সিবিআই তদন্তে আবশ্যক রাজ্যের সম্মতি,রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট

0
1111

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের এক্তিয়ার নিয়ে প্রায়শই প্রশ্ন ওঠে। বিরোধীরা অভিযোক করে কেন্দ্রীয় সরকার নিজেদের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে সিবিআই লেলিয়ে দেয়। এমন পরিস্থিতিতে  সুপ্রিম কোর্ট এক ঐতিহাসিক রায় দিল, যা স্বস্তি দেবে দেশের বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিকে।  বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দিয়েছে,  রাজ্যের সম্মতি ছাড়া কোনও তদন্তে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই৷ তাই সিবিআই তদন্তের জন্য এখন সংশ্লিষ্ট রাজ্য থেকে অনুমতি নেওয়া এবার থেকে বাধ্যতামূলক। 

শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশ বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির কাছে যেমন স্বস্তির, সেরকমই তা বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বড় ধাক্কা৷ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের অপব্যবহারের অভিযোগ বারবারই তুলেছে বিরোধীরা৷ এই পরিপ্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালতের এই রায় যথেষ্টই তাৎপর্য্যপূর্ণ৷

উত্তরপ্রদেশের সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত একটি মামলায় এই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷ রায়ে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, ‘‌আইন অনুযায়ী, রাজ্যের সম্মতি ছাড়া সিবিআইকে কোনও মামলায় যুক্ত করতে পারে না কেন্দ্র৷ এ বিষয়ে রাজ্যের সম্মতি বাধ্যতামূলক৷ সংবিধানে উল্লিখিত যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই এই আইন তৈরি করা হয়েছে৷’‌ শীর্ষ আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে, রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া কোনও মামলায় সিবিআইয়ের তদন্তের পরিধিও বাড়াতে পারবে না কেন্দ্রীয় সরকার৷

২০১৯ সালের আগস্ট মাসে এলাহাবাদ হাইকোর্টের দেওয়া একটি মামলার রায়ের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা দায়ের করা হয়েছিল৷ সেই মামলাতেই এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷ একটি বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে কয়লা বিক্রির ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল৷ ওই মামলায় রাজ্য সরকারের দুই অফিসারেরও নাম জড়ায়৷ ওই সংস্থায় আচমকা হানা দিয়ে সিবিআই জানতে পারে, কোল ইন্ডিয়ার থেকে চুক্তির ভিত্তিতে পাওয়া কয়লা কালো বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে৷

সিবিআইয়ের পদক্ষেপের বিরোধিতা করে ওই অভিযুক্ত অফিসার আদালতের দ্বারস্থ হন৷ তাঁদের দাবি ছিল, সিবিআই তদন্তের জন্য রাজ্য সরকার যে সাধারণ সম্মতি দিয়ে রেখেছে, তা যথেষ্ট নয়৷ এই ধরনের তদন্ত করার জন্য রাজ্যের থেকে সিবিআইয়ের আলাদা করে অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন৷ এলাহাবাদ হাইকোর্ট এই মামলার রায় দিতে গিয়ে জানিয়েছিল, রাজ্য সরকার সিবিআইকে যে সাধারণ সম্মতি দিয়ে রেখেছিল, সেটাই যথেষ্ট৷ পরে ওই দুই অফিসারের নাম চার্জশিটেও রাখা হয়৷ যদিও, এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই দুই সরকারি অফিসার৷

পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগড়, কেরল, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব এবং মিজোরাম– সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতে গেলে তাদের অনুমতি বাধ্যতামূলক করেছে বিরোধী শাসিত এই আটটি রাজ্য৷ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এ এম খানউইলকর এবং বিচারপতি বি আর গভাই দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এস্ট্যাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট এর কথা উল্লেখ করে এই রায় দিয়েছেন৷ এই আইনের দ্বারাই সিবিআইকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়৷

Previous articleকলকাতার রাস্তায় সিমেন্টের বস্তাবন্দি তরুণীর দেহ উদ্ধার
Next articleশুভেন্দুর সভার আগেই পোস্টার যুদ্ধে সরগরম রামনগর এলাকা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here