দল ভাঙা আটকাতে মমতা তৈরি করছেন বিশেষ প্রতিরোধ সেল

0
995

দেশের সময়,প্রতিবেদনঃ–তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোোপাধ্যায় ইতিমধ্যোই টের পেয়ে গেছেন,বিজেপির কৌশল হল প্রলোভনের টোপ দিয়ে একের পর এক তৃণমূল নেতাকে নিজেদের দিকে টেনে নেওয়া।এভাবে তৃণমূলকে দূর্বল করে এ রাজ্যে শক্তি বাড়াতে ব্যস্ত বিজেপি।

আর বিজেপিকে এ কাজে সহায়তা করতে বড় অস্ত্র দিসেবে কাজ করবেন মুকুল রায়।মুকুল রায়ের অংক যে কাজ করতে শুরু করেছে তা বুঝতে পেরেই মমতা এখন দল ভাঙা আটকাতে বিশেষ সেল তৈরি করার কথা ভেবে ফেলেছেন।এই সেলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শুভেন্দু অধিকারি,ফিরাদ হাকিম ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

মমতা বুঝে গেছেন দল ভাঙার বিরুদ্ধে নৈতিকতার যুক্তি সাজালে তা গ্রহণ যোগ্য হবে না,কারণ মমতার নিজের দলই এ রাজ্যে এই দল ভাঙানোর খেলা খেলেই বাজিমাত করেছে,একের পর এক।এ রাজ্যের সমস্ত বিরোধী পুরসভা গুলোকে দল ভাঙিয়েই যে তিনি তাঁর দিকে নিয়ে এসেছেন তা মমতার চেয়ে ভাল আর কে জানেন।

তাই যুক্তি দিয়ে দল ভাঙার বিরুদ্ধে কথা বলার যে নৈতিক অধিকার মমতা হারিয়েছেন তা তিনি জানেন বলেই এখন ক্ষমতা প্রয়োগ করে তিনি দল ভাঙা আটকাতে কৌশল সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিং যে সাহস দেখিয়ে মমতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন,দলের মধ্যে সেরকম যেন কেউ আর না করার সাহস দেখান সেটা নিশ্চিত করতে মমতা এখন গুঁটি সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।দল ভাঙা আটকাবার বিশেষ সেল,আসলে ক্ষমতা প্রয়োগ করে দলের মধ্যে সবার মুখ বন্ধ রাখার এক ধূর্ত কৌশলেরই নামান্তর বলে মনে করছেন তৃণমূল দলের লোকেরাই।

দলের ভেতরে খোঁজ নেওয়া শুরু হয়েছে কে বা কারা তলে তলে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।এদের বলে দেওয়া হবে কোন রকম দল বদলের দিকে গেলে তাদের পুরনো কার্যকলাপের যাবতীয় নথি নজরে রাখবে দল।পুলিশ ও সিাইডির ভয় তো থাকছেই,আর থাকছে দলের সমর্থকদের লেলিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত।শুভেন্দু ফিরাদরা দলের ভেতর যে বাহুবলিদের নিয়ন্ত্রন করেন,তাদের সজাগ থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়ে গেছে বলে খবর।কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় তাঁর বান্ধবীকে নিয়ে হোটেলে থাকাকালীন যে আক্রমনের সামনে পড়েছিলেন,সেটা এই সব বাহুবলির কাজ বলেই জানা যাচ্ছে।

কেউ দল বদলের জন্য সচেষ্ট হলেই পাড়ায় পাড়ায় তার বিরুদ্ধে দলীয় কর্মী সমর্থকদের লেলিয়ে দিয়ে ভয় দেখানো হবে,তার বক্তিগত জীবন যাপনকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলা হবে।পুলিশ ও সিআইডি দিয়ে নানা কেসে ফাঁসানোর চেষ্টা হবে,ভয় দেখানো হবে পরিবারের লোকজনকেও।অভিয্ক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ার যোগাযোগ ব্যবহার করে লাগাতার নজর রাখবেন,কে বা কারা বিজেপি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইছেন।

সেই অনুযায়ি তার বিরুদ্ধে সজাগ হবে প্রতিরোধ সেল।,প্রথমে ডেকে সাবধান করা হবে,তারপরেও যদি দেখা যায় সেই নেতা দলবদলের প্রক্রিয়া চালিয়েই যাচ্ছেন,তখন তার বিরুদ্ধে শুরু হতে থাকবে সাঁড়াশি আক্রমণ।সেই আক্রমনের প্রথম ধাপে সেই নেতাকে সরিয়ে দেওয়া হবে যাবতীয় দায়িত্ব থেকে,একঘরে করা হবে তাকে।যাবতীয় প্রভাব ও প্রতিপত্তি কেড়ে নেওয়া হবে।তৃণমূলের এই দল ভাঙা প্রতিরোধ সেল নিয়ে কেউ অফিসিয়ালি কোন মন্তব্য করতে রাজি নন,তারা জানেন এটা তৈরি করে মমতা কাটা দিয়ে কাটা তোলার প্রক্রিয়া শুরু করতে চান।এই প্রতিরোধ সেলকে বলা হয়েছে যারা দল ছেড়েছে তাদের বিরুদ্ধে লাগাতার প্রয়াস জারি রাখতে হবে,তাঁর কোন অনুগামি যেন তার সঙ্গে না যায় তার জন্য দলত্যাগি নেতাকে অবিরাম চাপে রাখতে হবে।অর্জুন সিং এর অনুগামিদের বলে দেওয়া হয়েছে অর্জুনের সঙ্গে গেলে,পুলিশ ও স্থানীয় বাহুবলিরা তাঁদের বুঝে নেবে।

শোনা যাচ্ছে ভয় দেখিয়েই অর্জুন অনুগামি ২৩ জন কাউন্সিলরের সই আদায় করেছে তৃণমূ অর্জুনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে রাজি করিয়ে।গোটা রাজ্য জুড়ে এই প্রতিরোধ প্রক্রিয়া চলবে বলে জানা যাচ্ছে।বিজেপিতে যাবো যাবো করেও যারা যেতে পারছেন না,তারা ভয পাচ্ছেন এই প্রতিরোধ সেলকে।ফলে বলাই যায় মমতার এই প্রতিরোধ সেল কাজ করতে শুরু করেছে।

নীতি নৈতিকতার প্রশ্ন তুলে লাভ নেই,আজকের সময় রাজনীতিতে ক্ষমতাই শেষ কথা।বিজেপি যেমন নীতি নৈতিকতার ধার ধারে না,তৃণমূলের কাছেও তেমনি আদর্শ-ফাদর্শের কোন দাম নেই যে কোন উপায় দলটা ধরে রাখাই মূল কথা।এখন প্রশ্ন হচ্ছে আয়ারাম-গয়ারামের যে সংস্কৃতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ রাজ্যে চালু করেছেন,ক্ষমতার রাশ আলগা হলে,পুলিশ আর সিআইডি ও গুন্ডা নিয়ন্ত্রনের প্রভাবে ঘাটতি হতে শুরু করলে সেই সংস্কৃতিটাই মমতা নিজের মত করে চালাতে পারবেন কি?সেটাই তাঁর বিপদ হযে য়াবে না তো?সেদিকে আমরা সবাই লক্ষ্য রাখবো বই কী!

Previous articleরং তো খেললেন, এবার ত্বক ও চুল বাঁচানোর উপায় জেনে নিন
Next articleফুটবল অ্যাকাডেমির মধ্য দিয়ে পিঙ্কি রায় অমর হয়ে থাকবেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here