দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রাত পোহালেই রাজ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষা। এবার প্রায় সাত লাখ পরীক্ষার্থী মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে চলেছে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অধীনস্থ স্কুলগুলির ছাত্রছাত্রীরা জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা দিতে চলেছে। করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে ফের পুরনো সিলেবাসে এবার পরীক্ষা হতে চলেছে। সকাল ১১ টা ৪৫ মিনিট থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে। পরীক্ষা চলবে দুপুর ৩ টে পর্যন্ত। পরীক্ষার প্রথম ১৫ মিনিট শুধুমাত্র প্রশ্নপত্র পড়ার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে পরীক্ষার স্বচ্ছতা, সর্বোতভাবেই মধ্যমিক পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে নেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। ছাত্রছাত্রীদের প্রথম বড় পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে যাতে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্যে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসনও। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে কলকাতা থেকে শুরু করে রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ট্রাফিক ব্যবস্থাও ঢেলে সাজানো হয়েছে।
ইতিমধ্যে পরীক্ষার্থীদের জন্য পর্ষদের তরফে খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম ৷ যে কোনও সমস্যায় পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকেরা কন্ট্রোল রুমের সাহায্য নিতে পারবে। সংশ্লিষ্ট হেল্পলাইন নম্বরগুলি হল 91 33-2321-3872এবং 91 33-2359-2274। এছাড়াও ইমেল করতে যাবে এই ঠিকানায় examwbbse@gmail.com। সংশ্লিষ্ট দুটি নম্বর ছাড়াও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি সহ কন্ট্রোলরুমের আরও কয়েকজন আধিকারিকের নম্বরে যে কোনও সময়ে ফোন করা যাবে। কলকাতার সঙ্গেই বিভিন্ন জেলার আঞ্চলিক হেল্পলাইন নম্বরও পর্ষদের তরফে দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষক দুর্নীতি থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস সহ একাধিক অভিযোগের যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য প্রথম থেকেই এবার মাধ্যমিক নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। বড়দের টেটের ধাঁচে কড়াকড়ির মধ্যেই এবছর জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিকে বসবে ছাত্রছাত্রীরা। মাধ্যমিকের প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে ন্যূনতম তিনটি করে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো সহ একাধিক নিয়ম বাধ্যতামূলক করেছে পর্ষদ। মাধ্যমিকে অ্যাপের মাধ্যমে চলবে বিশেষ নজরদারি ব্যবস্থা। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট অ্যাপের বিষয়ে বিশেষ ট্রেনিংও দেওয়া হয়েছে বলে পর্ষদ সূত্রের খবর। মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্রে ভাঙচুর করলে পরীক্ষার্থীদের রেজাল্ট দেওয়া হবে না বলে পর্ষদের তরফে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত তিন হাজারের মতো স্কুলে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আরও স্কুলে ক্যামেরা লাগানোর কাজও চলছে। রয়েছে প্রতিটা পরীক্ষাকেন্দ্রে সিক রুমের ব্যবস্থাও। এমনকী আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্যে থাকবেন স্বাস্থ্যকর্মীরাও।
এ বছর মাধ্যমিক পরিক্ষায় থাকবেন ৩৫ হাজার ইনভিজেলেটর। রয়েছে ৬৪১ সাব ভেন্যু, ১২২৬ সেন্টার। আবার বিশেষ ভাবে সক্ষম 359 জন ছাত্রছাত্রীকে অতিরিক্ত সময় দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। সমস্ত পরীক্ষাকেন্দ্রে ঠিকভাবে পরীক্ষা চলছে কিনা তা দেখতে ইতিমধ্যেই পর্ষদ আধিকারিকদের যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ছাত্রছাত্রীদের অযথা দুশ্চিন্তা না করে পরীক্ষায় বসার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষকেরাও। এ প্রসঙ্গে বনগাঁ রাখালদাস হাইস্কুলের এক শিক্ষক বলেন , “অযথা দুশ্চিন্তা করলে চলবে না। ইতিমধ্যে পরীক্ষার্থীরা টেস্ট, প্রিটেস্ট দিয়েছে, তাই ভয় পাওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। শেষ মুহূর্তে মাথা ঠান্ডা রেখে পরীক্ষা দেওয়াই সাফল্যের আসল চাবিকাঠি। “