দেশের সময় বনগাঁ: নির্মল মাজির বক্তৃতার ক্ষত এখনও ভেসে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যে বক্তব্য নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ। নির্মল মা সারদার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এবার নির্মল থেকে কে আরও একধাপ এগিয়ে যেতে চাইলেন ২০২১ – এর ভোটে বাগদা বিধানসভায় বিজেপির টিকিটে জিতে ফের তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস ৷
উল্লেখ্য, রবিবার বনগাঁ বিএস ক্লাবের মাঠে তৃণমূলের কর্মী সম্মেলন ও রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। কয়েক হাজার তৃণমূল কর্মী-সমর্থক উপস্থিত ছিলেন সেখানে। বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস সহ উপস্থিত ছিলেন বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোপা রায়, সহ-সভাপতি তরুণ ঘোষ, বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শংকর আঢ্য, একাধিক প্রাক্তন কাউন্সিলর-সহ আরও অনেকে। সেই সম্মেলনেই মমতাকে রানি রাসমণির সঙ্গে তুলনা করেন বাগদার বিধায়ক। ওই সভায় বিশ্বজিৎবাবু মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করে বলেন, বিশ্বজিৎ বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনগ্রসর শ্রেণির মানুষ, গরিব মানুষেত্র জন্য যে কাজ করেছেন তার জন্য আগামী ১০০ বছর রানি রাসমণির মতো মানুষের মনের মণিকোঠায় থেকে যাবেন।
তাঁর আরও বলেন,আমরা নিজেদের ভাগ্যবান বলে মনে করি কারণ আমরা এমন একজন মুখ্যমন্ত্রী পেয়েছি যিনি নারী শক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য, সাধারণ মানুষের জন্য ও গরিব মানুষের জন্য অনেক কাজ করেছেন। তার মাধ্যমে আগামী ১০০ বছর মানুষের মনের মণিকোঠায় থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। রানি রাসমণি যেভাবে রয়েছেন সেভাবেই থাকবেন মুখ্যমন্ত্রীও। এটা আমার বিশ্বাস। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে আমার মনে হয়েছে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে তাঁরা রানি রাসমণির ছায়া পেয়েছি।
বিশ্বজিতের এ হেন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল বলেন, “একেই বলে শিক্ষার অভাব। আসলে বিশ্বজিৎ দাস বিজেপির হয়ে জিতে তৃণমূলে গিয়েছেন। ওই দলে এখন লাস্ট বেঞ্চে বসে রয়েছেন। তাই ফাস্ট বেঞ্চে আসার জন্য এসব বলছেন।”
বিশ্বজিৎ দাসের বক্তব্য প্রসঙ্গে বনগাঁ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি গোপাল শেঠ বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের কাছে সব দেবতার ঊর্ধ্বে। ফলে কার ছায়া বুঝি না। কিন্তু, উনি আমাদের কাছে সব দেবতার ঊর্ধ্বে। রানি রাসমণির যে কাজ তাঁর ছায়া হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করে চলেছেন, এতে কি সমস্যা রয়েছে? রানি রাসমণি তো এখন বেঁচে নেই ফলে তাঁর ছায়া যদি এখন প্রকাশ পায় তাহলে সমস্যা কোথায়?”
নির্মলের বক্তব্যকে ভাল ভাবে নেয়নি তৃণমূল কংগ্রেসও। অনেকের মতে, যে ভাবে নির্মল স্তুতি গাইতে গিয়ে বেঁফাস মন্তব্য করেছেন এবং রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ভাল ভাবে নেননি। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ স্পষ্ট করেই বলেছেন, নির্মলের ওই কথা আসলে নির্লজ্জ চাটুকারিতা। তারপর থেকে প্রকাশ্যে কোনও সভাসমিতিতেও ডাক্তার নেতাকে দেখা যাচ্ছে না। সেই অস্বস্তি কাটিয়ে ওঠার আগেই আবার নতুন বিতর্ক তৈরি করে দিলেন বাগদার বিশ্বজিৎ।