তৃণমূলের চাপে পিছুহটল বিজেপি, পরিবর্তন হল সভাস্থল

0
1718

দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: রবিবার সকাল থেকে টান-টান উত্তেজনার মধ্যে ,দফায় দফায় রুদ্ধদ্বার বৈঠক তারপর এক মাঠ ছেড়ে অন্য মাঠে ছুটতে দেখা গেল বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে৷তার মাথা ব্যাথার কারণ , ২ ফেব্রুয়ারি প্রধান মন্ত্রীর সভার প্রয়োজনীয় মাঠ নির্ধারন করা এবং আইনত ভাবে মাঠ নিতে হবে ৷আর এই মাঠ না পাওয়ার জন্যই একের পর এক ,দিন পরিবর্তন হত্তয়ায় পিছিয়ে যাচ্ছে মোদীর সভা। যদিও এদিন তিনি সাংবাদিকদের কে বলেন শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ঠাকুরনগরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷এখানে এই সভায় কোন বিজেপি দলীয় পতাকা নিয়ে কোন কর্মী সমর্থক এই সভায় যোগ দেবেন না৷ এমনই দাবি এই সভার অন্যতম উদ্যোক্তা মতুয়া মহাসঙ্ঘের কর্মকর্তা শান্তনু ঠাকুরেরও ।

তিনি বলেন এখানে প্রধানমন্ত্রীর সভা কোথায় হবে সেটা খতিয়ে দেখার জন্য রবিবার সকালে ঠাকুর বাড়িতে আসেন বিজেপি নেতা মুকুল রায় । বিজেপি জেলা সভাপতি প্রদীপ ব্যানার্জি সহ মঞ্জুল কৃষ্ণ ঠাকুরের ছোট ছেলে শান্তনু ঠাকুর এবং অন্যান্য হাতেগোনা কয়েকজন বিজেপি নেতা৷ বিভিন্ন মাঠ ঘুরে শেষে সিদ্ধান্ত হয় ঠাকুরবাড়ি সংলগ্ন মাঠেই হবে সভা৷ এদিন ঠাকুরবাড়িতে একান্ত বৈঠক করেন পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মুকুল রায় বলেন বিভিন্ন দেশ থেকে উদ্বাস্তু হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া হিন্দু নাগরিকদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য লোকসভা এবং রাজ্যসভায় বিল আসছে এ ব্যাপারে নরেন্দ্র মোদি বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন কংগ্রেস তৃণমূল সহ সমস্ত বিরোধীরা এককাট্টা হয়ে নরেন্দ্র মোদির সরকারের বিরোধিতা শুরু করেছে এতে আখেরে কোন লাভ হবে না কারণ কেন্দ্রের বিজেপি সরকার জনস্বার্থে কাজ করছে এদিন সকালে ঠাকুরবাড়ি সংলগ্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায় সেখানে মূলত দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন শান্তনু ঠাকুরের লোকজন

উল্লেখ্য ২৮ জানুয়ারি থেকে ৫ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মমতা বালা ঠাকুরের নেতৃত্বে সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘ ঠাকুরবাড়িতে ঠাকুর বাড়ি সংলগ্ন মাঠে একটি ধর্মীয় সভা করবে বলে প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমোদন নেয় ৷এর পাশাপাশি শান্তনু ইতিমধ্যে আলাদাভাবে মতুয়া মহাসঙ্ঘের সভা করার জন্য সেখানে অনুমোদন পেয়েছে আর এই নিয়েই ঠাকুরবাড়িতে চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়েছে ফলে প্রধানমন্ত্রীর ঠাকুর বাড়িতে আসা কে কেন্দ্র করে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে এদিন সকালে তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তিনি ঠাকুর বাড়িতে যান নি শেষ খবর পাওয়া অনুযায়ী তিনি গাইঘাটা এলাকায় বিশেষ বৈঠক করছেন দলীয় কর্মীদের নিয়ে৷

আগামী ২ ফেব্রুয়ারি গাইঘাটা থানার ঠাকুরনগরে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে রাজ্য জুড়ে তিনশোর বেশি জনসভা করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে রাজ্য বিজেপি সূত্রে৷ রথযাত্রার ঘাটতি পূরণই এক্ষেত্রে বিজেপির মূল বিষয়৷ পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি মেনে আগামী ২ ও ৮ ফেব্রুয়ারি রাজ্যে জনসভা করতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী৷ যার একটি রয়েছে বনগাঁ মহকুমার গাইঘাটা থানার ঠাকুরনগরে৷ সেখানে সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘের ডাকে জনসভার আয়োজন হয়েছে৷ যার মূল উদ্যোক্তা ঠাকুর পরিবারের সদস্য তথা বড়মা বীণাপাণি দেবীর নাতি শান্তনু ঠাকুর৷

আর তিনি দাবি করেছেন, ঠাকুরনগরের জনসভায় যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বড়মার সঙ্গেও দেখা করবেন৷ তবে বড়মাকে মঞ্চে নিয়ে যাবার কোনও কর্মসূচি নেই৷ প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাড়িতে এসেই বড়মার সঙ্গে দেখা করবেন৷ বড় মায়ের কাছে প্রধান মন্ত্রী আসছেন জেনে খুশি মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ৷দশ দফা দাবী নিয়ে প্রধান মন্ত্রীর মন্ত্রকে গিয়েছিল মতুয়া মহা সংঘ সেই দাবী পূরণের সদ্বিচ্ছা জানিয়ে,প্রধান মন্ত্রী বড় মায়ের সাথে দেখা করতে আসছেন৷ বড় মায়ের ছোট নাতি শান্তনু ঠাকুরের কথায় আমি রাজনীতি বুঝিনা, মতুয়া মহাসংঘের মানুষদের প্রয়োজন মিটুক,সেটাই চাই,

