নিম্নচাপের জের: ভারী বৃষ্টিতে ভাসছে গোটা বাংলা,আজও ৩টি জেলায় অতি বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে

0
870

দেশের সময় ওযেবডেস্কঃ সুস্পষ্ট নিম্নচাপ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান করছে। বীরভূম পেরিয়ে পশ্চিম বর্ধমান এর দিকে সুস্পষ্ট নিম্নচাপের অভিমুখ। উত্তর ও উত্তর পশ্চিম দিকে এগিয়ে এটি ঝাড়খন্ড হয়ে দক্ষিণ বিহার ও উত্তরপ্রদেশের দক্ষিণ অংশে পৌঁছবে। মৌসুমী অক্ষরেখা সক্রিয় দক্ষিণবঙ্গে। গয়া থেকে সুস্পষ্ট নিম্নচাপ এলাকার ওপর দিয়ে এটি গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। ফলে আজও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সর্তকতা গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে।

নিম্নচাপের জেরে ভুগছে বাংলা। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা ভাসছে। সেই আশঙ্কা আজ, শুক্রবারও রয়েছে। তবে সব ক’টি জেলায় নয়। মূলত ৩টি জেলায় আজও ভারী বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনই জানাচ্ছেন আবাহওয়াবিদরা।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানাচ্ছে, প্রবল বৃষ্টি হতে পারে পশ্চিম বর্ধমান ও পুরুলিয়া জেলায়। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সর্তকতা পশ্চিম মেদিনীপুর বাঁকুড়া ও বীরভূম জেলায়। বিক্ষিপ্তভাবে হালকা মাঝারি বৃষ্টি হবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের অন্য জেলাতেও। কলকাতা সহ বাংলাদেশ লাগোয়া জেলাগুলিতে বৃষ্টির প্রকোপ কমবে। শনিবার পর্যন্ত বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গে।

আগামী ৪৮ ঘণ্টায় সেই নিম্নচাপের অবস্থান একটু পশ্চিম দিকে যাবে, অর্থাৎ বিহার, ঝাড়খণ্ডের দিকে। এর প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গে সব জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে।

বৃহস্পতিবার বৃষ্টি যে রেকর্ড করা হয়েছে, তা দুই মেদিনীপুরে সবচেয়ে বেশি। সেখানকার বহু জায়গায় সেখানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বনগাঁ শহরে নিকাশি ব্যবস্থা দেখতে বৃষ্টির মধ্যেই ছাতা মাথায় পুরপ্রশাসক গোপাল শেঠ বিভিন্ন ওয়ার্ড এ জমা জল পরিদর্শন করেন৷

গোপাল শেঠ জানান, কিছুদিন আগেই বনগাঁ পুরসভার উদ্যোগে শহরের নিকাশির হাল ফেরাতে শহরের বিস্তীর্ণ এলাকার বৃষ্টির জল ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কের দুপাশে থাকা নয়ানজুলির মাধ্যমে নিকাশ করার ব্যবস্থা করা হয়, কিন্তু এখন নয়ানজুলি গুলি জবরদখল হয়ে আবর্জনা জমে ও আগাছায় পথ রুদ্ধ হওয়ায় নিকাশি ব্যাবস্থায় কিছু সমস্যা রয়েছে,  বনগাঁ পুরসভার পক্ষ থেকে আগাছা ও আবর্জনা সাফ করে নিকাশি ব্যাবস্থাকে আরও ভালো ভাবে যাতে করা যায় তার জন্য এদিনের এই পরিদর্শন৷ শহরের ১ নম্বর রেলগেট এলাকা থেকে কাজ শুরু করা হয়েছিল যশোর রোডের নয়ানজুলি সাফাইয়ের। এদিনের ভারি বৃষ্টিতে কি পরিস্থিতি সেটা দেখে তার ব্যাবস্থা নেওয়ার কাজ শুরু করা হবে৷

