দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রাতভর প্রবল বৃষ্টি কলকাতায়। সঙ্গে চলল ঝোড়ো হাওয়া। কেবলমাত্র কলকাতাই নয়, শহরতলী এবং জেলায় জেলায় তুমুল ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে বৃহস্পতিবার রাতে। শুক্রবারও চলবে দুর্যোগ।
এদিনও দফায় দফায় ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। সঙ্গে বইবে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া। ‘
ফের পশ্চিমী ঝঞ্ঝা সহায়। আরও একবার ঝড়-বৃষ্টির জোরালো সম্ভাবনা রাজ্যে। শুক্র ও শনি- দু’দিনই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা। পূর্বাভাস আলিপুর আবহাওয়া দফতরের।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, শুক্রবারও রাজ্যজুড়ে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়-বৃষ্টি চলবে। কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে। ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে জেলায় জেলায়। পশ্চিমের জেলা ও উপকূলের জেলাগুলিতে বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি। শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম মুর্শিদাবাদ এবং নদীয়া জেলাতে। শুক্রবার বেশি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাতে। উত্তরবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির আশঙ্কা এবং শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে।
আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, ৩ এপ্রিল আকাশ পরিষ্কার হতে পারে। ঝড়-বৃষ্টির জেরে গরমের অস্বস্তি অনেকটাই কমার আশা রয়েছে। উইক এন্ড মানেই ঝড়বৃষ্টি! অন্তত গত দু’সপ্তাহ ধরে তেমনই ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত সপ্তাহান্তে বাংলায় ঝড় বৃষ্টি হয়েছে। গত তিন চার দিন ধরে যেভাবে রোদের দাপট বেড়েছিল, বেলায় রাস্তায় বেরোলে রীতিমতো চামড়ায় দহন জ্বালা অনুভব করা যাচ্ছিল। সকাল থেকেই শুরু হচ্ছিল রোদের দাপট। কিন্তু শুক্রবারের ভোরটা শুরু হল অন্যরকম ভাবে। বৃহস্পতিবার রাতের বৃষ্টি এমনিতেই তাপমাত্রা অনেকটাই কমিয়েছে। ভোর থেকে শিরশিরি বাতাস, মেঘলা আকাশে মনোরম পরিবেশ।
শুক্রবার দিনভর মেঘলা আকাশ থাকবে কলকাতায়। এদিন সকাল থেকেই বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে শহরের একাধিক অংশে। বৃহস্পতিবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি কম। দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি কম। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ থাকববে ৫৬ থেকে ৮৮ শতাংশের মধ্যে। গত ২৪ ঘণ্টায় মহানগরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৮.৯ মিলিমিটার।
হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, এই মুহূর্তে একটি অক্ষরেখা উত্তরবঙ্গ থেকে ওডিশা পর্যন্ত বিস্তৃত। যা বিহার, ঝাড়খণ্ডের উপর দিয়ে গিয়েছে। মধ্যপ্রদেশের উপর একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। যার জেরে এই ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে বাংলায়।
শনিবারেও ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দিনভর মেঘলা আকাশ থাকবে বঙ্গে। বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে জেলায় জেলায়। দক্ষিণবঙ্গের বেশিরভাগ জেলাতে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী বৃষ্টি হতে পারে। আলিপুর জানাচ্ছে, এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি মিলবে রবিবার সন্ধ্যার পর থেকে। রবিবার থেকে ধীরে ধীরে আবহাওয়ার উন্নতি হবে, কাটবে দুর্যোগ।
উত্তরবঙ্গে দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলায় আজ, শুক্রবার ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা। শিলাবৃষ্টি হবে উত্তরবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই। দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি এই পাঁচ জেলাতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা বৃষ্টি চলবে।
এ রাজ্যের পাশাপাশি রাজধানী শহরেও চলছে প্রবল দুর্যোগ। বৃহস্পতিবার দিনভর ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে দিল্লিতে। একাধিক অঞ্চল জলমগ্ন। প্রায় ২২টি বিমান বাতিল করতে হয়েছে খারাপ আবহাওয়ার জন্য।