সিমলা টু মানালী

0
938

“ট্রাভেলগ” (পর্ব-৪)

লিখছেন~দেবন্বিতা চক্রবর্তী,

পরের দিন সকাল সকাল বেড়িয়ে পড়লাম, আজ অনেক কিছু দেখে নিতে হবে কারন এর পর ই আমাদের অন্য প্ল্যান করা হয়ে গেছিল সময় পাওয়া যাবে না একদম ৷প্রথমেই আমরা পাড়ি জমালাম হিড়িম্বা মন্দিরের উদ্দেশ্যে । হিড়িম্বা নামটা চেনা লাগলেও হঠাৎ মনে করতে পারলাম না , অজ্ঞানের শেষ সম্বল গুগলে সার্চ করতে যাব গাড়িতে যেতে যেতে চটজলদি গল্পটা বলে দিলেন অামার মাদার ইন্ডিয়া ৷

আসলে বেড়াতে গেলে গাড়িতে বসে যে নানান বিষয় নিয়ে যে নির্ভেদাল আড্ডাটা হয় সেই মজাটা বাড়িতে হওয়া কোনো মতেই সম্ভব নয় ৷ মা বলে দিল , মহাভারতে তৃতীয় পান্ডবের অর্থাৎ ভীমের পত্নী ছিলেন হিড়িম্ব রাক্ষসের কন্য হিড়িম্বা ,তবে মানালীতে তিনা রাক্ষসী হলেও দেবী হিসাবে পূজিত হন ।হোটেল থেকে প্রায় ১.৫ কিমি রাস্তা পেরলেই পাহাড়ী পাইন ও দেবদারু গাছে ঘেরা স্বর্গের মতো স্থানে এই মন্দির । ১৫৫৩ সালে ঢুংরি পহাড়ে এই প্যাগোডা ধর্মী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন রাজা বাহাদুর সিং, তাই একে ঢুংরি মন্দির ও বলা হয় ৷ জীবজন্তু , দেব দেবীর মূর্তি কাঠের অসাধারন কারুকার্যে মুগ্ধ হতে হয় , একই সাথে দেখা গেল বিষ্ণুর পায়ের ছাপ , গুহার মতো বেদীর নিচে দেবী হিড়িম্বার মূর্তি পিতলের ৷ কিন্তু মন্দিরের

পুরোহিতের কাছে মন্দিদের করুন ইতিহাসের গল্প শুনে রোমাঞ্চিত হলাম ।মন্দির তৈরীর পর কমিটির লোক কারিগরের ডান হাত কেটে নেওয়া হয় , কিন্তু শিল্পি হওয়ায় বাম হাতেই কারিগর দক্ষ হয়ে উঠলে রাজা তার শিরচ্ছেদ করেন৷ অদূরেই আছে ভীম ও তার পুত্র ঘটোৎকচের মন্দির । মন্দির পেড়িয়ে হঠাৎ ভ্রম হয় এক মেলার মধ্যে এসে পড়েছি , কি নেই সেখানে , উলের ও শালের পোশাকও নানা রকমের জিনিস কেনাবেচা হচ্ছে , আমরাও ফাঁক পেয়ে একটু তীরন্দাজী প্রাকটিস করে হাতের টিপটা একটু ঝালিয়ে নিলাম ৷স্থানীয়রা খুবই মিশুখে , তাই তাদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে একটা ধারনা হল ।আচমকা দেখলাম আমার দিকে স্থানীয় কয়েকজন মহিলা ছুটে এসে আমার হাত দুটো টেনে হাতের মধ্যে জোরে চেপে বসিয়ে দিল এক লোমোশ সাদা ধবধবে একটি খরগোশ, কোলে নিয়ে ছবি তোলার

জন্যই এই কান্ড ,এটিও তাদের ব্যবসার একটি অঙ্গ , এতো মিষ্টি প্রানীটির নাম ও সুন্দরী , মনটা এইসব নানা কারনে ফুরফুরে হয়ে গেল ।
পাহাড়ী রাস্তা ছাড়িয়ে নদীকে পাশে নিয়ে আর একটি দর্শনীয় স্থান মানালী ক্লাব হাউস ৷ এখানে মাউন্টেনিয়ারিং ছাড়াও আরও অনেক রকম ইন্ডোর গেমস্ এর ব্যবস্থা আছে ৷ বিপাশার পাশে দেবদারু গাছে ছাওয়া বনবিহার পার্কটাও খুবই মনোরম ৷
নিবিড় গাছে ছাওয়া মনোরম জায়গাটা ছেড়ে যেতে যেন মন চাইনা , হিড়িম্বা দেবীকে বিদায় দিয়ে এবার আমাদের গন্তব্য মনুর বাড়ি অর্থাৎ মানুলাসয় ।

Previous articleকিউয়িদের ৭ উইকেটে দুরমুশ করে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সমতা ফেরাল রোহিতরা
Next articleচিটফান্ডের পাই পয়সার হিসাব নেওয়া হবে,দিদি তিন তালাকের পক্ষে কেন: জলপাইগুড়িতে আক্রমণ মোদীর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here