West Bengal Panchayat Election 2023:কেন্দ্রীয় বাহিনী চায়না বনগাঁর ছয়ঘরিয়ার মানুষ, তবে কমিশনের কন্ট্রোল রুমে সাধারণ মানুষের একটাই প্রশ্ন?কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথায় :দেখুন ভিডিও

0
324

অর্পিতা বনিক , বনগাঁ: রাত পোহালেই পঞ্চায়েত নির্বাচন । কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে ভোট করানোর নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। উচ্চ আদালত আরও বলেছিল, প্রতি বুথে রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে সমান অনুপাতে। কিন্তু বাস্তবে কি সেই চিত্র দেখা যাবে, প্রশ্ন জাগছে সাধারণ মানুষের মনেই!

সুষ্ঠু ও অবাধ শান্তিপূর্ণ ভোট করানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে। ভোটের দিন অশান্তি এড়াতে একাধিক পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই নিয়ে ফেলেছে কমিশন। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম, যাতে কোনওরকম অশান্তির খবর জানাতে পারেন। কমিশন দফতরেই ফোন করা যাবে সরাসরি। এই জন্য একাধিক নম্বরও প্রকাশ করেছে কমিশন। এমনকী টোল ফ্রি নম্বরও চালু করা হয়েছে।

কমিশনের এই কন্ট্রোল রুমে সমানে বেজে চলেছে ফোনগুলি। দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিশনের অফিসাররা সেই ফোন তুলছেন, শুনছেন সাধারণ মানুষের অভিযোগের কথা। সূত্রের খবর, ফোনের ওপার থেকে সাধারণ মানুষ বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ জানাচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু এইসব অভিযোগের ভিড়ে সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন হচ্ছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথায়? এলাকায় তো দেখা যাচ্ছে না জওয়ানদের?কমিশনের কন্ট্রোল রুমে সাধারণ মানুষের একটাই প্রশ্ন! দেখুন ভিডিও

সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটে নিরাপত্তার কথা ভেবেই নিয়ে আসা হচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। কিন্তু তাঁদের নিরাপত্তার কথা ভাববে কে? রাজ্যে বিভিন্ন এলাকায় হিংসার ঘটনার উদাহরণ টেনে তাই প্রতি বুথে অন্তত হাফ সেকশন অর্থাৎ চার জন সক্রিয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান মোতায়েন করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের ভারপ্রাপ্ত কোঅর্ডিনেটর এবং বিএসএফের আইজি। সেই সঙ্গে বলেছিলেন রাজ্য পুলিশকেও পাহারায় থাকতে হবে। শুক্রবার বাহিনী দেওয়া সেই সমস্ত প্রস্তাব মেনে নিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন।

পঞ্চায়েতে নিরাপত্তা দিতে লেহ্‌ থেকে ‘এয়ারলিফ্‌ট’, পানাগড়ে নামলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা ৷

রাত পোহালেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে বাহিনীর আসা নিয়ে ধন্দ ছিল। আদৌ প্রয়োজনমাফিক বাহিনী পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। ভোট শুরুর আগের দিন সেই সমস্যা সমাধানের পথ দেখা যেতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানায়, পঞ্চায়েত ভোটের জন্য লাদাখের লেহ্‌ থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের বিমানে করে তুলে আনা হচ্ছে বাংলায়। মোট পাঁচ কোম্পানি এবং দুই প্লাটুন (প্লাটুনে ৩৫ জন থাকেন, তাঁর মধ্যে সক্রিয় থাকেন ৩০ জন) বাহিনী লেহ্‌ থেকে বিমানে এসে নামছে পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড়ের বিমানঘাঁটিতে। সেখান থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের মোতায়েন করা হবে।


বাহিনী-জট সমাধানে বিশেষ বিমানে লেহ্‌ থেকে ‘এয়ারলিফ্‌ট’ করে রাজ্যে আনা হল কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের। চিঠি দিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে এমনই জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তবে কলকাতা নয়, দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ বাহিনী সোজা নামে পানাগড়ের বিমানঘাঁটিতে। সেখান থেকে তাঁদের মোতায়েন করা হবে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়।

