দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দু’দিন আগেই জেলাশাসক ও সরকারের বিভিন্ন দফতরের সচিবদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদী। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছিল, সেই বৈঠকে মুখ্যসচিব বলেছেন, দুয়ারে সরকার কর্মসূচি নিয়ে তোলাবাজি যেন না হয়। তিনি জেলাপ্রশাসনগুলিকে এও নাকি বলেছিলেন, দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে কোনও রাজনৈতিক নেতা যেন মাতব্বরি না করেন। যা করার সবটা করবেন সরকারি আধিকারিকরা।
আগামী ১৬ অগস্ট থেকে শুরু হচ্ছে দুয়ারে সরকার। সেখানেই এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতুন প্রকল্প লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের নাম নথিভুক্ত করা যাবে। তার আগে বৃহস্পতিবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রীও সতর্ক করে দিলেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে যেন কোনও ভুল বোঝাবুঝি না হয়। কী ভাবে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে গিয়ে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম পূরণ করা যাবে তাও জলবৎ তরলং করে বুঝিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মমতা বলেন, “লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি যেন না হয়। দুয়ারে সরকারে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য আলাদা ক্যাম্প থাকবে। বিনামূল্যে ফর্ম পাওয়া যাবে সেখান থেকে। ফর্মে একটি ইউনিক নম্বর থাকবে। যা ডুপ্লিকেট করা যাবে না। সেই ফর্ম আধার কার্ডের সঙ্গে লিঙ্ক করতে।” মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ফর্মে যে ইউনিক নম্বর থাকবে তা কম্পিউটার জেনারেটেড নম্বর হবে। বাইরের কোনও ফর্ম গৃহীত হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন মমতা।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে বেশ কিছু ভিত্তিহীন রটনা রটছে বলেও জানান মমতা। তিনি বলেন, “উত্তর ২৪ এর কয়েকটি জায়গায় রটিয়ে দিয়েছিল, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পেতে গেলে বাড়ির ট্যাক্স জমা দিতে হবে। এরকম কোনও নির্দেশিকা সরকারের নেই। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার আপনার নিজস্ব অধিকার।”
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১৬ অগস্ট থেকে রাজ্যে ১৭ হাজার ১০৭টি ক্যাদুয়ারে সরকারের ক্যাম্প হবে।
বন্যা কবলিত এলাকার জন্য পরে হবে দুয়ারে সরকার। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সেখানে এই কর্মসূচির বিশেষ পরিকল্পনা নেবে নবান্ন। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, রাজ্য সরকারের ১৮টি প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করা যাবে এই ক্যাম্প থেকে। স্বাস্থ্যসাথী, শিক্ষাশ্রী জয় জোহার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, মানবিক, ঐক্যশ্রীর মতো প্রকল্পগুলির জন্য নাম নথিভুক্ত করা যাবে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পগুলিতে।
দুয়ারে সরকার কর্মসূচির অধীনেই শুরু হবে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্প।
দুয়ারে সরকারেই এই কাজ করা যাবে। এই আবেদনপত্র নকল করা যাবে না। একটা ইউনিক নম্বর থাকবে ওই আবেদন পত্রে। একমাত্র দুয়ারে সরকারের লক্ষ্মীর ভান্ডার এর কাউন্টার থেকেই এই আবেদন পত্র পূরণ করা যাবে। তবেই সেটা মান্যতা পাবে।” তবে সে ক্ষেত্রে লক্ষ্মীর ভান্ডার নিয়ে কোন অভিযোগ এলে সেই অভিযোগ জানানোর জন্য ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে সরাসরি ফোন করে অভিযোগ জানানো যাবে। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন ” যদি কোন অভিযোগ থাকে তাহলে ১০৭০/২২১৪৩৫২৬ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানানো যাবে। অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হবে।”
এদিন মুখ্যমন্ত্রী লক্ষ্মীর ভান্ডার এর আবেদন পত্র নিয়ে যদি কোনো নকল হয় সে নিয়েও সতর্ক করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন “যে ইউনিক নম্বর দেওয়া থাকবে সেই নম্বর নকল করে কেউ কিছু করতে পারবে না। বাইরে থেকে কেউ আবেদনপত্র নিয়ে এলে বা কোন এজেন্সিতে কে নিয়ে এলে ওই আবেদনপত্রগুলো কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না।” এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন “যেভাবে আমরা দিদিকে বলো করেছিলাম সেভাবেই ফোন করে অভিযোগ জানানো যাবে।” ইতিমধ্যেই লক্ষীর ভান্ডার নিয়ে নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য শিশু সুরক্ষা ও পরিবার কল্যাণ দপ্তর।
মূলত রাজ্যে শিশু সুরক্ষা ও পরিবার কল্যাণ দপ্তর মহিলাদের প্রত্যেক মাসে ৫০০ টাকা করে ও এসসি-এস টি দের ক্ষেত্রে ১০০০ টাকা করে দেওয়ার নির্দেশিকা জারি করেছে। তবে সে ক্ষেত্রে যে নির্দেশিকা জারি হয়েছে সেখানে একাধিক নিয়মের কথা বলা হয়েছে।
মূলত বয়স ২৫ থেকে ৬০ এর মধ্যে হতে হবে। রাজ্যের বাসিন্দা হতে হবে। সরকারি কর্মচারী অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী কেন্দ্রের ও রাজ্যের, কোন স্বশাসিত সংস্থা, সরকারি নিয়ন্ত্রিত কোন সংস্থা, পঞ্চায়েত, মিউনিসিপালিটি, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, সরকারি স্কুল গুলির ক্ষেত্রে যদি কেউ নিয়মিত বেতন বা পেনশন পান তারা এই সুবিধা পাবেন না।এক্ষেত্রে সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আর্থিক সুবিধা ট্রান্সফার করা হবে।
এক্ষেত্রে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আঁধার লিঙ্ক থাকতে হবে। আগামী ১৬ ই আগস্ট থেকে দুয়ারে সরকার ফের শুরু করছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই মুখ্যসচিব জেলাশাসকের নির্দেশ দিয়েছে লক্ষীর ভান্ডার নতুন প্রকল্প শুরু হচ্ছে তাই বিভিন্ন ক্যাম্পে মহিলাদের প্রচুর ভিড় হতে পারে। সেক্ষেত্রে যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হয় সেই বিষয়েও ইতিমধ্যেই মুখ্যসচিব নির্দেশ পাঠিয়েছেন জেলাশাসকদের বলেই নবান্ন সূত্রে খবর