অর্পিতা বনিক: বনগাঁ: সীমান্ত শহর বনগাঁয় ইছামতী তার নাব্যতা হারিয়ে মৃতপ্রায় এখন ৷ তার গতিপথে দীর্ঘদিনের বাধা হয়েছে দাঁড়িয়ে আছে পলি। আর তার বুক বছরভরই ভরে থাকে কচুরিপানায়৷। স্থানীয় বাসিন্দারা বহুবার কচুরিপানা পরিষ্কারের দাবি জানিয়েছিল সরকারের দুয়ারে৷
যদিও এলাকার মানুষের দাবিতে বনগাঁ পুরসভা ও সেচ দফতর মাঝেমধ্যে সে কাজও করেছে বেশ কযেকবার। তবুও অযত্নে কে জানে ইছামতীতে জলের বদলে দেখা মেলে শুধুই কচুরিপানার। অথচ এই ইছামতীর নামেই নতুন জেলা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কেন এই ইছামতীর এমন করুণ ছবি? এ প্রশ্ন অন্য বিষয় ভিন্ন আলোচনা। তবে অন্ধকারের মধ্যেও আলোর রেখার যে দেখা মেলে তা আবারও প্রমাণ পাওয়াগেল ৷ এবার সেই কচুরিপানাকেই অন্য কাজে ব্যবহার করছে বনগাঁ স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। কচুরিপানা দিয়ে তৈরি করছে রাখী। সেই রাখী পাঠানো হবে ভারতের রাষ্ট্রপতি, এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী-সহ পাঁচ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে।
২২ শ্রাবণ কবি গুরুর প্রয়াণ দিবসে এই অভিনব উদ্যোগের কথা জানান বনগাঁ পুরসভার পুরপ্রধান গোপাল শেঠ। সোমবার বনগাঁ পুরসভার তরফে বনগাঁ ত্রিকোণ পার্কে এক অনুষ্ঠান হয়। সেই অনুষ্ঠান মঞ্চের সামনে সাজানো হয়েছিল এই বিশেষ রাখী। বনগাঁর স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা দিন রাত এক করে এই রাখী তৈরি করছেন। শুধু বাংলা বাজারই নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও এই রাখী নজর কাড়বে, আশাবাদী বনগাঁর পুরপ্রধান ৷
পুরপ্রধান গোপাল শেঠের কথায়, “২২ শ্রাবণকে অন্যমাত্রা দিতে আমরা এই শ্রদ্ধা জানালাম। রবীঠাকুরও রাখী বন্ধনের মাধ্যমেই সৌভ্রাতৃত্বের বার্তা দিয়েছিলেন। আমাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা এই বিশেষ রাখী তৈরি করেছেন। আমরা এই হস্তশিল্পকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারছি। আমাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠী প্রায় ১২০০ মতো। সেখানে ১২ হাজার মহিলা আছেন। যাঁরা কাজ করতে চায় তাঁদেরকেউ কাজ দেওয়া হবে৷ বাইরে এই ধরনের হস্তশিল্পের দারুণ চাহিদা আছে। সেই দেশগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। বনগাঁ পুরসভা চাইবে বিশ্বময় এই কাজটা ছড়িয়ে দিতে। আমরা রাখী, ব্যাগ তৈরি করেছি। মুখ্যমন্ত্রীকে আমরা রাখী পাঠাব। রাখী পাঠাব আমাদের দেশের রাষ্ট্রপতিকে। একইসঙ্গে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, কানাডার রাষ্ট্রপ্রধানকেও এই রাখী পাঠাব।”