দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ শুভেন্দু অধিকারী-সহ একাধিক তৃণমূল বিধায়ক, সাংসদ, নেতাকে দলে এনেছেন অমিত শাহ। শনিবারও তিনি বলেছিলেন, বাংলার মুখই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাস্ত করবেন। রবিবারও তার অন্যথা হল না। তৃণমূলের বহিরাগত আক্রমণের ভিত্তিতে এবার অমিত শাহ ফের একবার জানিয়ে দিলেন, ‘বাংলা থেকেই কেউ হবেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী হবেন একজন বাঙালিই।’ এদিন বোলপুরে মেগা রোড শো’র পর সাংবাদিক বৈঠকে বঙ্গ ব্রিগেডের নেতাদের নাম করে-করে তিনি বলেন, ‘বাংলায় বিজেপির যে নেতারা রয়েছেন, তাঁরাই মমতা দি’কে হারানোর জন্য যথেষ্ট। বাংলা থেকেই কোনও বাঙালি মুখ্যমন্ত্রী হবেন।’
যদিও বহিরাগত ইস্যুতে এদিন মমতাকে কটাক্ষ করে অমিত শাহ বলেন, ‘মমতা দি যখন কংগ্রেসে ছিলেন, তখন ইন্দিরা গান্ধী এলে উনি কি বলতেন বহিরাগত? প্রণব মুখোপাধ্যায়, নরসীমা রাও এলে বলতেন বহিরাগত? এটা বাংলার সংস্কৃতি নয়। বাংলা অনেক উদার ভূমি। আমার মনে হয় ওঁর (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। জাতীয় দলের সংজ্ঞাই ভুলে গিয়েছেন ‘ যদিও এদিন ফের রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা, শিল্পক্ষরা, কর্মসংস্থান নিয়ে ফের মমতা সরকারকে বিঁধেছেন তিনি। অমিত শাহ বলেন, ‘মমতা দিদি, আপনি চিন্তা করবেন না, আপনার সরকার আর থাকবে না। বাংলার মানুষ আমাদের একটা সুযোগ দিন। আমরা ফের বাংলাকে সোনার বাংলা করার দিকে এগিয়ে যাব।’
অনেকের মতে, বাঙালি কৃষক বা বাউলের বাড়িতে পাত পেড়ে খেয়ে আদপে অমিত বঙ্গসমাজ এবং দেশের কৃষককুলকে একসঙ্গে বার্তা দিতে চাইছেন। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের অভিযোগ, তাঁদের ‘হিন্দুত্ব’ তত্ত্ব নিয়ে তৃণমূল কৌশলে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে বাঙালিদের মধ্যে। কিন্তু বিজেপির ‘হিন্দুত্ব’ বোধের সঙ্গে হিন্দু বাঙালির যে কোনও বিরোধ নেই, এ যাত্রার বঙ্গ-সফরে সেটাই হাতে-কলমে প্রমাণ করার উপর জোর দিয়েছেন অমিত।
তৃণমূল অবশ্য নিশ্চিত, বিজেপির ‘বহিরাগত’ নেতারা হাজার চেষ্টা করলেও কোনও দিন বাঙালির মন জয় করতে পারবে না। দলের সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার এদিন বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে বলেন, ‘একটা হোর্ডিং-এ দেখলাম, রবীন্দ্রনাথের ছবির উপরে বিজেপি নেতার ছবি! এই অপমান বাঙালি সহ্য করবে না।’
দল ভাঙানো নিয়ে তৃণমূলের কটাক্ষ, ‘এত দিনেও বিজেপি এ রাজ্যে নেতা তৈরি করতে পারলেন না। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সুশৃঙ্খল দল তৈরি করেছেন, সেখান থেকে নেতা ধার নিতে হচ্ছে।’ তাঁদের দাবি, মমতার নাম করে কিছু নেতা বেআইনি ভাবে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন। সেই নেতাদেরই ভয় দেখিয়ে দলে টানার চেষ্টা করছে বিজেপি।
বোঝাই যাচ্ছে, বিধানসভা ভোটের মুখে অমিত শাহের প্রতিটি বঙ্গ সফর ঘিরে রাজনৈতিক মহলে পারদ চড়ছে রীতিমতো। আদৌ তিনি বাঙালির মনের কতটা কাছাকাছি আসতে পারবেন সেই দিকেই চোখ থাকবে রাজ্য রাজনীতির কুশীলবদের।