দেশের সময়, ওয়েবডেস্কঃ দেশের ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন লালকেল্লা থেকে। এটি লালকেল্লা থেকে মোদীর নবম ভাষণ। এই বছর যন্ত্রের বদলে কাগজেই ভরসা রাখলেন মোদী।
শুরু থেকেই টেলি-প্রম্পটারের থেকে দূরেই থাকলেন প্রধানমন্ত্রী। ভাষণের শুরুতেই স্বাধীনতার ৭৫ পূর্তি উপলক্ষে দেশবাসীকে সাদর অভ্যর্থনা জানিয়েছেন মোদী। ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ পালিত হচ্ছে সারা দেশ জুড়ে।
এদিন সকালে লালকেল্লায় প্রধানমন্ত্রীর মাথায় দেখা যায় সাদার উপর ভারতের তেরঙার রঙের ছোপ ছোপ পাগড়ি। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের উদ্দেশে স্মৃতিচারণা করেন মোদী।
এদিন ভাষণের শুরুতেই তিনি বলেন, নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাওয়ার সময় এখন। বাপু, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, বাবাসাহেব আম্বেদকর, বীর সাভারকর, জওহরলাল নেহরু, রাজেন্দ্র প্রসাদ, লাল বাহাদুর শাস্ত্রী সকলের কথায় স্মরণ করেন মোদী আজকের মঞ্চ থেকে।
প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, অরবিন্দের ঘর এই ভারত। আজকের দিনে তিনি বীরসা মুন্ডা, তিরথ সিং সীরাম রাজুকেও স্মরণ করেছেন। মঙ্গল পান্ডে, তাঁতিয়া টোপিও বাদ যাননি তাঁর ভাষণ থেকে।
২০৪৭-র মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বে আত্মপ্রকাশ করবে ভারত। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর মুখে শোনা গেল এই অঙ্গীকার। এর জন্য দেশের যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে বলেছেন তিনি। পাশাপাশি দেশবাসীকে ৫টি সংকল্প নিতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী । সোমবার স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে লালকেল্লা থেকে ভাষণ দেন নরেন্দ্র মোদী। সেখানেই আগামী ২৫ বছরের জন্য দেশবাসীকে ৫টি সংকল্প নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান
স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী ৫টি সংকল্প নিতে বলেছেন ৷ তিনি বলেন, “প্রথমত দেশের সর্বত্র শিক্ষাকে ছড়িয়ে দিতে হবে। প্রতিটা দেশবাসী যেন শিক্ষিত হন। তবেই বিকশিত ভারতের পথে পা বাড়াতে সক্ষম হওয়া যাবে। দ্বিতীয়ত দেশে কোনও দাসত্ব থাকবে না।“ এছাড়াও দেশের ঐতিহ্যের জন্য সকলের গর্ব করা উচিত বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
তৃতীয় সংকল্প হিসেবে এই ঐতিহ্যকে রক্ষা করার বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ৷ পাশাপাশি, বিভেদ ভুলে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার কথাও বলেছেন নরেন্দ্র মোদী । তাৎপর্যপূর্ণ স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে বক্তৃতা শুরু করার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বৈচিত্রের দেশ ভারত।“ সেই বিভেদের মধ্যেই দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে সংকল্প নিতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি সবাইকে নাগরিক কর্তব্য পালনে জোর দেওয়ার জন্যেও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এদিনের বক্তৃতায় বারবার দেশের যুবসমাজের কথা উঠে এসেছে প্রধানমন্ত্রীর গলায়। তিনি বলেন, “এখন যাঁদের বয়স ২০-২৫ বছর, ২০৪৭-র মধ্যে তাঁরা ৫০ বছরে পৌঁছবেন। ওই সময় ভারত আর উন্নয়নশীল দেশ থাকবে না। উন্নত দেশের তকমা পেয়ে যাবে ভারত।“
ভারতের বিকাশ, দাসত্ব থেকে মুক্তি, উত্তরাধিকার নিয়ে গর্ব, ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, নাগরিক কর্তব্যে অবিচল থাকতে হবে- এই পাঁচ সংকল্পের কথা আজ বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সঙ্গে নারীশক্তির জয়গান গেয়েছেন লালকেল্লা থেকে।
এছাড়া এদিন আরও একবার ‘সবকা সাথ-সবকা বিকাশ’-র কথা শোনা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর গলায়। তিনি বলেন, “সরকারের লক্ষ্য ছিল সবকা সাথ, সবকা বিকাশ। কিন্তু দেশের জনগণই সেটাকে সবকা বিশ্বাস-সবকা প্রয়াসে নিয়ে গিয়েছে।“ প্রসঙ্গত গত কয়েক বছর ধরেই ৫ ট্রিলিয়ান অর্থনীতিতে পৌঁছনোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত।