পার্থ সারথি নন্দী , দেশের সময়: শনিবার থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টি (rain)। রবিবার সারারাত বৃষ্টি হয়েছে। রাতের টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন (flooded) বনগাঁর(Bangaon) একাধিক এলাকা।
কোথাও জল পায়ের পাতা সমান, কোথাও আবার হাঁটু সমান। টানা বৃষ্টিতে জলের তলায় ডুবে গেছে শহরের বহু জায়গা। তবে সকাল থেকেই জল নামাতে তৎপর বনগাঁ পুরসভা। পাম্প বসিয়ে জল নামানোর চেষ্টা চলছে। পুরসভা সূত্রে খবর, বৃষ্টি কমলেই জল নেমে যাবে। তবে জল জমায় সমস্যায় পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা (residents)।
এই পরিস্থিতিতে বনগাঁর বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়ালেন পুর প্রশাসক গোপাল শেঠ , পুররসভার ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম সহ পুরসভার ২২টি ওয়ার্ডের কর্মী সমর্থকদের কে সঙ্গে নিয়ে রবিবার সকালেই বৃষ্টির মধ্যেই দুয়ারে-দুয়ারে ছুটলেন তিনি ৷
এই দুর্যোগে সমস্যাতে পড়ে কী অবস্থায় আছেন তাঁর এলাকার মানুষ খোঁজ খবর নিলেন নিজেই৷ এদিন পুররসভার ১, ৫,৮,১২, ১৪,১৫, এবং ১৯নম্বর ওয়ার্ডগুলিতে ১০টি পাম্প বাসিয়ে জল নামানোর কাজ চলছে সেই সঙ্গে দূর্গতদেরকে শুক্নো খাবার এবং বেশ কিছু ত্রিপল দেওয়া হয় পুরসভার পক্ষ থেকে একথা দেশের সময়’ কে জানিয়েছেন পুরপ্রশাসক গোপাল শেঠ।
প্রসঙ্গত, শক্তি হারিয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ এখন নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আর তার জেরে রবিবারের পর সোমবারও বৃষ্টি অব্যাহত বাংলার বিভিন্ন জেলায়। কলকাতা সহ একাধিক জেলার বিভিন্ন অংশ জলমগ্ন। নাজেহাল আমজনতা। এই পরিস্থিতি থেকে কবে মিলবে রেহাই? রোদের দেখাই বা কবে মিলবে? কবে পড়বে শীত? একগুচ্ছ প্রশ্ন মানুষের মনে।
অন্যদিকে,উত্তর ও মধ্য কলকাতার কিছু এলাকা জলের তলায়। শহরতলীর (suburban areas) অবস্থাও একই। কলকাতার চারপাশে বহু এলাকা জলমগ্ন।
লালবাজার ট্রাফিক কন্ট্রোল সূত্রে খবর, ঠনঠনিয়া, মহাত্মা গান্ধী রোড, সেন্ট্রাল এভিনিউ, মহাত্মা গান্ধী রোড-সেন্ট্রাল এভিনিউ ক্রসিং জলের তলায়। এছাড়াও আমহার্স্ট স্ট্রিটের একাংশ জলের নীচে। পাশাপাশি জল যন্ত্রণার শিকার মুরলী ধর সেন লেন, মুক্তারাম বাবু স্ট্রিট, খিদিরপুরের বহু এলাকা। উত্তর বন্দর থানার সামনেও জল জমে আছে, জল জমেছে বরানগরের বিটি রোডের একাংশে।
হাওয়া অফিস বলছে, মঙ্গলবার থেকেই মেঘ কাটবে। রোদের দেখাও মিলবে। আকাশ পরিষ্কার হবে। তবে জাঁকিয়ে শীত পড়তে পড়তে সেই ১৫ ডিসেম্বর। তার আগে রাতের তাপমাত্রা এক থেকে দু’ডিগ্রি কমতে পারে। তবে বৃষ্টির জেরে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমায় শীতের আমেজ থাকবে।
হাওয়া অফিসের মতে, ঘূর্ণিঝড় ও নিম্নচাপের কারণে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প ঢুকেছে বঙ্গে। তাই উত্তুরে হাওয়া বাধা হচ্ছে। পরিস্থিতি কাটতে কিছুদিন সময় লাগবে। তার পরই শীত পড়বে। কলকাতায় শীত পড়তে আরও কিছুদিন সময় লাগলেও জেলায় ঠান্ডা পড়তে শুরু করবে সপ্তাহান্তেই। বিশেষত পশ্চিমের জেলাগুলোতে ১৫ ডিগ্রির নিচে নামবে তাপমাত্রা। ১১ ডিসেম্বর থেকে তাপমাত্রা কমবে কলকাতাতেও। হাওয়া অফিসের মতে, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ কাটার কয়েকদিন পর রাজ্যে শীত পড়ার অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হবে।
উল্লেখযোগ্য, জাওয়াদ আগেই শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। ফলে বাংলায় সেই প্রভাব পড়ার আশঙ্কা নেই। অন্যদিকে, নিম্নচাপের জেরে যে বৃষ্টি চলছে সেটাও কমে যাবে বেলা গড়ালেই, খবর হাওয়া অফিস সূত্রে। বিকেলের পর থেকেই আকাশ পরিস্কার হয়ে কেটে যাবে দুর্যোগ।
প্রসঙ্গত, দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য মঙ্গলবার পর্যন্ত সেচ, বিদ্যুৎ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফরের কর্মীদের ছুটি বাতিল করেছে নবান্ন। বিশেষত, দক্ষিণ ২৪ পরগণা ও পূর্ব মেদিনীপুরের দিকে বিশেষ নজর রাখা হয়েছে।