দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বিএনপির ঢাকার আজকের সমাবেশকে ঘিরে উৎকণ্ঠার প্রহর গুনছে বাংলাদেশ । রাজধানীর পল্টন এলাকায় দলীয় কার্যালয়ের বাইরে আজ সভা করতে চেয়েছিল বিএনপি। যান চলাচলে সমস্যা হতে পারে জানিয়ে সেই দাবি মানেনি প্রশাসন। প্রায় একমাস ধরে পল্টনে সভা করার দাবিতে অনড় থাকার পর গতকাল পিছু হটে বিরোধী দল। কিন্তু অশান্তির সম্ভাবনা তাতে দূর হয়নি।
আজ বেলা ১১’টা থেকে ঢাকার গোলাপবাগ ময়দানে শুরু হবে সভা। সেই সভার মঞ্চ থেকে প্রধান বিরোধী দলের আজ দশ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা। সেই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শাসক ও বিরোধী দলের তৎপরতা এবং হিংসা মাথাচাড়া দিতে পারে বলে সব মহলেরই আশঙ্কা।
গত দু’দিন ঢাকার পরিস্থিতি ছিল উত্তপ্ত। বুধবার পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু হয়। পুলিশ তাদের কর্মীকে গুলি করে মেরেছে বলে বিএনপির অভিযোগ।
এদিকে, বিএনপি আজ সভা শেষে গোলমাল, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করতে পারে ধরে নিয়ে ঢাকায় বিপুল সংখ্যায় পুলিশ ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের জওয়ানদের মোতায়েন করা হয়েছে। নামানো হয়েছে দাঙ্গা প্রতিরোধ পুলিশ। ঢাকার রাস্তায় ঘন ঘন পুলিশের গাড়ির সাইরেন বাজছে। গত দু’দিন ধরে পুলিশ রাজধানীতে প্রবেশের সমস্ত রাস্তায় দিন রাত গাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে। বিএনপি দফতর থেকে বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশের দাবি।
পরিস্থিতি আরও ঘোরালো করে তুলেছে শাসক দল আওয়ামী লিগের পাল্টা কর্মসূচি। শুক্রবার দুপুরের পর থেকে শহরের নানা জায়গায় আওয়ামী লিগের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্প করা শুরু করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, বিএনপি হিংসাত্মক কার্যকলাপ শুরু করলে আওয়ামী লিগ তা প্রতিরোধ করবে। এর সঙ্গে দু’দিন আগে বিএনপির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাল্টা মারের হুঁশিয়ারি তো আছেই।
শাসক ও বিরোধী দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়েছে রাজধানী ঢাকা-সহ বাংলাদেশের নানা জায়গায়। সে দেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক বছর আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে ভোটের ময়দানের জমি দখলের লড়াই।
সাধারণ মানুষের বক্তব্য, শাসক ও বিরোধী দল এক বছর আগে থাকতেই রাস্তার লড়াইয়ে মেতে ওঠায় ব্যবসা-বাণিজ্য, দৈনন্দিন জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে। এমনীতেই দেশের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। তার উপর রাজনৈতিক সংঘাত বাড়তে থাকলে সাধারণ মানুষ চরম সংকটের মুখে পড়বেন।
বুধবারের সংঘর্ষের ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে পুলিশ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। শুক্রবার ঢাকার একটি আদালত তাদের জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে। ফলে মহাসচিবকে ছাড়াই আজ সভা করবে প্রধান বিরোধী দল। তাদের দশ দফা ঘোষণায় কী থাকবে তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে সব মহলে।
বিএনপি আগেই দাবি করেছে, শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে তারা কোনও নির্বাচনে অংশ নেবে না। সরকারকে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে হবে। তারপর নতুন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করে ভোট করাতে হবে।
দলের মঞ্চ থেকে ঘোষণা করা না হলেও বিএনপির তরফে নেতারা দাবি করেছেন, আজ ঢাকার সভার পর বাংলাদেশ চলবে তাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার কথায়। বিএনপির এই হুমকি ঘিরেই চলতি অস্থিরতার সূত্রপাত।