দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সোমবার সংসদ ভবন চত্বরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “আমি চাই, প্রতিটি দলের সাংসদরা সবচেয়ে কঠিন ও তীক্ষ্ণ প্রশ্ন করুন। কিন্তু শৃঙ্খলা মেনে সরকারকেও জবাব দিতে দেওয়া উচিত।” মোদীর মতে, “একমাত্র সেক্ষেত্রেই গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে। মানুষের আস্থা বৃদ্ধি পাবে। উন্নয়নের গতি ত্বরাণ্বিত হবে।”
সোমবারই শুরু হচ্ছে সংসদের বাদল অধিবেশন। তার আগেই ফাঁস হয়েছে পেগাসাস কাণ্ড। বিরোধীরা ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগে সংসদে সরকারকে চেপে ধরতে তৈরি। অধিবেশন শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বললেন, বিরোধীরা সরকারকে কঠিন প্রশ্ন করতেই পারেন। কিন্তু সরকারকেও তার জবাব দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে।
রবিবারও প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, সরকার চায়, সংসদের অধিবেশন ফলপ্রসূ হোক। আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব হল, এমন পরিবেশ তৈরি করা যাতে জনস্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত নানা ইস্যু আলোচিত হতে পারে।
রবিবার অভিযোগ ওঠে, দেশের তাবড় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক, আইনজীবী, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, সরকারি আমলা, বিজ্ঞানী-সহ তিনশোরও বেশি মোবাইল ফোন হ্যাক করে গোপন তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।
পুরো ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠছে ইজরায়েলি সংস্থা ‘এনএসও’ (NSO)-র দিকে, আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় যারা পরিচিত ‘সাইবার অস্ত্রের ডিলার’ হিসেবে। ইজরায়েলি সাইবার ইনটেলিজেন্স সংস্থা এনএসও গ্রুপের তৈরি বিশেষ সফটওয়্যারই দেশের সাইবার নিরাপত্তা বলয়ে ফাটল ধরিয়েছে বলেই অভিযোগ।
এই সফটওয়্যারের নাম পেগাসাস স্পাইওয়্যার।
পেগাসাস একপ্রকারে ফ্ল্যাগশিপ স্পাইওয়্যার যার আবিষ্কর্তা ইজরায়েলের এনএসও গ্রুপ। এই স্পাইওয়্যারকে ‘কিউ স্যুট’ বা ‘ট্রাইডেন্ট’ বলা হয়। অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস ডিভাইস এর মূল নিশানা। নানাভাবে অ্যান্ড্রয়েড বা অ্যাপল ফোনের অপারেটিং সিস্টেমে কব্জা করতে পারে এই সফটওয়্যার। গত দু’বছর ধরে হোয়াটসঅ্যাপের ভয়েস কলিং ফিচার ব্যবহার করে এই স্পাইওয়্যার ছড়িয়ে দিচ্ছে ইজরায়েলি সংস্থা।
সাইবার বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রথমে ফোনে একটি ওয়েবসাইটের লিঙ্ক পাঠানো হয়। তাতে ক্লিক করলেই মোবাইলে পেগাসাস ইনস্টল হয়ে যায়। তাছাড়া মেসেজিং অ্যাপের ‘ভয়েস কল’ ফিচারকে নিশানা বানায় হ্যাকাররা।
যে কোনও মোবাইল সেট থেকে হোয়াটস্অ্যাপের ভয়েস কলে ফোন করছে হ্যাকাররার। আপনি ফোন ধরুন বা না ধরুন, সেই কল আপনার মোবাইল সেটে ঢোকা মাত্রই হ্যাকারদের বানানো ‘নজরদার সফটওয়্যার’ সরাসরি এন্ট্রি নেবে মোবাইলে। এই সফটওয়্যারের কোড নিজে থেকেই ইনস্টল হয়ে পাচার করে দেবে ব্যক্তিগত তথ্য।
শুধু তাই নয়, হ্যাকারদের কারিগরিতে ফোনের কল লিস্ট থেকে মুছেও যাবে কল আসার সময় এবং সফটওয়্যার ইনস্টলের যাবতীয় তথ্য। অর্থাৎ গ্রাহক বুঝে ওঠার আগেই তাঁর যাবতীয় তথ্য বেহাত হয়ে যাবে।