দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বাম ছাত্র-যুব নেতারা একটা স্লোগান প্রায় দিয়ে থাকেন। তা হল, ‘দেওয়াল থেকে জানতে হয়/ দেওয়াল থেকে শিখতে হয়/ দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে/ দেওয়ালজুড়ে লিখতে হয়!’
গত লোকসভা ভোটে বাংলায় বামেদের ভোট শতাংশ নেমে এসেছিল সাত শতাংশে। এই দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থায় যখন বিধানসভা ভোট দোরগোড়ায় তখন সিপিএমের দেওয়াল লিখনে আর সাম্রাজ্যবাদ, আন্তর্জাতিক লগ্নি পুঁজির মতো মেহনতির মাথার উপর দিয়ে যাওয়া শব্দ নেই। ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশের প্রচার গানে জায়গা করে নিল টুম্পা সোনা!
শুক্রবার সন্ধের পর সেই গান সোশ্যাল মিডিয়ায় আসতেই ভাইরাল হয়ে গেল। সেই গানের লিরিকে দিদি এবং মোদী দুপক্ষকেই তুলোধোনা করা হয়েছে। তাতে যেমন উঠে এসেছে ‘ভাইপো’ প্রসঙ্গ তেমনই উঠে এসেছে নারদ কাণ্ড এবং তাঁদের অনেকের গেরুয়া শিবিরে সামিল হওয়া।
পুরো গানটাই টুম্পা সোনার প্যারোডি। বামেদের বক্তব্য, তৃণমূল আর বিজেপি একই মুদ্রার এপিঠ-ও পিঠ এবং দুই ফুলের বোঝাপড়া রয়েছে। সেই মতো গানে লেখা হয়েছে, ‘ও টুম্পা সোনা, কী বলব মাইরি/ ওদের ভালই সেটিং, মিসিং ডেলোর ডায়েরি!’ মূল ক্যাচ লাইনে লেখা হয়েছে, ‘টুম্পা, তোকে নিয়ে ব্রিগেড যাব/ টুম্পা, চেন ফ্ল্যাগে মাঠ সাজাব/ টুম্পা, আঠাশে তুলব আওয়াজ……!’
একটা সময় বাংলার রাজনীতিতে দেওয়াল লিখনে ছড়া বা কার্টুন ছিল বুদ্ধিদীপ্ততায় ঠাসা। তাতে পাল্টা আক্রমণেও একটা হিউমার থাকত। সাতের দশকে হাওড়ার বেলুড়ে ছাত্র পরিষদ দেওয়ালে লিখেছিল, ‘প্রিয়-প্রণব-গনি, পান্না-হীরে-চুনী!’ তার নীচে বাম ছাত্র সংগঠন লিখে দিয়েছিল, ‘রাহু-কেতু-শনি’! আবার একই ভাবে ২০০৪ সালে ব্যারাকপুর কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী তড়িত্ তোপদারের সমর্থনে দেওয়ালে লেখা হয়েছিল, ‘৮০ শতাংশ বেকারের কাজের দাবিতে তড়িত্ তোপদারকে জয়ী করুন’! তার নীচে কাঠ কয়লা দিয়ে কে যেন লিখে এসেছিল, বাকি ২০ শতাংশ কি আঙুল চুষবে? কিন্তু ইদানিং রাজনীতিতে কদর্যতাই বেশি। নির্মল মজার বদলে অশালীন কথার বন্যা। তাতে কোনও দলই প্রায় বাদ নেই। তার মধ্যে এই বাম ব্রিগেডের টুম্পা অন্য স্বাদ এনে দিয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে।
আজ শনিবার আবার তৃণমূল কংগ্রেসের অফিশিয়াল স্লোগান প্রকাশ রয়েছে। তাতে দেখার শাসকদল কী স্লোগান হাজির করে।
দেখুন ভাইরাল হওয়া গানের ভিডিও:
https://fb.watch/3MjaGiRn_c/