Modi on Manipur: অবশেষে মুখ খুললেন মোদী ‘মণিপুরের ঘটনা সভ্য সমাজের লজ্জা’, বললেন প্রধানমন্ত্রী

0
630

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মণিপুরে দুই মাঝ বয়সী মহিলাকে নগ্ন করে রাস্তায় ঘোরানোর ঘটনায় বুধবার রাত থেকে গোটা দেশ আন্দোলিত। শুধু নগ্ন করে ঘোরানো নয়, অভিযোগ তাঁদের গণধর্ষণ করা হয়েছিল। ওই নারকীয় ঘটনার কথা জেনে যখন সকলে শিউড়ে উঠছেন, তখন অবশেষে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ।

বৃহস্পতিবার সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হয়েছে। তার আগে প্রধানমন্ত্রী সংসদের বাইরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন,‘মণিপুরের ঘটনা যে কোনও সভ্য সমাজের জন্য লজ্জাজনক।’

সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও বলেন, “গণতন্ত্রের এই মন্দিরে দাঁড়িয়ে আমার মন আজ রাগ ও যন্ত্রণায় কাতর হয়ে রয়েছে। মণিপুরে যে ঘটনা ঘটেছে তা সভ্য সমাজের জন্য লজ্জার। গোটা দেশের মাথা হেঁট হয়ে গেছে”।

মণিপুরের ঘটনা নিয়ে চাপ সামলাতে বিজেপি এখন কৌশলে রাজস্থান ও পশ্চিমবঙ্গে মহিলাদের উপর অত্যাচারের কথা তুলছে। এদিন প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যেও সেই রাজনীতির ছাপ ছিল বলে অনেকে মনে করছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মা বোনেদের রক্ষা করার জন্য আমি সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি, নিজেদের রাজ্যে আইনব্যবস্থা আরও মজবুত করুন। তা সে রাজস্থান, ছত্তীসগড় হোক বা মণিপুর”।

প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘রাজনীতির উপরে উঠে, যে কোনও রাজ্যে আগে নারীর সম্মান রক্ষা হোক। মণিপুরের মেয়েদের সঙ্গে যা হয়েছে, তা ক্ষমার অযোগ্য।’

এদিকে বেঙ্গালুরুতে ২৬টি দলের বিরোধী জোট ইন্ডিয়া তৈরি হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর আজ বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে সংসদের বাদল অধিবেশন। তার ঠিক আগে বুধবার সন্ধেয় মণিপুরে দুই মহিলাকে নগ্ন করে ঘোরানোর যে ভিডিও গোটা দেশে ভাইরাল হয়েছে তা এবার ভয়ানক চাপে ফেলে দিল নরেন্দ্র মোদী সরকারকে ।

এমনিতেই বাদল অধিবেশনে মণিপুর নিয়ে সরকারকে ঘেরার পরিকল্পনা বিরোধীদের ছিলই। লোকসভায় কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী জানিয়েছিলেন, বিরোধীরা এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর পদ থেকে অমিত শাহর ইস্তফা দাবি করতে পারেন। কিন্তু তার মধ্যেই মণিপুরে যে নারকীয় ঘটনার ছবি ভাইরাল হয়েছে, তা বিরোধীদের অসন্তোষকে শতগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।

মণিপুরে গত ৪ মে দুই মাঝবয়সি মহিলাকে নগ্ন করে রাস্তায় হাঁটানোর অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের গণধর্ষণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। কাংপোকপি জেলায় এই ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক হল আড়াই মাস আগে ঘটে যাওয়া সেই ঘটনার খবর এতদিন জানতই না মণিপুরে বিজেপি সরকার। রাজ্যে পুলিশি ব্যবস্থা ও প্রশাসনিক কাঠামোর যে হাল তা এর থেকেই স্পষ্ট। এহেন পরিস্থিতিতে বিজেপির ঘরের মধ্যে থেকেই দাবি উঠেছে যে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংকে অবিলম্বে ইস্তফা দিতে হবে।

মণিপুর বিজেপি শাসিত রাজ্য। সেখানে ডবল ইঞ্জিন সরকার চলছে বলে অমিত শাহরা দাবি করতেন। পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, সেই ইঞ্জিন কতটা বিকল তা বেআব্রু হয়ে যাওয়ায় এবার বীরেন সিংকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া ছাড়া মোদী-শাহর কাছে আর উপায় নেই। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দেখা যাচ্ছে, বীরেন সিংয়ের ইস্তফা চেয়ে বিজেপি অনুগামী অনেকেই বুধবার রাত থেকে দাবি তুলতে শুরু করেছেন।

অভিযোগ হল, তা থামাতে কেন্দ্র গোড়া থেকে সক্রিয় ছিল না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ ব্যস্ত ছিলেন কর্নাটকের ভোট নিয়ে। তার পর ভোট মিটতে অমিত শাহ তিন দিনে জন্য মণিপুরে গিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু অশান্তি থামাতে ব্যর্থ হন তিনি। বিরোধীদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টিকটু ভাবে এ ব্যাপারে নীরব।

অধীর চৌধুরীর কথায়, সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে বিরোধীদের গালমন্দ করার সময় প্রধানমন্ত্রীর রয়েছে, কিন্তু মণিপুর নিয়ে মুখ খোলার সময় নেই।
এই পরিস্থিতিতে বুধবার রাতে মণিপুরের ঘটনা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় মহিলা ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। তিনি জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে। দোষীদের খুঁজে বের করতে তদন্তে নেমেছে রাজ্যের পুলিশ।

Previous articleBongaon News: বনগাঁয় ইছামতী নদী থেকে জোড়া শিশুর দেহ উদ্ধার! নিখোঁজ মা,পুলিশের হাতে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
Next articleTMC Shahid Diwas: ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে সব রাজনৈতিক দলকে আসার আহ্বান জানালেন তৃণমূল সুপ্রিমো

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here