দেশের সময় ওযেবডেস্কঃ করোনা মোকাবিলায় বাংলায় বিধিনিষেধে কিছুটা ছাড় দেওয়া হল। খুচরো দোকানে কিছুটা ছাড় দেওয়া হল। বেলা ১২টা থেকে ৩টে পর্যন্ত খুচরো দোকান খোলা থাকবে। তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ কর্মী কাজ করতে পারবেন। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে একথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ কোনও নির্মাণ সংস্থা যদি নিজেদের কর্মীদের ভ্যাকসিন দিয়ে কাজ শুরু করতে চায়, তাদের ছাড় দেওয়া হবে। তবে দূরত্ববিধি মেনে চলতে হবে। আগামী ১৬ তারিখ পর্যন্ত জারি থাকবে বিধিনিষেধ। বাংলায় আপাতত বন্ধ থাকছে ট্রেন, বাস,মেট্রো পরিষেবা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্যে করোনার সংক্রমণ অনেকটা কমেছে’। রাজ্যে ১ কোটি ৪১ লাখ টিকা এখনও পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। মে মাসে ১৮ লাখ ভ্যাকসিন রাজ্য কিনেছে বলেও জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
উল্লেখ্য, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজার ২৮৪ জন এবং করোনা মুক্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৪১০ জন। গত ১ দিনে মৃত্যু হয়েছেন ১৪২ জন। এই মুহূর্তে রাজ্যে সুস্থতার হার ৯১.৯৩ শতাংশ।রাজ্যে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে কার্যত লকডাউন জারি করেছে নবান্ন। সুফলও মিলেছে হাতেনাতে দিন প্রতিদিন কমছে সংক্রমণ।
গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮৩০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩৩ জনের। দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে রাজ্যে শীর্ষে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। সংশ্লিষ্ট জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৪৮২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৪৯ জনের।
কোভিড পরিস্থিতির বিধিনিষেধ শিথিল করা থেকে শুরু করে, ইয়াসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, সবটা নিয়ে নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও। পড়ুন এক নজরে:
কোভিডের ক্ষেত্রে বুকলেট অন অক্সিজেন প্রকাশ করা হচ্ছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। এটা একটা ম্যানুয়াল।
আমাদের কাছে কিছু আবেদন এসেছে বিধিনিষেধ সংক্রান্ত। শাড়ির দোকান ও সোনার দোকানের পাশাপাশি আইটি সেক্টর ১০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করতে পারবে। পাশাপাশি স্থানীয় দোকান খোলার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এক লক্ষ ৩২ হাজার করোনা সক্রিয় রোগীর সংখ্যা কমে হয়েছে ১ লক্ষ ৯ হাজার ৮০৬।
২১ হাজার দৈনিক কেস কমে ১১ হাজারে নেমেছে।
এক কোটি ৪১ লক্ষ টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৪০ লক্ষ দ্বিতীয় ডোজ। নিজেদের টাকা দিয়ে ১৮ লক্ষ টিকা কেনা হয়েছে।
আমরা ১ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা খরচ করেছি টিকা কেনার জন্য।
এখন ১২০০ ক্যাম্প চলছে। ২ লক্ষ মানুষ রয়েছেন।
৩১৯টা বাঁধ ভেঙেছে।
২.২১ লাখ হেক্টর কৃষিজমি ক্ষতি হয়েছে।
দুয়ারে ত্রাণ কিন্তু সব জায়গায় হবে না। শুধুমাত্র ইয়াস, টর্নেডো বা জল ঢুকে যাওয়ার জন্য যেখানে ক্ষতি হয়েছে সেখানেই এই ত্রাণ দেওয়া হবে।
ক্যাম্প কোথায় হবে সেটা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্ষেত্রে গোসাবা এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানোর সমস্যা হচ্ছে। পানীয় জল নিয়ে যেন কোনও সমস্যা না হয়ে, জেলাশাসককে দেখতে বলেছি।
সবাইকেই বলছি, মানুষ আসবে, তারা একটু বিরক্ত করবে। সেটা কিন্তু সহানুভূতির সঙ্গে দেখতে হবে। বেবি ফুড, পানীয় জল, খাবার, ত্রিপল যেন কম না পড়ে।
