দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে অমিত শাহর সঙ্গে তাঁর এক বার সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছিল। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে পৃথক ভাবে কখনওই কথা হয়নি। সংসদে মুখোমুখি হয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু তার অতিরিক্ত নয়।
কাল কলকাতায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী। বিজেপি সূত্রের খবর, কাল দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়দের মতোই শুভেন্দুরও কথা হবে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে, বিমানবন্দরে যাবেন শুভেন্দু। সেখানে দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অমিতাভ চক্রবর্তীদেরও থাকার কথা। পরে সন্ধ্যা পৌনে ৭টা থেকে তাঁদের সঙ্গে পৃথক ভাবে কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী।
এক সময়ে ঠিক হয়েছিল, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে বিধানসভা থেকে ইস্তফা দিয়ে শুভেন্দু একবার দিল্লিতে যাবেন। তার পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এসে, তার পর বিজেপিতে সামিল হবেন। কিন্তু পরে প্ল্যান বদলাতে হয়। কারণ সে সময়ে কৃষক আন্দোলন সামলাতে ব্যস্ত ছিল দিল্লির সরকার।
নেতাজির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কলকাতায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ ধরনের সফরে এলেও বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানাতে যান দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয়রা।
এ বার ঠিক হয়েছিল, রাজ্য নেতারা ভাগাভাগি করে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে থাকবেন। শীর্ষ নেতারা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে যাবেন। তার পর কিছু নেতা জাতীয় গ্রন্থাগারের অনুষ্ঠানে থাকবেন, বাকিরা থাকবেন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অনুষ্ঠানে। সেই প্ল্যান কিছুটা বদলেছে।
বিজেপির এক নেতার কথায়, প্রধানমন্ত্রী কলকাতায় এলেই রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতিরও খোঁজ নেন। প্রতিবারই দেখা যায়, বিমানবন্দরে মুকুল রায়ের সঙ্গে দু’মিনিট হলেও আলাদা কথা বলেন তিনি। কারণ, রাজ্য নেতাদের মধ্যে মুকুলের অভিজ্ঞতা বেশি, অনেক বেশি পোড়খাওয়া। এখন শুভেন্দুকে নিয়েও প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহ ও উৎসাহ রয়েছে। সম্ভাবনাময় তরুণ নেতৃত্বকে বরাবরই উৎসাহ দেওয়ার পক্ষে তিনি।
সার্বিক এই পরিস্থিতিতে রাজ্য বিজেপিতে এই আলোচনাও শুরু হয়েছে যে নন্দীগ্রামে কি শুভেন্দুর হয়ে প্রচারে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। এটা ঠিক যে নন্দীগ্রামে কে প্রার্থী হবেন, তা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেনি বিজেপি। কিন্তু যেই সেখানে প্রার্থী হোন লড়াইটা হবে শুভেন্দুর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ফলে বাংলায় বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামই হয়ে উঠতে পারে প্রধান ব্যাটেল গ্রাউন্ড।
রাজ্য বিজেপির এক নেতার কথায়, চোদ্দর ভোটে আসানসোলে প্রচারে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, মুঝে দিল্লি মে বাবুল চাহিয়ে। এ বার নন্দীগ্রামে গিয়েও বড় কথা বলে দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
নেতাজি জয়ন্তীতে শহরে প্রধানমন্ত্রী মোদী, বিকেলে ভিক্টোরিয়ার অনুষ্ঠানে যাবেন মুখ্যমন্ত্রীও–
শনিবার নেতাজি জয়ন্তী উপলক্ষে রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন বিকেলে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল থেকে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। জানা যাচ্ছে সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রীও। এর আগে আমফানে বিধ্বস্ত বাংলাকে দেখতে গত ২২ মে কলকাতায় এসেছিলেন মোদী। সেই সময় দেখা হয়েছিল দু’জনের। শনিবার অসমে জমির পাট্টা বিলি করে বঙ্গে পা রাখবেন মোদী। প্রথমেই যাবেন নেতাজি ভবন। ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ শিল্পীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এরপরেই ভিক্টোরিয়ায় পরাক্রম দিবসের অনুষ্ঠানে সামিল হবেন মোদী।
নেতাজির এমন জন্মদিন উদযাপন বাংলা আগে কখনও দেখেছে কিনা বলা মুশকিল। বিধানসভা নির্বাচনের উত্তাপ গিয়ে পড়েছে ভারতবর্ষের অন্যতম আইকন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ওপরেও। আর তাই এই বছর একটু ব্যতিক্রম। নেতাজির ১২৫ তম জন্ম জয়ন্তীতে রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। টেক্কা দিতে পদযাত্রায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর দুই হেভিওয়েট-এর নিরাপত্তা নিশ্চিদ্র করতে কঠিন নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ছে শহর কলকাতা।
গত মে মাসে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে ২৪ ঘণ্টার মধ্য়েই আমফান বিধ্বস্ত বাংলা পরিদর্শন করতে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড বাংলার পাশে দাঁড়িয়ে হাজার কোটির অর্থ সাহায্য়ের কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি সুপার সাইক্লোনে মৃতদের পরিজনদের ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মোদী। তারপর মোদী-মমতার আর সাক্ষাৎ দর্শন হয়নি। ভিডিও কনফারেন্সে একাধিকবার দুজনে মুখোমুখি হলেও নতুন বছরে এই প্রথম সাক্ষাৎ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
কেন্দ্রের উদ্যোগে শনিবার সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন শুরু হচ্ছে। কলকাতা থেকেই বর্ষব্যাপী উৎসবের সূচনা করবেন মোদী। বিকেলে নেতাজি জয়ন্তী উপলক্ষ্যে কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল থেকে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। সব কিছু ঠিকঠাক চললে শনিবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাশে দেখা যাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। নেতাজি জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার কথা মমতারও। শেষবার ২০২০ সালে ১১ জানুয়ারি এক মঞ্চে দেখা গেছিল তাঁদের। কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের অনুষ্ঠানে। নেতাজি জয়ন্তীতে কলকাতা সফরে এসে এলগিন রোডে নেতাজি ভবনে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। এদিকে শনিবার বেলা ১২টার শ্যামবাজারে নেতাজী মূর্তির সামনে থেকে মেয়ো রোড পর্যন্ত মিছিল করবেন মমতা।