বনগাঁ পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ২০,, ২২নম্বর ওয়ার্ডের জমা জল ওই নয়ানজুলি গুলির মধ্যে দিয়ে বক্সীপল্লী, ঢাকাপাড়া, প্রতাপাড়া হয়ে খালে গিয়ে পড়ত। তারপর বিভিন্ন খাল বিলের মাধ্যমে তা গিয়ে মিশতো ইছামতী নদী তে।
গোপাল বাবুর কথায় ” যশোর রোডের নয়ানজুলির যাবতীয় বাধা সরাতে পদক্ষেপ করা হয়েছে, আমাদের হাতে পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর থেকে পাওয়া ২৪ লক্ষ টাকা আছে। তা দিয়ে আমরা আধুনিক একটি মেশিন কিনেছি। সেই মেশিনের মাধ্যমে  নয়ানজুলি সাফ করে জল চলাচলের ব্যাবস্থা করার কাজ হচ্ছে। “

বাইরে তখন তীব্র বৃষ্টির দাপট ,দীর্ঘ সময় গাড়ীর মধ্যেই অপেক্ষার পর বনগাঁ থেকে বাগদার পথে খবর সংগ্রহের উদ্যেশ্যে রওনা দিলেন সাংবাদিক জ্যোর্তিময় চক্রবর্তী সহ অন্যান্য চিএ সাংবাদিকরা৷

খড়্গপুরে ২৬ সেমি, মেদিনীপুরে ২৩, দুর্গাচকে ২২ সেমি বৃষ্টি হয়েছে।

৩০ জুলাই দক্ষিণবঙ্গের পূর্ব দিকে অংশ বৃষ্টি অনেকটাই কমবে। পুরুলিয়া এবং সংলগ্ন জেলায়। অন্য জায়গায় ভারী নয়।, তবে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমানে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দক্ষিণবঙ্গের বাকি অংশে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।

এবার দেখে নেওয়া যাক, কলকাতার আবহাওয়া কেমন থাকতে পারে। আবাহওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, শুক্রবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকতে পারে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে ৫ ডিগ্রি কম।

বুধবার রাত থেকে শুরু হয়েছিল বৃষ্টি। বৃহস্পতিবার সারাদিন বৃষ্টি হয়েছে। কখনও প্রবল, কখন টিপটিপ করে। আর এ কারণে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় জল জমে যায়।
এর ফলে প্রবল সমস্যা পড়েন মানুষ। গাড়ি চলাচলে নাজেহাল হতে হয় তাদের। যানবাহনের গতিবেগ ধীর গতির হয়ে যায়। জল জমে যাওয়ার ফলে মানুষের মনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তারা কলকাতা পুরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

রবিবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি। রবিবার থেকে বাড়বে তাপমাত্রাও। উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি ক্রমশ বাড়বে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার এই দুই জেলায় বিক্ষিপ্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। শনিবার থেকে দার্জিলিং কালিম্পং আলিপুরদুয়ার কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি ওপরের দিকের এই পাঁচ জেলাতেই বৃষ্টি হবে।

পশ্চিমবঙ্গ এবং উড়িষ্যা উপকূলে মৎস্য জীবীদের আগামী ২৪ ঘণ্টায় সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় কলকাতা নদিয়া উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা হুগলি হাওড়া এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। সমুদ্র উপকূলে এই ঝড়ো হওয়ার পরিমাণ কিছুটা বাড়বে। আগামী কয়েকদিন রাজস্থান মধ্যপ্রদেশ ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস। উত্তর-পশ্চিম ভারতের রাজ্যগুলিতে বৃষ্টির প্রভাব কমবে আগামীকাল থেকে।

মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। যেহেতু নিম্নচাপ রয়েছে। তার ফলে বঙ্গোপসাগরে আবহাওয়া প্রতিকূল থাকতে পারে।

আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, আজ আবাহওয়ার সামান্য উন্নতি হতে পারে।

Previous articleDaily Horoscope: তুলার অবৈধ প্রণয়,কুম্ভ রাশির প্রাপ্তি যোগ
Next articleকলকাতার জলছবি…বহু স্টেশনে আটকে ট্রেন,শহরজুড়ে জল নামাতে চালু পুরসভার ৪৫০টি পাম্প!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here