দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ লোকসভা নির্বাচনে হাওড়া থেকে নির্দল হয়ে দাঁড়াতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন স্বপন(বাবুন) বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইয়ের এই মন্তব্যে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছিল।
ভাই হলেও বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি যে কোনও প্রশ্রয় দেবেন না তা স্পষ্ট করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবাদিক সম্মেলনে প্রকাশ্যেই বললেন, “আমি পরিবারতন্ত্র করি না। যে যেখানে ইচ্ছে ভোটে লড়তে পারে। আমার কিছু যায় আসে না। ওঁর সঙ্গে আমাদের পরিবারের আর কোনও কোনও যোগ নেই।”তিনি ভাইয়ের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করলেন। শুধু তাই নয়, পরিবারতন্ত্রে যে তিনি বিশ্বাস করেন না, তা ঠারে ঠোরে বুঝিয়ে দিলেন।
বুধবার সকালেই বোমা ফাটিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাই বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়। টিকিট পাননি, তাই হাওড়ায় নির্দল হয়ে দাঁড়াবেন বলে জানিয়েছিলেন বাবুন। হাওড়ার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে উগরে দিয়েছিলেন ক্ষোভ। বলেছিলেন, “যে মানুষটা হাওড়ায় প্রার্থী হয়েছেন, সেই প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় মোহনবাগান ক্লাবের এজিএমের সময় আমাকে গলাধাক্কা দিয়েছিলেন।
আমাকে অপমান করেছিলেন। তাঁকে নিয়ে আমার প্রচুর অ্যালার্জি আছে। হাওড়ার মানুষ ওঁকে মেনে নিচ্ছেন কি না জানি না। কিন্তু আমি বলতে পারি, এই প্রার্থী ঠিক হয়নি।” এরপরেই তিনি বলেন, “আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যাইনি কখনও, যাবও না। ১৯৮১ সাল থেকে দলের সঙ্গে জড়িয়ে। কখনও দলের বিরুদ্ধে যাইনি। দিদিকে বলে, দিদির আশীর্বাদ নিয়েই ভোটে দাঁড়াব নির্দল হয়ে।”
মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে এমন বিক্ষোভের আঁচ প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে। স্বভাবতই সাংবাদিক সম্মেলনেও ভাইকে নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় মুখ্যমন্ত্রীকে। তবে উত্তরে দৃঢ়তার সঙ্গেই মমতা জানিয়ে দেন, ভাই হলেও কোনও অন্যায়কে তিনি প্রশ্রয় দেবেন না। তিনি বলেন, “কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে কাজ করি। আমার আলাদা কোনও পরিবার নেই। মা-মাটি-মানুষই আমার পরিবার। আমি পরিবারতন্ত্র করি না। মানুষই আমার পরিবার।”
এরপরেই কিছুটা আবেগাপ্লুত হয়ে হারানো দিনে ফিরে যান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “অনেক কষ্ট করে ছোট ভাই-বোনদের মানুষ করেছি আমি। কিন্তু ওকে মানুষ করতে পারিনি। আমার পরিবারে ৩২ জন সদস্য আছেন। সবাই ওর উপর ক্ষুব্ধ, প্রত্যেকবার ভোটের সময় অশান্তি করে। বড় হলে অনেকের লোভ বেড়ে যায়। আজ থেকে আমি শুধু নয়, মা মাটি মানুষের সঙ্গে ওর সম্পর্ক বিচ্ছেদ হয়ে গেল। ভাই বলে পরিচয় দেবেন না। নো রিলেশন, সব সম্পর্ক ছিন্ন করলাম।”
এরপরেই সাংবাদিকরা জানতে চান, বিজেপির কি চক্রান্ত করে তাঁর ঘর ভাঙল? উত্তরে মমতা বলেন, “ঘর ভাঙানোর খেলা আগেও দেখেছি, পরিবারকে বাদ দিয়ে যে যার খেলা খেলুক।”