দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বিষ্যুদবার তখন ভোট চলছে নন্দীগ্রামে। বয়ালের বুথে বসে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক সেই সময়েই দক্ষিণ ২৪ পরগনার সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, দিদির মুখ দেখলেই বোঝা যাচ্ছে বাংলার বুথ ফেরত সমীক্ষা কী!
শুক্রবার দিদি গিয়েছেন কোচবিহারের দিনহাটায়। আর এদিন ওই জেলার শীতলকুচিতে দাঁড়িয়ে অমিত শাহ বললেন, “দিদি নন্দীগ্রামে হারছেন। এটা উনি নিজেও বুঝে গিয়েছেন। কিচ্ছু করার নেই। ২ মে দিদি যাচ্ছেন।”
নন্দীগ্রামের ফলাফল কী হবে তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের কৌতূহল রয়েছে। সকলেই আভাস পাওয়ার চেষ্টা করছেন। যুযুধান দুই প্রতিপক্ষের শরীরি ভাষাতেও ফলাফলের ইঙ্গিত খুঁজছেন অনেকে। পরিস্থিতি যখন এমনই টানটান তখন গতকাল মোদী বলেছিলেন, দিদি আপনি কি শেষ দফার ভোটেও প্রার্থী হবেন? এদিন আবার আরও কিছুটা এগিয়ে অমিত শাহ বলেন, “দিদির পরামর্শদাতারা তাঁকে জিজ্ঞেস করেছেন, আর কোথায় দাঁড়ানো যায়? তখন দিদি বলেছেন, যেখানেই দাঁড়াই উত্তরবঙ্গে দাঁড়াব না।”
যদিও তৃণমূলের তরফে ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বিতীয় কোনও আসনে লড়ছেন না। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এও দাবি করেছেন, দিদি নন্দীগ্রামেই জিতছেন। পর্যবেক্ষকদের মতে, নন্দীগ্রাম এবার ভোটের এপিসেন্টার। সেই কেন্দ্রের ফলাফলের আগাম আভাস চাড়িয়ে দিয়ে বিজেপি যেমন তৃণমূলের মনোবল ভাঙতে চাইছে। ঠিক তেমনই উপর্যুপুরি টুইট, বিবৃতিতে তৃণমূলও বোঝাতে চাইছে, দিদি জিতছেন। কারণ এখনও ছ’দফার ভোট বাকি। নইলে নিচুতলার কর্মীদের নামানো যাবে না। ফলে এত দিন নন্দীগ্রামের ভোট নিয়ে যেমন উত্তেজনার পারদ ছিল সপ্তমে। ভোট মিটতেই ফলাফলের পূর্বানুমান নিয়ে দাবি পাল্টা দাবিতে নেমে পড়ল বিজেপি-তৃণমূল।
এদিন উত্তরবঙ্গের ‘অনুন্নয়ন’ নিয়ে মমতাকে নিশানা করেন শাহ। তাঁর কথায়, “কলকাতা থেকে কোচবিহারের দূরত্ব ৭০০ কিলোমিটার। কিন্তু দিদির মনে তা সাত হাজার কিলোমিটার। তাই কোনও উন্নয়ন করেননি। যোগাযোগ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, পরিকাঠামো—কিচ্ছু নেই।” অমিত শাহের কথায়, “বিজেপির সরকার এলে অগ্রাধিকারের জায়গা হবে উত্তরবঙ্গ। পৃথক উন্নয়ন বোর্ড গঠন করে বছরে দু’হাজার কোটি টাকা করে দেওয়া হবে পরিকাঠামো উন্নয়নে।” এর আগে জঙ্গলমহল ও সুন্দরবনে গিয়ে এইমস গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন শাহ।
বাংলায় নির্বাচনী প্রচারে এসে কল্পতরু অমিত শাহ। উত্তরবঙ্গের কোচবিহারের শীতলকুচির জনসভায় সাধারণ মানুষকে একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। জানালেন, রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে কোচবিহারে তৈরি করা হবে এইমস -এর ধাঁচে হাসপাতাল। সেখানেই উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন উত্তরবঙ্গের মানুষ।