছে। ওদের আমি কী হেল্প করিনি? সিপিএম যখন খাবার বন্ধ করে দিয়েছিল, তখন আমি পূর্ণ সমর্থন দিয়েছিলাম। আপনাদের অস্তিত্ব নিয়ে, স্বাধীকার নিয়ে আমি কিন্তু পুরো সমর্থন দিয়েছিলাম। মা, বোনেরা আসত, তরকারি কেটে দিত। সিপিএম কিন্তু আপনাদের কাজ করতে দিত না। নদিয়াতে ইস্কনকেও ৭০০ একর জমি দিয়েছি।”
মমতার কথায়, “আমিও জানি একটা, দুটো থাকবে। দিল্লি থেকে ওদের কাছে নির্দেশ আসে, বলে একে ভোট দিতে বলো। কিন্তু সাধু, সন্তরা কেন একাজ করবেন? ওদের একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। ওদের যারা দীক্ষা নেন, তাঁরা ওই হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে রয়েছেন। কিন্তু রামকৃষ্ণ মিশন তো ভোট দেয় না। তাহলে অন্যকে কেন ভোট দিতে বলবে?”
মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, “কেউ কেউ ভায়োলেট করছে, সবাই নয়। কিন্তু মনে রাখবেন, স্বামী বিবেকানন্দের বাড়িটাই থাকত না, যদি এই মেয়েটা না বেঁচে থাকত।”
মুক্যমন্ত্রী জানান, স্বামীজির বাড়ি দখল করার চেষ্টা হয়েছিল। ডঃ সুব্রত মৈত্র রাতে তাঁকে ফোন করে একথা জানান। মমতার কথায়, “পরের দিন মেয়রকে পাঠিয়ে বললাম- যা টাকা লাগে রাজ্য দেবে,, ওই বাড়ি স্বামীজির থাকবে। অন্য কারও নয়। সিস্টার নিবেদিতার বাড়িও দখল হয়ে যাচ্ছিল। আমরাই সেটা রক্ষা করেছি। অনেকে ভুলে গেছে, তাই বলছি।”
বাংলার শাসক দলের ভূমিকায় থাকলেও তৃণমূল দোষ করলে তাকে শাস্তি দেওয়ার অধিকার জনতার আছে। আরামবাগের সভা থেকে এমনই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘বিজেপি এবং সিপিএম বড় গুণ্ডা। ওদের থেকে বাঁচতে পারবেন না। কিন্তু তৃণমূল দু’টো ভুল করলে তাদের থাপ্পড় মেরে সমঝে দেওয়ার অধিকার আপনাদের আছে।’’
একই সঙ্গে মমতা জানিয়েছেন, যাঁরা তৃণমূলে দোষ করেছিল, যাঁদের নিয়ে ক্ষোভ ছিল তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে তৃণমূল নেতৃত্বও। মমতার কথায়, ‘‘ আপনারা দেখেছেন, একটা-দু’টো যা ক্ষোভ ছিল, আমরা তাতে অ্যাকশনও নিয়েছি। কারণ আমি চাই মানুষের স্বার্থে মানুষের কাজ করতে। আমি আর কারও কোনও স্বার্থ বুঝতে চাই না।’’