দেশের সময় ওয়েব ডেস্ক: বাংলা তথা গোটা দেশের মানুষকে চমকে দিয়ে প্রবল দ্বৈরথের মধ্যেই মমতার সঙ্গে তাঁর সৌজন্যের সম্পর্কের কথা ফাঁস করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। অভিনেতা অক্ষয় কুমারকে দেওয়া এক তথাকথিত অরাজনৈতিক সাক্ষাৎকারে মোদী বলেন, “আপনি জেনে অবাক হবেন। এই যে মমতা দিদি,-বছরে একটা দুটো কুর্তা পাঠান। নিজেই সেগুলো পছন্দ করতে যান।”
শুনে দৃশ্যত অবাক হয়ে যান অক্ষয়ও! বলেন, “এ তো বড় ব্যাপার!”
মোদী অবশ্য এও বলেন, “এ কথা বলছি বলে হয়তো ভোটে আমার ক্ষতিও হতে পারে!”
তিনি এও জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক প্রকার পাল্লা দিয়ে মমতা মিষ্টিও পাঠান তাঁকে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক বার বাংলাদেশে গিয়েছিলাম। তখন বাঙালি মিষ্টি নিয়ে কথা হচ্ছিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। আজও বছরে তিন চার বার, কোনও না কোনও বাঙালি নতুন মিষ্টি, স্পেশালি ঢাকা থেকে আমাকে পাঠান”। একই প্রসঙ্গে মোদী বলেন, “মমতা এটা জানতে পারেন। এখন মমতাও বছরে তিন চার বার কোনও না কোনও বাঙালি মিষ্টি আমাকে পাঠান”
গোট বিষয়টির উত্থাপন হয় অক্ষয় কুমারের প্রশ্ন থেকেই। প্রধানমন্ত্রীকে তিনি জিজ্ঞাসা করেন, বিরোধী দলের মধ্যে তাঁর কোনও বন্ধু রয়েছে কিনা? কারণ, মিডিয়া যে ভাবে সবটা দেখায়, সেভাবেই আমরা দেখি! জবাবে মোদী হাসতে হাসতে বলেন, “আছে তো! খুব ভাল বন্ধু আছে। বছরে এক দু বার আমরা এক সঙ্গে খাবার খাই। একবার মনে আছে, তখনও আমি বোধহয় মুখ্যমন্ত্রী হইনি। গুলাম নবির সঙ্গে এক দিন পার্লামেন্টে বসে খুব আড্ডা মারছি। সাংবাদিকরা এসে জিজ্ঞেস করেন, আরে আপনারা এক সঙ্গে বসে আছেন? মোদীজি আপনি তো আরএসএসের লোক। গুলাম নবির সঙ্গে তোমার বন্ধুত্ব হল কী ভাবে?”
প্রধানমন্ত্রী জানান, সে বার ভাল জবাব দিয়েছিলেন গুলাম নবি। বলেছিলেন, বাইরে থেকে আপনাদের যা মন হয়, আসলে ব্যাপারটা তা নয়। আমরা একটা পরিবারের মতো পরস্পরের সঙ্গে জুড়ে রয়েছি।
তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য বক্তব্য, নেত্রীর এই সৌজন্যের সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সৌজন্যের সম্পর্ক বজায় রাখবেন সেটাই দস্তুর। তা বলে মোদীর রাজনৈতিক মতাদর্শের বিরুদ্ধে লড়াই লঘু করার কোনও প্রশ্নই নেই।
বাংলার শাসক দলের এক শীর্ষ সারির নেতা বলেন, কেবল প্রধানমন্ত্রী কেন সরকার ও বিরোধী দলের প্রায় সব নেতাকেই শারদ উৎসবে উপহার পাঠান দিদি। সঙ্গে মিষ্টিও পাঠান। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের জন্য তো মুঠো ভরে চকোলেট নিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি কলকাতা থেকে একবার প্রণববাবুর কাছে কাপড় আর দর্জি পাঠিয়ে স্যুটের মাপ নিয়ে তা বানিয়ে দিয়েছিলেন মমতা।
তবে পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, সৌজন্যের কথা ফাঁস করে দেওয়াই হয়তো মোদীর উদ্দেশ্য ছিল না। ভোটের মাঝে তিনি হয়তো কৌশলেই বিষয়টি বাজারে ছেড়ে দিয়েছেন। যাতে এই বার্তা যায় যে তলে তলে বিজেপি তথা মোদীর সঙ্গে সমঝোতা করেই চলতে চান তৃণমূলনেত্রী। অনেকের মতে, ভোট মরশুমে বাংলায় সংখ্যালঘু সমাজের কাছে বার্তা দেওয়াই ছিল মোদীর লক্ষ্য। ছবি – সংগৃহীত৷