দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ লাদাখ নিয়ে চিন-ভারত সমস্যার সমাধান হয়নি। সাংহাই কর্পোরেশনের বৈঠকে দুই দেশের বিদেশমন্ত্রীর আলোচনার পরেও লাদাখে চিনা সেনার সক্রিয়তা লক্ষ্য করা গেছে। তার মধ্যেই নতুন উপদ্রব শুরু হল বলে জানাচ্ছে ভারতী বাহিনী। আচমকাই উত্তরাখণ্ডের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর চিনা ফৌজের অতিসক্রিয়তা নজরে এসেছে। সূত্র মারফৎ খবর মিলেছে, পিপলস লিবারেশন আর্মির ৪০ জনের একটি দলকে সীমান্তের কাছাকাছি টহল দিতে দেখা গেছে।
সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, উত্তরাখণ্ডের বারাহোটি এলাকায় চিনের সেনার এয়ারবেস আছে। এতদিন সেখানে লাল ফৌজের কোনও সক্রিয়তা দেখা যায়নি। হঠাৎ করেই বারাহোটির এয়ারবেসে চিনের ড্রোন আনাগোনা করতে দেখা যাচ্ছে। ওঠানামা করছে হেলিকপ্টার। সীমান্ত বরাবর টহল দিতে শুরু করেছে চিনের সেনারা। লাদাখে সীমান্ত সমস্যা মিটিয়ে দুই দেশের মধ্যে শান্তি ফেরানোর আপ্রাণ চেষ্টা চলছে। এর মধ্যেই উত্তরাখণ্ডে চিনের সেনার টহলদারি দেখে উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় সরকার।
লাদাখে চিন ও ভারতীয় সেনার মধ্যে সংঘর্ষের সময়েই উত্তরাখণ্ডে সেনার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছিল। বিশেষ করে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর নজরদারি দ্বিগুণ করা হয়েছিল। কিন্তু এতদিনে লাল ফৌজের কোনওরকম সক্রিয়তা দেখা যায়নি উত্তরাখণ্ডের সীমান্তে। তবে ভারতীয় সেনাসূত্র বলছে, বহুবার বারাহোটিকে নিজেদের এলাকা বলে দাবি করেছিল চিন। তবে লাল ফৌজের টহলদারি দেখে ভারতীয় বাহিনীও যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৈরি। ইতিমধ্যেই সেন্ট্রাল আর্মি কম্যান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াই ডিমরি ও চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত সেন্ট্রাল সেক্টর ও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পরিদর্শণ করে এসেছেন।
বস্তুত, পূর্ব লাদাখ ছাড়াও সিকিম ও অরুণাচল সীমান্তেও সক্রিয় লা ফৌজ। গালওয়ানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরেও সিকিম সীমান্তে হাতাহাতিতে জড়িয়েছিল দুই দেশের সেনাই। ওয়েস্টার্ন সেক্টরে লাদাখে এবং ইস্টার্ন সেক্টরে অরুণাচল ও সিকিমে ভারত ও চিনা সেনার মধ্যে এ ধরনের ঘটনা একেবারেই নতুন নয়। টহলদারিকে কেন্দ্র করে আকছার তা লেগেই রয়েছে। কিন্তু গালওয়ানের সংঘর্ষের পরে সিকিম, অরুণাচলে চিনা বাহিনীর তৎপরতা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। ভারতীয় সেনা সূত্র জানাচ্ছে, ইস্টার্ন সেক্টরে আর্মি ভেহিকল মোতায়েন করছে চিন। তৈরি হচ্ছে এয়ারবেস যা প্রসারিত তিব্বত অবধি।
অরুণাচল সীমান্ত বরাবর চার জায়গায় সামরিক পরিকাঠামো তৈরি করতে দেখা গিয়েছে চিনের বাহিনীকে। ভারতের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা থেকে ২০ কিলোমিটারের মধ্যে আসাফিলা, টুটিং অ্যাক্সিস, চ্যাং জ়ি ও ফিসটেল-২ সেক্টরে সেনা মোতায়েন করতে দেখা গেছে চিনকে। ভারতের সেনা সূত্র জানাচ্ছে, এই চারটি স্পটের মধ্যে আসাফিলা এবং ফিসটেল-২ সেক্টরে চিনে বাহিনীর তৎপরতা বেশি। এই দুটি স্পট ভারতের সীমান্তের খুবই কাছে। অনুমান করা হচ্ছে এই দুই এলাকায় সেনার সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি রাইফেল ডিভিশনও মোতায়েন করছে পিপলস লিবারেশন আর্মি।