দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দেশে করোনা সংক্রমণে খানিকটা স্বস্তি। বহুদিন পর সাড়ে তিন লাখের নীচে নামল দেশের দৈনিক করোনা সংক্রমণ। সোমবারের তুলনায় মঙ্গলবার কিছুটা কমল দৈনিক সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ২৯ হাজার ৯৪২ জন। তবে, ফের বাড়ল দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা। একদিনে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৮৭৬ জনের। একদিনে দেশে সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৮২ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লক্ষ ২৯ হাজার মানুষ। সংক্রমণের গ্রাফে এই হ্রাস নিঃসন্দেহে কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে।
তবে সংক্রমণ কিছুটা কমলেও এখনও উদ্বেগের কাঁটা বিঁধে রয়েছে মৃত্যুহার নিয়ে। এদিনও কোভিড আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ। বরং গতকালের তুলনায় আজকের মৃতের সংখ্যা আরও বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা গেছেন মোট ৩ হাজার ৮৭৬ জন। গতকালের চেয়ে ১২২ বেশি।
একটানা তিন সপ্তাহ ধরে দেশে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল চার লাখের বেশি। সেখানে গতকাল কোভিড পজিটিভ হয়েছিলেন প্রায় ৩ লক্ষ ৬৬ হাজার মানুষ। আজ পরিসংখ্যান আরও নামল।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে জানা যাচ্ছে, দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ কোটি ২৯ লাখ ৯২ হাজার ৫১৭। মোট সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ৯০ লাখ ২৭ হাজার ৩০৪। মোট মৃতের সংখ্যা ২ লাখ ৪৯ হাজার ৯৯২। এই মুহূর্তে দেশে অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ৩৭ লাখ ১৫ হাজার ২২১।
আইআইটির গবেষকরা আগেই বলেছিলেন, মে মাসের মাঝামাঝি দেশে ভাইরাস সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৩৫ লাখ ছাড়িয়ে যাবে দেশে। ধেয়ে আসবে করোনার তৃতীয় ঢেউ, যা কোনওভাবেই আটকানো যাবে না। মে-জুন মাস নাগাদ কোভিড আক্রান্তের সংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়েই বাড়বে মৃত্যু। তবে বিশেষজ্ঞরা এও জানিয়েছেন জুন মাসের পর থেকে সংক্রমণের হার কমতে থাকবে।
এদিকে, কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও-র তৈরি নয়া ২-ডিজি ওষুধ সদ্য কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার সবুজ সঙ্কেত পেয়েছে। শনিবারই তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের রিপোর্টে সন্তুষ্ট হয়ে ক্যান্সারের পুরোনা এই ওষুধটিকে করোনার চিকিৎসায় জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের ছাড়পত্র দিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই)। তার পর থেকেই ওই ওষুধের জন্য চাতকের মতো অপেক্ষায় দেশের চিকিৎসককুলের বড় একটি অংশ।সকলেই চাইছেন, দ্রুত ওষুধটি বাজারজাত হোক। কেননা, দেশে বর্তমানে প্রবল ভাবে চলছে অক্সিজেন সঙ্কট। সেই সন্ধিক্ষণে নয়া ওষুধটি যেন এক চিলতে আশার আলো। কারণ, করোনা রোগীর অক্সিজেন নির্ভরতা কমায় এ ওষুধ। ওয়াকিবহাল মহলের আশা, মাসখানেকের মধ্যেই বাজারে এসে দ্বিতীয় ঢেউকে শান্ত করতে বড় ভূমিকা নেবে ওষুধটি। কেননা, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই ওষুধ রোগীর শরীরে নভেল করোনাভাইরাসের বংশবৃদ্ধি ঠেকিয়ে দিতে সক্ষম।
অন্যদিকে, বাংলাতেও করোনায় বেলাগাম সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১৯ হাজার ৪৪৫ জন, মৃত্যু হয়েছে ১৩৪ জনের। রাজ্যে এই মুহূর্তে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ২৬ হাজার ৬৬৩। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১৮ হাজার ৬৭৫ জন। রাজ্যে বর্তমানে সুস্থতার হার ৮৬.২৬ শতাংশ। রাজ্যে ১০ মে পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০ লাখ ১২ হাজার ৬০৪ জন, মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার ৪৬১ জন।
কোভিড ঠেকাতে এখনও সম্পূর্ণ লকডাউনের কথা ভাবেনি কেন্দ্র। কিন্তু একাধিক রাজ্যে ইতিমধ্যেই লকডাউন ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। চলছে টিকাকরণও।