দেশের সময় ,বনগাঁ: দুর্গাপুজো শেষ। কিন্তু উৎসবের মরশুম চলবে সেই কালীপুজো পর্যন্ত। তারই মাঝে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষ্যে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে বুধবার উত্তর ২৪পরগনার কালুপুর পাঁচপোতা নবতরুণ সংঘের উদ্যোগে আলপনা প্রতিযোগিতায় মাতলেন কালুপুরের ১৫০ লক্ষ্মী৷ দেখুন ভিডিও:
হ্যাঁ, এঁরা সকলেই যে যার ঘরের প্রিয় লক্ষ্মী৷ ভক্তিভরে লক্ষ্মীদেবীর আরাধনার পাশাপাশি এদিন তাঁরা মাতলেন আলপনা প্রতিযোগিতায়৷ তাঁদের নিপুন হাতে তুলির টানে ফুটিয়ে তুললেন একের পর এক আলপনার নকশা ৷ যা দেখে মুগ্ধ হলেন কালুপুর গ্রামের বাসিন্দারা৷
পদ্মে অধিষ্ঠাত্রী দেবী লক্ষ্মী। তাই লক্ষ্মীপুজোর দিনে পদ্ম ও তার ওপর লক্ষ্মীর পা এঁকে ধন-দৌলতের দেবীকে প্রসন্ন করার চেষ্টা করেছেন কেউ।
কেউ আবার বড় বৈঠক খানা হলে সেখানে যে আলপনার নকশা মানায় সেই নকশা ফুটিয়ে তুললেন৷ তাতেই যে চোখ আটকে থাকবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
আবার বাড়ির প্রবেশ দ্বারের সৌন্দর্য্য আসবে এমনই নকশা আঁকলেন এক মুহুর্তে ৷
কোথাও দেখা গেল বাড়ির মধ্যভাগে লক্ষ্মীর পা আঁকা এমন গোলাকৃতি আলপনা সকলের নজর কেড়েছে। এমন কি বাদ পড়েনি লক্ষ্মীর বাহন লক্ষ্মী পেচাঁ ও ৷
একটা সময় ছিল যখন আমাদের মা-মাসিরা চালেরগুঁড়ো দিয়ে সুন্দর করে আল্পনা তৈরি করতেন। অনেক সময় ধরে অসীম ধৈর্যসহকারে আঙুলের পরশে আঁকতেন নান্দনিক আল্পনা।
গৃহসজ্জায় সৌন্দর্য আর নৈপুণ্য আনায়নে সেই আল্পনা এক প্রকারের প্রাচীন সনাতনী রীতি। যা ঘরগেরস্থালির মাঙ্গলিক নানা কাজের ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
তবে কালের বিবর্তনে সেই চালেরগুঁড়োর আল্পনা আজ হারিয়েই গেছে। এখানে সংযোজন ঘটেছে আধুনিক পদ্ধতির উপকরণ।
বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে চালেরগুঁড়োর পরিবর্তে রং-তুলির এই সংমিশ্রণ আল্পনার চাহিদাকে পূরণ করে চলেছে। আর সেই প্রাচীন চালেরগুঁড়োর আল্পনা ঠাঁই নিয়েছে স্মৃতির কোঠায়।
সেই হারিয়ে যাওয়া আল্পনাকে অস্ত্র করেই এই প্রথম কালুপুর পাঁচপোতা নবতরুণ সংঘের উদ্যোগে আলপনা প্রতিযোগিতায় মাতলেন কালুপুর পাঁচপোতা গ্রামের প্রায় ১৫০ মহিলা৷
উদ্যোক্তরাদের এক কর্তা সৌমেন সরকার জানালেন , হারিয়ে যাওয়া গ্রাম্য নান্দনিক আল্পনা শিল্পকে ফের ফিরিয়ে আনতেই এই প্রতিযোগীতার আয়োজন৷
ওই গ্রামের অর্পিতা মন্ডল সরকার, পারমিতা বৈরাগী, নীপা রায়ের মত প্রতিযোগীরা জানালেন তাঁরা খুবই খুশি আল্পনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পেরে ৷ এদিনের প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন ওই গ্রামেরই চদুই চিত্র শিল্পী গোপাল চন্দ্র সরকার এবং বিপ্লব সর্দার তাঁরা বলেন, কোভিড বিধি মেনে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়, সেই জন্য এলাকার আলাদা আলাদা ৩২ টি বাড়িতে গ্রামের মহিলারা তাদের নিজের নিজের ঘরে , উঠোনে আল্পনা দিয়েছেন আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদের হাতের কাজ দেখে পুরষ্কৃত করেছি৷