দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃদু বছর পর রেড রোডে ফিরছে দুর্গাপুজোর কার্নিভাল।শনিবার এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সঙ্গে থাকবেন ইউনেস্কোর প্রতিনিধিরাও।
রেড রোডে দুর্গাপুজো কার্নিভালের প্রস্তুতি তুঙ্গে। প্রায় ১০০টি ছোট বড় ক্লাব তাদের প্রতিমা নিয়ে যোগ দেবে এই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায়। দেশ-বিদেশের বহু বিশিষ্ট মানুষ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। আঁটোসাঁটো নিরাপত্তায় ঢেকে ফেলা হয়েছে গোটা চত্বর। এই কার্নিভালের কারণে শনিবার বন্ধ থাকবে শহরের একাধিক রাস্তা। ঘুরিয়ে দেওয়া হবে গাড়ির গতিপথও, এমনই জানাচ্ছে, কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ।
কলকাতা ট্রাফিক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সেই তালিকা দিয়েছে। শনিবার বন্ধ থাকবে রেড রোড, খিদিরপুর রোড, লাভার্স লেন, হাসপাতাল রোড, কুইন্স ওয়ে, মেয়ো রোড সহ আরও বেশকিছু রাস্তা। দুপুর ২টো থেকে বন্ধ করে দেওয়া হবে এইসব রাস্তা। রইল তালিকা :
দুপুর দু’টো থেকে বন্ধ থাকবে হসপিটাল রোড। এর পরিবর্তে গাড়িগুলিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে এজেসি বোস রোড বা জহরলাল নেহেরু রোডের দিকে।
হেস্টিংস মোড় থেকে লাভার্স লেন পর্যন্ত খিদিরপুর রোডের যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে। পরিবর্তে সেন্ট জর্জ গেট রোড হয়ে স্ট্রান্ড রোডের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে গাড়ির অভিমুখ।
রেড রোড আজ রাত ১২টা থেকে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। ফের দুপুর দুটো থেকে বন্ধ করে দেওয়া হবে সেই রাস্তা। এর পরিবর্তে গাড়িগুলিকে আর আর অ্যাভিনিউ, জহরলাল নেহেরু, কিংস ওয়ের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে।
কুইন্স ওয়ে বন্ধ থাকবে। সেই রাস্তায় আসা গাড়িগুলিকে ক্যাথিড্রাল রোড হয়ে জহরলাল নেহেরু রোডের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বন্ধ থাকবে এসপ্ল্যানেড র্যাম্প রোড। এবং প্রয়োজনে মেয়ো রোডও বন্ধ করা হতে হবে।
এইসব রাস্তাই দুপুর দুটো থেকে যতক্ষণ না পর্যন্ত কার্নিভাল শেষ হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তাই কাল বাড়ি থেকে বেরানোর আগেই ভেবে নিন কোন পথ দিয়ে যাবেন আপনি।গত দু বছরের করোনা অতিমারি কাটিয়ে এবার পুজোর কার্নিভালে রেকর্ড ভিড় হতে পারে বলেই মনে করছে রাজ্য সরকার।
অন্যদিকে, শুক্রবার মহা সমারহে অনুষ্ঠিত হলো দুর্গাপূজা কার্নিভাল। জেলা সদর চুঁচুড়ায় কার্নিভাল শুরু হয় বিকাল চারটে নাগাদ। কার্নিভালের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন হুগলির জেলা শাসক পি দীপাপ প্রিয়া। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত, অসীমা পাত্র, ডাঃ রত্না দে নাগ, পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগী সহ জেলা প্রশাসনের আধিকারিক বৃন্দ। চুঁচুড়া কারবালা মোর থেকে বিবেকানন্দ রোড ধরে এগিয়ে যায় কার্নিভাল।
পিপুলপাতি, বকুলতলা হয়ে গঙ্গা পারের রাস্তা দিয়ে ময়ূরপঙ্খী ঘাট স্ট্রান্ড রোড প্রতাপপুর, জোড়াঘাট, বড় বাজার রোড ধরে এগিয়ে পৌঁছয় অন্নপূর্ণা ঘাটে। একে একে প্রতিমা বিসর্জন হয়। প্রথম বছর কার্নিভালের অংশ নিয়েছিল মোট বাইশটি পুজো কমিটি। আর কার্নিভাল দেখার জন্য রাস্তার দুপাশে হাজির হয়েছিলেন অগণিত মানুষ।
কার্নিভাল ঘিরে আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল প্রশাসন। শহর জুড়ে মোতায়েন করা হয়েছিল চারশোর বেশি পুলিশ। একাধিক জায়গায় শহরের একাধিক জায়গায় এবং কার্নিভালের গোটা রাস্তায় বসানো হয়েছিল একাধিক সিসি ক্যামেরা। একইসঙ্গে চলছিল ড্রোনের নজরদারি। শোভাযাত্রায় অপ্রীতিকর ঘটনা বা দূর্ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হয়েছিল।
চন্দননগর কমিশনারেটের সব কটি থানা থেকে পুলিশ কর্মি ও অফিসারদের নিয়ে আসা হয়েছিল। হুগলি চুঁচুড়া পুরসভার তরফে রাস্তার পাশে রাখা হয়েছিল পানীয় জলের ব্যবস্থা। ছিলো বায়ো টয়লেট, অ্যাম্বুলেন্স, দমকল। ছিলো গঙ্গায় টহলরত বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর এর স্পিড বোট। পারফরম্যান্সের উপর নির্ভর করেই পুজো কমিটিগুলোকে পুরষ্কৃত করার কথা জানান চুঁচুড়ার বিধায়ক। তাই কার্নিভালে প্রতিযোগিতাও হয় হাড্ডাহাড্ডি।
উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় এবছর পুজোর কার্নিভালের আয়োজন চোখে পড়েনি৷ এ বিষয়ে বনগাঁ পুরসভার পুরপ্রধান গোপাল শেঠ বলেন “বনগাঁ উৎসবের শহর” এখানে সুস্থ সম্প্রীতির ছবিতে মোড়া থাকে সারা বছর এই শহরের ক্যানভাস।দুর্গা মায়ের বিদায়কে সাক্ষী রাখতে কোমর বেঁধে লেগে পড়েছেন স্থানীয় মানুষ৷ এবছর কার্নিভালের জন্য স্থানীয় ক্লাবগুলির পক্ষ থেকেও কোন আবেদন পএ জমা পড়েনি পুরসভায় ৷ বিভিন্ন ক্লাব কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান এবার পুজোয় তাঁদের ব্যবসা বিশেষ ভাল হয়নি তাই অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভাল না থাকায় কার্নিভাল চাননি তাঁরা৷ স্থানীয় মানুষের কথা মাথায় রেখেই দুর্গা মায়ের বিসর্জনের প্রক্রিয়াকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে৷ শুক্রবার ইছামতী নদীতে থানার ঘাটে পুরসভার তত্ত্বাবধানে পুলিশ প্রশাসনের সাহায্যে প্রতিমার বিসর্জন সম্পূর্ণ হয়৷