দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা আগের থেকে সঙ্কটজনক। চিকিৎসায় কোনো ভাবেই সাড়া মিলছে তাঁর। মস্তিষ্ক অচল হয়ে গিয়েছে, তার সঙ্গে মাল্টি অর্গান ফেলিওর। রবিবার ভোর বেলা হাসপাতালে পৌঁছেছেন মেয়ে পৌলমী বোস।
দীপাবলির সন্ধ্যাতেই এসেছিল খারাপ খবর। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় চিকিৎসায় আর বিশেষ সাড়া দিচ্ছেন না। তাঁর একাধিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাজ করছে না। রাতে সেই অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে।
বেলভিউ হাসপাতাল সূত্রে খবর, ইউজি রিপোর্টে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কের স্নায়ুর কোনও সচলতা দেখা যাচ্ছে না। গ্লাসগো কোমা সেল অনুযায়ী তাঁর মস্তিষ্কের স্নায়ুর সূচক ৪-এর নীচে নেমে গিয়েছে। তবে ব্রেন ডেথ হয়েছে কিনা সে বিষয়ে এখনও হাসপাতালের তরফে কিছু জানানো হয়নি। তাঁর শরীরের রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে স্বাস্থ্য ভবনে। সেখানকার ৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল তা খতিয়ে দেখছেন বলে খবর।
শনিবার রাত ৯ টা নাগাদ মেডিকেল বুলেটিনে ডাঃ অরিন্দম কর জানান, “গত ২৪-৩০ ঘণ্টায় তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনিত হয়েছে। শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক। তাঁকে সুস্থ করে তোলার জন্য সব রকম ‘সাপোর্ট’ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাঁর শরীর কিছুতেই সাড়া দিচ্ছে না।”
ডাঃ কর আরও জানান, “চিকিৎসকদের বিভিন্ন রকম চেষ্টা সত্বেও তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। গত প্রায় ৪০ দিন ধরে তাঁরা চেষ্টা চালিয়েছেন। বিভিন্ন রকম চিকিৎসা পদ্ধতিতে তাঁর চিকিৎসা করা হয়েছে। স্টেরয়েড, প্লাজমা থেরাপি, করা হয়েছে। চিকিৎসকদের বড় দল তাঁকে সুস্থ করে তোলার জন্য কাজ করেছে। স্নায়ু, নেফ্রোলজি, কার্ডিওলজি, সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। সরকার এবং বেসরকারি- সব স্তরের চিকিৎসকেদের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। তবে আমরা গভীর দুঃখের সঙ্গে বলতে চাই, তাঁর শরীর চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছে না। তাঁর পরিবারের সদস্যদের এ ব্যাপারে জানানো হয়েছে। তাঁদের সব ব্যাখ্যা করেছি। সৌমিত্রবাবুর শারীরিক অবস্থা নিয়ে তাঁরা চিন্তিত, উদ্বিগ্ন। তাঁরা বুঝতে পেরেছেন পুরো বিষয়টি। তবে আমরা শেষ চেষ্টা করছি।”
তিনি বলেন, “অনেক সময় মিরাকেলও কাজ করে না। এটা বলতে খুব খারাপ লাগছে কালীপুজোর দিনে। আপনাদের প্রার্থনায় তিনি সেরে উঠবেন আশা করি। তবে এখন তেমন পরিস্থিতি নয়।”
চিকিৎসকদের বয়ান অনুযায়ী, কেবল হার্ট নয়, কিডনিও অবস্থাও বিশেষ ভাল নেই ফেলুদার। প্রথমবার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে আলাদা যন্ত্রের ব্যবহারে। বৃহস্পতিবার তাঁর প্লাজমাফেরেসিস সফলভাবেই হয়েছিল। অবস্থা স্থিতিশীলই ছিল। কিন্তু পরের দিন হঠাৎ অনিয়মিত হয়ে পড়ে হৃদস্পন্দন। সৌমিত্রের মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান চিকিৎসক অরিন্দম কর জানান, অভিনেতার মস্তিষ্কের স্নায়ুর সচেতনতা অর্থাৎ গ্লাসগো কোমা স্কেল প্রায় ৫ এসে দাঁড়িয়েছে। এদিন ডাঃ কর-র কন্ঠে যথেষ্ট উদ্বেগ শোনা গেছে।