বড় মায়ের কাছে প্রধান মন্ত্রী আসছেন জেনে খুশি মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ৷দশ দফা দাবী নিয়ে প্রধান মন্ত্রীর মন্ত্রকে গিয়েছিল মতুয়া মহা সংঘ সেই দাবী পূরণের সদ্বিচ্ছা জানিয়ে,প্রধান মন্ত্রী বড় মায়ের সাথে দেখা করতে আসছেন৷ শান্তনু ঠাকুরের কথায়,

ধর্মের মধ্যে রাজনীতি আমি চাইনা৷ অন্যদিকে তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে ,এই সভাতে পৌঁছনোর রাস্তায় মোদীকে কালো পতাকা দেখানো হবে৷ শুধু তাই নয়, মোদীর সভার আগের দিন অর্থাৎ ১লা ফেব্রুয়ারি এলাকায় বড় মিছিল করবে তৃণমূল সূত্রের খবর৷ বিজেপি যাতে কোনও প্রকারেই তৃণমূলের এই ভোটবাক্সে থাবা বসাতে না পারে সেটি দেখছেন স্বয়ং জ্যোতিপ্রিয়বাবু নিজে৷ মতুয়াদের সঙ্গে তো বটেই মাঝে মধ্যেই তিনি সংঘের বড়মা বীণাপাণি দেবীর শারীরিক হাল-হকিকত জানতে হাজির হয়ে যান হাবরার বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী৷ তবে শান্তনু ঠাকুর দাবি করলেই যে তা পূরণ হবে তা একেবারেই নয়৷ কারণ প্রধানমন্ত্রী কোথায় যাবেন তা প্রটোকল মেনে ঠিক হয়৷ যার পুরোটাই দেখেন প্রধানমন্ত্রীর দফতর৷ তাই মতুয়া মহাসংঘের বড়মার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের বিষয় নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা৷ যদিও রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়বাবুর দাবি, ‘‘সে অনুমতির চিঠি আসলেও কোনও লাভ হবে না৷ কারণ বড়মা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন না৷’’

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই দলের নেতা-নেতৃদের জানিয়ে দিয়েছিলেন বিজেপি যেখানে সভা করবে সেখানে পাল্টা সভা করবে তৃণমূল কংগ্রেস৷ বিজেপির রথযাত্রার পাল্টা তৃণমূলের পবিত্র যাত্রা করার কথাও ঘোষণা করা হয়েছিল৷ যদিও বিজেপির যেই রথযাত্রা কর্মসূচি শেষমেশ বাতিল হয়৷ তাই তৃণমূলের আর পবিত্র যাত্রা করার প্রয়োজন পড়েনি৷ তবে এইবার মোদীর জনসভার মোকাবিলায় নেমেছে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব৷

এই মাঠে হবে সভা

গাইঘাটার প্রবীন তৃণমূল নেতা গোবিন্দ দাস বলেন, ধর্ম নয় আসলে মতুয়াদের ভোট বাক্সে চোখ পড়েছে মোদীর, সতর্ক আছে তৃণমূল। আমি নিজেই মতুয়া আর আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মতুয়াদের কে সর্বক্ষণ সর্বত ভাবে আগলে রাখেন, তাই তাঁদের মোদীর কোন সাহায্যের প্রয়োজন নেই। এদিকে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে ঠাকুরবাড়ি সংলগ্ন যে মাঠে ২ফেব্রুয়ারি প্রধান মন্ত্রীর সভা হওয়ার কথা,সেই মাঠে ২৮ জানুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সারাভারত মতুয়া মহাসংঘের মমতা বালা ঠাকুরের গোষ্ঠীর একটি ধর্মীয় সভা হওয়ার কথা। তাঁর জন্য সরকারী অনুমোদনও দিয়ে দেওয়া হয়েছে৷

মুকুল রায়ের সাথে আলাপচারিতায় মঞ্জুল

রবিবার শান্তনু ঠাকুরের নেতৃত্বে, মুকুল রায়কে সাথে নিয়ে এলাকা পরিদশর্ন করে স্থির হয়েছে ঠাকুর বাড়ির পার্শ্বস্থ অন্য একটি মাঠে সভা হবে , আর সেখানেই আসবেন প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সভাথেকে কিছুটা দূরেই একটি মাঠে হেলিপ্যাড তৈরীর অনুমতি পেয়েছে বলে জানান বিজেপি জেলা সভাপতি প্রদীপ ব্যানার্জি।যদিও মঞ্জুল কৃষ্ণ ঠাকুরের কথায় ঠাকুর নগরে নরেন্দ্র মোদীর সভার আয়োজনে নেই রাজ্য বিজেপি৷ এখানে সভার আয়োজন করছে সারা ভারত মতুয়া সঙ্ঘের তরফে তার ছোট ছেলে শান্তনু ঠাকুর।অন্য দিকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি,তথা হাবরার বিধায়ক ও খাদ্য মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক চ্যালেঞ্জের সাথে বলেন বড়মা দেখাই করবেন না প্রধান মন্ত্রীর সাথে।

হেলি প্যাডের জন্য মাঠ পরি দর্শনে মুকুল রায়,

মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান উপদেষ্টা বীণাপানি দেবী।

কার্যত তৃণমূলের চাপেই মোদীর সভাস্থল পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে বিজেপি বললেন গাইঘাটার প্রবীন নেতা গোবিন্দ দাস।

Previous articleঠাকুরনগরে মোদীর সভাকে কেন্দ্র করে মুকুলের রুদ্ধদ্বার বৈঠক ঠাকুর বাড়িতে
Next articleজবি-কোলাডো ম্যাজিকে মশাল জ্বলল ডার্বির যুবভারতীতে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here