দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ এই মুহূর্তে ‘টক অব দ্য টাউন’ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। জল্পনা শোনা যাচ্ছিল, পদত্যাগ করতে চলেছেন তিনি।
রবিবার দুপুরে রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি ঘোষণা করেছেন যে মঙ্গলবার বিচারপতির পদ থেকে তিনি ইস্তফা দেবেন। তার পর তিনি রাজনীতিতে নেমে পড়বেন।
এদিন বিকালে তিনি নিজেই জানালেন, মঙ্গলবার পদত্যাগ করবেন। এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমি বিচারপতি পদ থেকে মঙ্গলবার পদত্যাগ করব। আগামিকাল বিচারপতি হিসাবে আমার শেষ দিন। আমি সেদিন কোনও বিচারের কাজ করব না। কতগুলি মামলা অর্ধেক হয়ে আছে সেগুলি আমার লিস্ট থেকে রিলিজ করতে হবে। এরপর আমাদের হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে মৌখিক ভাবে জানাব। মঙ্গলবার আমাদের রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখে জানিয়ে দেব। যে মুহূর্তে আমি চিঠিটা পোস্ট করব, সেই মুহূর্ত থেকে আমার রেজিগনেশন কার্যকর হবে। এটাই কনস্টিটিউশন ও কনস্টিটিউশন ল’-এর প্রবিশন। সেটা মঙ্গলবার হবে। এরপর আপনাদের সব প্রশ্নের উত্তর দেব।”
এখন কোটি টাকার প্রশ্ন হল, কোন রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে পারেন তিনি?
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসে যে অন্তত যোগ দেবেন না তা তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “বাংলার শাসকদলের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেই তো রাজনীতিতে নামছি। ওরাই চ্যালেঞ্জ করছিল যে ক্ষমতা থাকলে যেন রাজনীতিতে নেমে পড়ি। তাই ওই দলে যোগ দেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না”। এখানেই না থেমে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “ইতিহাসে আমরা মৌর্য্য সাম্রাজ্যের কথা পড়েছি। আর এখন দেখছি চৌর্য সাম্রাজ্য”।
তবে গেরুয়া শিবিরের একটি সূত্র থেকে দাবি করা হচ্ছে, ৬ মার্চ বুধবার বারাসতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন।
প্রসঙ্গত গত বিধানসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে জিতেও পরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়। গত বুধবার সেই সৌমেনকেই দলে ফিরিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছিলেন, ৭ মার্চ বড় যোগদান হবে।
অন্য দিকে, রবিবারই পেশাজীবন থেকে ইস্তফা দিয়ে ‘বৃহত্তর ক্ষেত্রে’ যেতে চান বলে জানিয়েছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এর পরই জানান, মঙ্গলবার তিনি ইস্তফা দেবেন। বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, আগামী ৭ মার্চ তাদের দলে যোগ দেবেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ওই সূত্রটির আরও দাবি, রাজ্যের একটি লোকসভা কেন্দ্র থেকে পদ্ম প্রতীকে প্রার্থী হতে চলেছেন তিনি।
সম্ভবত সেই কারণেই তিনি মঙ্গলবার ইস্তফা দিচ্ছেন। যাতে দুদিন পর বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজ্য বিজেপির দু-এক জন নেতা ব্যক্তিগত স্তরে সম্পর্ক রেখে চলেন বলে আগেই জানা গিয়েছিল। সূত্রের মতে, তাঁকে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক লোকসভা আসন থেকে প্রার্থী করা হতে পারে।
তবে এ ব্যাপারে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমার এসব কিছু জানা নেই। আমি এ নিয়ে কিছু বলতে পারব না।”
অন্যদিকে বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, উনি বিজেপিতে এলে স্বাগত। তাতে বাংলায় বিরোধী রাজনীতি আরও শক্তিশালী হবে। রাজ্যের রাজনীতিও সমৃদ্ধ হবে।
অগস্ট মাসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের অবসর গ্রহণের কথা ছিল। অর্থাৎ তাঁর কর্মজীবন অগস্টে শেষ হওয়ার কথা। মানে আর ৬ মাসও বাকি নেই। তার আগে তিনি যখন মার্চ মাসে ইস্তফা দিতে চলেছেন, তাতেই বোঝা যাচ্ছে লোকসভা ভোটে প্রার্থী হবেন তিনি। এখন দেখার সত্যিই কোন রঙেতে গা ভাসান প্রতিবাদী এই মুখ।