দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ গত শুক্রবার বারাণসী থেকে বিমানে কলকাতায় ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁর বিমান কলকাতায় অবতরণের পরই হই হই পড়ে যায় প্রশাসনের অন্দরমহলে। কারণ, অভিযোগ ছিল, কলকাতায় পৌঁছনোর আগে বিমান হঠাৎই ধপ করে অনেকটা নেমে যায়! বিপদের হাত থেকে কপাল জোরে বেঁচে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
৭২ ঘণ্টা পর সেদিনের অভিজ্ঞতার কথা নিজেই সাংবাদিকদের জানালেন মমতা। সোমবার বিধানসভা অধিবেশনে ঢোকার মুখে সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী জানান, সেদিন দুটো বিমান মুখোমুখি এসে গিয়েছিল। পাইলটের বুদ্ধিমত্তার কারণেই কোনওরকমে রক্ষে পেয়েছেন তাঁরা। নইলে ১০ সেকেণ্ড এদিক ওদিক হলে বড় বিপদ হয়ে যেতে পারত! মমতা জানান, মুখোমুখি একই লাইনে চলে এসেছিল দু’টি বিমান। কিন্তু পাইলট অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গে আট হাজার ফুট নীচে নেমে আসেন। তাতেই শেষপর্যন্ত দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়।
ডিজিসিএ দাবি করেছিল, সেদিন তেমন কিছুই হয়নি। সামান্য টার্বুলেন্স হয়েছিল বিমানে। কিন্তু তাতে কোনও বিপদের ঝুঁকি ছিল না।
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার জানিয়েছেন, মামুলি টার্বুলেন্সের ব্যাপার এটা ছিল না। প্রায় মুখোমুখি এসে গিয়েছিল দুটি বিমান।
এভিয়েশন কর্তাদের মতে, দুটি বিমান মুখোমুখি এসে গেলে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের দায় থেকে যায়। মুখ্যমন্ত্রী যে অভিযোগ করছেন, তা বিশদে খতিয়ে দেখতে তদন্ত হওয়া উচিত। বিষয়টি হেলাফেলা করা ঠিক হবে না।
শুক্রবার দুপুর দুটো চল্লিশ নাগাদ দমদমে নামে মমতার বিমান। তারপরেই তোলপাড় পড়ে যায়। জানা গিয়েছিল, ঝাঁকুনির জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পিঠে এবং কোমরে আঘাত লেগেছিল। যদিও এদিন বিধানসভায় নিজের আঘাত নিয়ে কিছু বলেননি তিনি।
২০১৬-তে একটি বেসরকারি বিমানে মুখ্যমন্ত্রী পাটনা থেকে কলকাতায় ফেরার পথে কলকাতায় নামার আগে তাঁর বিমানটিকে প্রায় আধ ঘণ্টা আকাশে চক্কর কাটতে হয় রানওয়েতে নামার অনুমতি না মেলায়। বিমানের জ্বালানি ফুরিয়ে আসায় পাইলট বারে বারে অবতরণের অনুমতি চাইলেও বিলম্ব করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
ওই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকার।
পরের দু’বছরও দু’টি ঘটনায় নবান্নের তরফে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছিল। ২০১৭-তে দিল্লি থেকে কলকাতায় ফেরার সময় তাঁর বিমান চার ঘণ্টা বিলম্বে ছাড়ে। পরের বছর বাগডোগরা থেকে কলকাতায় নামার আগে মুখ্যমন্ত্রীর বিমানকে অনেকক্ষণ আকাশে অপেক্ষা করতে হয় রানওয়ে ফাঁকা না থাকায়। ওই ঘটনায় রাজ্য সরকার প্রশ্ন তোলে, মুখ্যমন্ত্রীর বিমানটি অগ্রাধিকার পেতে পারে না?