কমিশনের চেয়ে পাঠানো (রিক্যুইজ়িশন) ৪৮৫ কোম্পানি বাহিনীর মধ্যে লেহ্‌ থেকে আসছে পাঁচ কোম্পানি এবং দুই প্লাটুন। তা হলে বাকি ৪৮০ কোম্পানির সামান্য কম বাহিনীকেও কি এয়ারলিফ্‌ট করেই আনা হবে? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের চিঠিতে সেই সম্পর্কে কিছু নেই। বাকি বাহিনী কী ভাবে আসবে, বা আদৌ আসবে কি না, সে ব্যাপারে কমিশনের কাছেও খবর নেই।

রাত পোহালেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। কমিশনের এই সিদ্ধান্তে শনিবার সমস্ত বুথে অন্তত চার জন সক্রিয় কেন্দ্রীয় জওয়ান থাকবে। তার পাশাপাশি থাকবে রাজ্য পুলিশও। বুথ দখল বা সম্ভাব্য হিংসা এড়িয়ে সুষ্ঠু ভোটের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত বলে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়েছে কমিশন।

আইজি বিএসএফ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোঅর্ডিনেটরের প্রস্তাব ছিল, প্রতি বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি রাজ্য পুলিশও মোতায়েন করতে হবে। প্রতি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে এক বা একাধিক বুথ থাকতে পারে। কখনও কখনও একটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের অধীনে ৭-৮টি বুথও থাকতে পারে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোঅর্ডিনেটর জানিয়েছিলেন, বাহিনীর জওয়ানদের নিরাপত্তার স্বার্থেই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে একটি এবং দু’টি বুথ থাকলে কমপক্ষে হাফ সেকশন বাহিনী (অর্থাৎ ৫ জন জওয়ান। যার মধ্যে সক্রিয় থাকবেন চার জন) রাখতে হবে। এ ছাড়া, একটি ভোটকেন্দ্রে তিন-চারটি বুথ থাকলে কমপক্ষে এক সেকশন বাহিনী, পাঁচ-ছ’টি বুথ থাকলে কমপক্ষে দেড় সেকশন বাহিনী এবং সাতটি বা তার বেশি বুথ থাকলে অন্তত দু’সেকশন বাহিনী (যেখানে সক্রিয় থাকবেন ১৬ জন জওয়ান) মোতায়েন করতে হবে। এ ছাড়া ‘স্ট্রংরুম’, অর্থাৎ যেখানে ব্যালটবাক্স বা ইভিএম রাখা হয়, সেখানে এক কোম্পানি বাহিনী (৮০ জন সক্রিয় জওয়ান) মোতায়েন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বাহিনীর কোঅর্ডিনেটরের তরফে।

কোঅর্ডিনেটরদের যুক্তি ছিল, বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের যা অবস্থা, তাতে জওয়ানদেরও ‘প্রাণহানির আশঙ্কা’ রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। এই মর্মে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কমিশনের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোঅর্ডিনেটরদের। বৈঠকে যা সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তার ভিত্তিতেই এই প্রস্তাব রাখা হচ্ছে। এর পর শুক্রবার সেই প্রস্তাব মেনে নিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।

সূত্রের খবর, ৮২২ কোম্পানি বাহিনীর মধ্যে শুক্রবার রাত পর্যন্ত ৮০ শতাংশ বাহিনী এসে পৌঁছনোর কথা। অর্থাৎ ৬৫০ থেকে ৭০০ কোম্পানির বেশি ফোর্স শুক্রবারের মধ্যে এসে পৌঁছনোর সম্ভাবনা ক্ষীণ। ফলে শনিবার নির্বাচনে সব জায়গায় বাহিনী থাকবে কিনা, সেই নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

Previous articlePrimary recruitment scam: ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের ‘সুপ্রিম’ স্বস্তি, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্থগিতাদেশ শীর্ষ আদালতের
Next articleWest Bengal Panchayat Elections 2023: বনগাঁয় গুলিতে ঝাঁঝরা দেহ উদ্ধার,নেপথ্যে জমির দালালি চক্র?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here