আকাশপথে অনেকটা জায়গা আমি দেখেছি।
দিঘায় ৭ কিলোমিটার একটা সেতু অনেকদিন ধরে পরে রয়েছে। তার মধ্যে সাড়ে তিন কিলোমিটার হয়ে গেছে। বাকিটা করতে হবে। এটা কিন্তু তাড়াতাড়ি দেখতে হবে।
মৎস্যজীবীদের বিষয়টাও দেখতে হবে।
ইটভাঁটা ডুবে আছে।
দিঘায় সৌন্দর্যায়নের যে কাজ হয়েছিল, সেটা প্রায় সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।
সৌন্দর্যায়নের কাজে কিছু গাফিলতি ছিল। যে কাজ হয়েছিল, তার নীচে পাথরের উপরেই নতুন কাজ করা হয়েছিল। তাই জলের তোড়ে সহজেই ভেসে গেছে।
আপাত সমাধান কিছু কিছু ক্ষেত্রে করতে হয়। কিন্তু পাকাপাকি সমাধান এইভাবে হয় না।
তবে এই সুযোগে কেউ যদি বলে এত টাকা চাই, সেটা হবে না।
সমুদ্রর তিলের উপরে যে দোকানগুলো ছিলো সব নষ্ট হয়ে গেছে। সেগুলো ঠিক করতে হবে।
মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মাছ চাষ কিন্তু আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সেগুলো কিন্তু ঠিকভাবে দেখতে হবে।
ডিএম-দের বলব, ফিল্ড ওয়ার্ক আপনারা করছেন। আপনারা খুব ভাল কাজ করেছেন। মানুষ এখন ঘরে ফিরছে। তাদের দিকটা দেখতে হবে। আপনারাও দু’দিন অন্তর জেলার সবাইকে নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করে সব দেখে নেবেন।
বণিক সভার সঙ্গে বৃহস্পতিবার বৈঠক করব। জেলার বণিক সভাগুলোকেও ডাকা হোক।
ম্যানগ্রোভ অনেকটা বাড়াতে হবে। মtলত যেখানে লোকালয় আছে সেই জায়গাগুলো দেখে এই ম্যানগ্রোভ লাগাতে হবে। ভেটিভার ঘাসও ব্যবহার করতে হবে।
ধান ও চাল প্রোকিওরমেন্ট প্রোগ্রাম যেমন চলছিল তেমন চলবে।
নীতি আয়োগের কাছে একটা চিঠি দিতে হবে। প্রায় প্রতি বছর ঝড় একটা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই নীতি আয়োগের কাছে টাকা চেয়ে চিঠি দিতে হবে। পাঁচশো মতো কোল্ড স্টোরেজ, ফ্লাড সেল্টার বা সাইক্লোন শেল্টার তৈরি করার জন্য এই টাকা চাইতে হবে।
পর্যটন দফতর, এমএসএমই দফতরের সবাইকে বলছি বিভিন্ন চেম্বারকে বলতে, তারা যদি নিজেদের উদ্যোগে টীকাকরণের কাজ করতে চায় তাহলে রাজ্য সরকার এই বিষয়ে সাহায্য করতে পারে।
বর্ষা শুরু হয়েছে। জল বাড়তে পারে। ঝাড়গ্রামের দিকে বৃষ্টি হলেই ওরা জল ছাড়বে। ওদের সঙ্গে কথা বলে রাখবেন যাতে জল ছাড়ার আগে আমাদের জানায়।
আমাদের গরিব লোকের সরকার। বড়লোকের সরকার নই। কেন্দ্র আমাদের পাওনা টাকাও দেয় না। তবু আমরা যা পারব তাই দিয়েই আপনাদের পাশে থাকব। মনে রাখবেন আমরা আপনাদের পাহারাদার।
কলকাতা পুরসভাকে বলব, তাজ বেঙ্গলের সামনে থেকে চেতলা এলাকা পর্যন্ত গঙ্গার পলি তোলার কাজটা ঠিকমতো করলে জল জমার সমস্যা অনেকটা মেটানো সম্ভব হবে।
দেউচা পাচামির ক্ষেত্রে প্রথম পর্যায়ে কারও জমি নেওয়া হবে না। পরবর্তী ক্ষেত্রে আপনাদের সাথে কথা বলে সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দিয়ে তবেই যা করার করা হবে। আপনাদের বঞ্চিত করে কিছুই আমরা করবো না।
ডুমুরজলাতে ‘খেল সিটি’ করা হবে।
ধনধান্য স্টেডিয়ামটা গত চার বছর ধরেই দেখছি হচ্ছে তো হচ্ছেই। আর কবে শেষ হবে কাজ? পূর্ত দফতরের সচিবকে প্রশ্ন মমতার।
ঝড়ে যে গাছগুলো পড়ে যায় সেই গাছের গুঁড়িগুলো তো নদী বা সমুদ্রের পাড়ে ফেলে রাখা যায়। তাহলে তো ভাঙন কিছুটা রুখতে পারে। গতবছর আমফানের সময় যে গাছগুলো পড়ে গিয়েছিল সেগুলো কোথায় গেল?
প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা কোনও টাকা চাই নি। শুধু বলেছিলাম আপনি যা মনে করবেন তাই করবেন।
আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কেন্দ্র কী সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা সেইদিকে তাকিয়ে আছি। ওরা চিঠি দিয়েছিল, আমরা তার উত্তর দিয়েছি। এখন ওরা সিদ্ধান্ত নিলে তখন তার উত্তর আবার দেব। আপাতত আমার হাতে কিছু নেই। Now Nothing is in my hand.