দেশের সময় :বিরোধীরা বিভিন্ন সময় দাবি করে, মমতার জন্যই রাজনীতিতে অভিষেকের পরিচিতি। অভিষেকের রাজনৈতিক জ্ঞানের গভীরতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে বিরোধীরা।
কাকদ্বীপে ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচির শেষ দিনে অংশ নেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই যাত্রার জন্য তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা শোনা যায় তৃণমূলনেত্রীর মুখে। শুধু এখানেই থেমে থাকেনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূলের একদল প্রথমসারির নেতানেত্রীর সামনে অভিষেককে ছবি উপহার দেন মুখ্যমন্ত্রী।
নবজোয়ার যাত্রার শেষদিনে বক্তব্য রাখতে উঠে মমতা বলেন, ‘শুধু আমার নয়, যাঁরা আমরা তৃণমূল করি সবার পরিবার নিয়ে বিরোধীরা কুৎসা অপপ্রচার করে। অভিষেককে নিয়ে অনেক প্রশ্ন তোলেন। ইতিহাস থেকে আমি অভিষেককে আমি একটা ছবি উপহার দেব। অনেকেই বলে পরিবারতন্ত্রের কথা বলে। অনেকেই বলে পিসি এসে ভাইপোকে সাংসদ করে দিয়েছে। কিন্তু অনেকে সব ইতিহাসটা জানেন না।’
একাধিক দুর্নীতি ইস্যুতে বিরোধীদের আক্রমণের নিশানায় এখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অহরত তাঁকে শুনতে হয় ‘ভাইপো’ কটাক্ষ। এদিন যাবতীয় অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘অভিষেক দু’বছর বয়স থেকে রাজনীতি করে। ১৯৯০ সালে সিপিএম আমাকে মেরেছিল। হাসপাতাল থেকে বাড়ি এসে মার সঙ্গে কথা বলছিলাম। আমার মায়ের কোলে বসে অভিষেক সবটা শুনছিল। পরের দিন থেকে একটা ঝান্ডা নিয়ে ও বলত ‘দিদিকে মারলে কেন জবাব দাও।’ ওইটুকু একটা ছেলে প্রতিদিন মিছিল করত।’
এরপরই অভিষেককে একটি বাঁধানো ছবি উপহার দেন মমতা। ছবিতে দেখা যাচ্ছে মাথায় ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় বসে রয়েছে মমতা। তাঁর সামনে ছোট্ট অভিষেকেকে কোলে নিয়ে বসে রয়েছেন তাঁর মা গায়েত্রীদেবী। সেই ছবি অভিষেকের হাতে তুলে দেওয়ার আগে মমতা বলেন, ‘আমি এই ছবিটা ওঁকে উপহার দিতে চাই। আগামী দিন ওঁর সংরক্ষণের তালিকায় এই ছবি থাকবে। এই ছবি দেখলে বোঝা যাবে যে ও দু’বছর বয়স থেকে রাজনীতি করে। ডায়মন্ড হারবারে এসেই ভেবেছিলাম অভিষেককে কিছু একটা দিতে হবে।’ এরপরই সকলের সামনে ফ্রেমে বাঁধানো ছবি তৃণমূল সাংসদের হাতে তুলে দেন মমতা। মঞ্চে দাঁড়িয়ে পায়ে হাত দিয়ে নেত্রীকে প্রণাম করেন অভিষেকও।
নবজোয়ার যাত্রা চলকালীন নিয়োগ দুর্নীতিতে কুন্তল ঘোষের চিঠি মামলায় সিবিআই তলবের মুখে পড়েন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজাম প্যালেসে দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার জেরার মুখে পড়তে হয় অভিষেককে। সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অভিষেককে তলব করেছে ইডিও। কিন্তু ইডির সামনে হাজির হননি তৃণমূল সাংসদ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মমতা এদিন বুঝিয়ে দিলেন যে কোনও পরিস্থিতি তাঁর হাত সর্বদা অভিষেকের মাথার উপর রয়েছে।