দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ব্যাপক বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হিমাচলপ্রদেশের সিমলা, কুলু-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। জানা গেছে, ধলি এলাকায় ধস নেমে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। জখম আরও দুই। প্রশাসন সূত্রে খবর, মৃত মহিলা ভবঘুরে। তিনি রাস্তার পাশে ঘুমিয়েছিলেন। জখমদের উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হিমাচল প্রদেশের এই জেলায় ভেসে গিয়েছে প্রধানতম পার্বতী নদীর উপরের সেতু। মেঘ ভাঙা বৃষ্টির দাপটে ধুয়ে গিয়েছে পাহাড়ি রাস্তা। যোগাযোগে পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। কুলু জেলার মণিকরণ এলাকায় এই বৃষ্টি ও হড়পা বানের প্রভাব পড়েছে সবচেয়ে বেশি। এখনও পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে এই ঘটনায়।
জারি আছে উদ্ধারের কাজ। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলের যে ছবি উঠে এসেছে, তাতে স্পষ্ট আকারে বোঝা যাচ্ছে, জলের তোড়ে প্রায় ভেসে গিয়েছে পাহাড়ি এই জেলার সমস্তকিছু। স্থানীয প্রশাসনের তরফ থেকে বলা হয়েছে, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধার কাজ চলছে, দ্রুত সেই কাজ শেষ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা চেষ্টা করা হচ্ছে।
Today morning, a #cloudburst & flash floods emerged from Himachal. Now, Malana & Manikaran in the Kullu district are cut off from the rest of the state.#Himachal & Uttarakhand may witness very heavy rains till July 7.
— The Weather Channel India (@weatherindia) July 6, 2022
Forecast: https://t.co/IKEhFwHmVSpic.twitter.com/kFwFBMII0u
সূত্রের খবর, হঠাৎ মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে জলস্তর বেড়ে যায় বেশ কয়েকটি নদীর। ফলত হড়পা বানে কুলু (Kullu Flooded) জেলার একাধিক এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জলের তোড়ে বাড়ি-ঘর, গাড়ি তলিয়ে যাওয়ার খবর মিলেছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে চলেছে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
#WATCH | Himachal Pradesh: Flash flood hits Manikaran valley of Kullu district due to heavy rainfall, dozens of houses and camping sites damaged in Choj village: SP Kullu Gurdev Sharma pic.twitter.com/ONgU2fWk5R
— ShimlaTimes (@ShimlaTimes) July 6, 2022
এর আগে বর্ষাকালে মেঘ ভাঙা বৃষ্টির ভয়াল রূপ দেখেছে হিমাচল। কিন্তু প্রতি বছর এমন ঘটনা ঘটতে থাকবে তা বোধহয় আশা করেননি কেউই, কিন্ত বাস্তবে দেখা যাচ্ছে বারবার প্রকৃতির রোষে পড়ছে এই রাজ্য। কুলুর এসডিএম জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত চারটে নাগাদ এই মেঘ ভাঙা বৃষ্টির ঘটনা ঘটে কুলু জেলায়।
মালানা, চোজ ও সুন্দরী পার্বতী উপত্যকায নেমে আসে তীব্র জলের স্রোত। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পার্বতী উপত্যকা এলাকায় জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে চারটি বাড়ি। চোজের যে ক্যাম্পিং এলাকা আছে, সেখানে ভেসে গিয়েছে বাড়ি। ঘটনায় জলে ডুবে চার জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে, এ দিকে জলের মধ্যে আটকে আছেন দুজন।
এ ছাড়া মালানা জেলাতেও হড়পা বানের প্রভাব পড়েছে। সেখান থেকে কম করে ২৫ জনকে উদ্ধার করেছে প্রশাসন। সেখানে জলে ডুবে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। হিমাচল প্রদেশের রাজ্য সরকার ওই এলাকা থেকে সমস্ত বেআইনি ক্যাম্পিং দ্রুত তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
পাশাপাশি, তিনি জানিয়েছে, ওই তিন-চার কিলোমিটার এলাকা থেকে বহু পর্যটককে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন বলেই প্রশাসনের তরফ থেকে বলা হয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী নিখোঁজদের সন্ধানের কাজ চালাচ্ছে।
বন্যার ফলে তিনটি সরকারি প্রকল্পের কাজে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। টানা বৃষ্টির জেরে বাঁধে যাতে চাপ সৃষ্টি না হয়, তার জন্য জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হিমাচল প্রদেশ প্রশাসনও। নদীর পাড়ে বসবাসকারী বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।