হাথরাস কাণ্ডের প্রতিবাদে পথে নামছেন মমতা, শনিবার বিকেলে কলকাতায় মিছিল

0
366

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে এক দলিত তরুণীর গণধর্ষণ ও মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল দেশ। গতকালই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে পাঠানো হয় হাথরাসে। কিন্তু তাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এবার এই কাণ্ডের প্রতিবাদে পথে নামতে চলেছেন মমতা। আগামী কাল বিকেলে কলকাতায় মিছিল করবেন তৃণমূল নেত্রী।

আগামীকাল অর্থাৎ শনিবার বিকেল ৪টের সময় শুরু হবে এই মিছিল। জানা গিয়েছে বিড়লা প্ল্যানেটরিয়াম থেকে গান্ধী মূর্তি পর্যন্ত হবে এই মিছিল। সেখানে তৃণমূল সুপ্রিমো ছাড়াও তৃণমূলের সব নেতা-মন্ত্রীরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গিয়েছে। হাথরাসে নির্যাতিতার ন্যায় বিচারের দাবিতে ও যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসনের বিরুদ্ধে পথে নামছে তৃণমূল। এই বিক্ষোভকে বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে। স্থানীয় প্রশাসনকে সেই দায়িত্ব নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

  • উত্তরবঙ্গ সফরের শেষ দিনে হাথরসের ঘটনা নিয়ে বিজেপি এবং যোগী আদিত্যনাথের সরকারকে চড়া সুরেও বিঁধেছেন তিনি।
  • শনিবার বিকেল চারটেয় কলকাতায় হাথরসকাণ্ডের প্রতিবাদে বিড়লা তারামণ্ডল থেকে গান্ধী মূর্তি পর্যন্ত মিছিল করবেন তিনি।
  • গতকালই মুখ্যমন্ত্রী হাথরাসের ঘটনা নিয়ে টুইটারে লেখেন, ‘একটি দলিত তরুণীকে কেন্দ্র করে হাথরাসের বর্বরোচিত ঘটনার নিন্দা করার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।’

এদিকে শুক্রবার সকালেই তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দল হাথরাসের উদ্দেশে রওনা দেয়। সেই প্রতিনিধি দলে ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন, সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার ও প্রতিমা মণ্ডল এবং প্রাক্তন সাংসদ মমতা ঠাকুর।

দিল্লি থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার যাত্রা করার পরে হাথরাস ঢোকার মুখে ঠিক দেড় কিলোমিটার আগে থামিয়ে দেওয়া হয় এই প্রতিনিধি দলকে। সেখানে মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশবাহিনী। তৃণমূল প্রতিনিধিরা পুলিশকে জানান, তাঁরা শুধুমাত্র নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে ও তাঁদের সমবেদনা জানাতে যাচ্ছেন। কিন্তু তাতেও যাওয়ার অনুমতি তাঁদের দেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ।

তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের তরফে জানানো হয়েছে, “আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে হাথরাসে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে ও তাঁদের সমবেদনা জানাতে যাচ্ছিলাম। সব নিয়ম মেনে আলাদা আলাদা ভাবে আমরা যাত্রা করছিলাম। আমাদের হাতে অস্ত্রও ছিল না। তাহলে আমাদের কেন আটকানো হল? এটা কী ধরনের জঙ্গল রাজ যেখানে একটি নির্যাতিত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার আগে সাংসদদের আটকে দেওয়া হচ্ছে। আমরা এই মুহূর্তে নির্যাতিতার বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে রয়েছি। 

আমরা পুলিশকে জানিয়েছিলাম হেঁটেই যাব। তাও যেতে দেওয়া হয়নি।”সূত্রের খবর, পুলিশের বাধা টপকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশে সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের। তাতে মাটিতে পড়ে যান রাজস্যভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন। এই ঘটনার পরে রাস্তাতেই বসে পড়েন তৃণমূল প্রতিনিধিরা। সেখানেই তাঁরা শুরু করেন ধর্না। তারপরে হাথরাস থানায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে যান মমতা ঠাকুর ও প্রতিমা মণ্ডল।

এদিন সন্ধ্যার দিকে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েনের তরফে জানানো হয়, তাঁরা আবেদন করেছিলেন তৃণমূলের দুই মহিলা প্রতিনিধি নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন। কিন্তু সেই অনুমতিও দেওয়া হয়নি পুলিশের তরফে। উলটে মহিলা প্রতিনিধিদের হেনস্থা করে পুরুষ পুলিশ আধিকারিকরা। তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের দুই সাংসদ মমতা ঠাকুর ও প্রতিমা মণ্ডল আজ রাতের বিমানেই কলকাতা ফিরে আসছেন।

বাকি দুই প্রতিনিধি অর্থাৎ কাকলি ঘোষ দস্তিদার ও ডেরেক নিজে এই মুহূর্তে দিল্লিতে রয়েছেন। এবার রাজ্যে প্রতিবাদ শুরু করতে চলেছে তৃণমূল। আর তার নেতৃত্ব দেবেন মমতা নিজে।

এদিন তৃণমূল বিধায়কদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেছিলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সেখানে ৩-১২ অক্টোবরের মধ্যে মধ্যে প্রত্যেক বিধানসভায় কর্মী সম্মেলন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শনিবার প্রত্যেক জেলা সভাপতিকে মুখপাত্রদের সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করারও নির্দেশ দিয়েছেন নেতৃত্ব। অপরদিকে, নতুন কৃষি আইন ও উত্তরপ্রদেশে দলিতদের গণধর্ষণ ও হত্যা এবং তৃণমূল সাংসদ পুলিশি হেনস্থার প্রতিবাদে পুজোর আগে পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে বিধানসভায়, ব্লকে ব্লকে আন্দোলন সংগঠিত করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Previous articleহাথরস তদন্তে বেনজির অনিয়মের অভিযোগ,এসপি সহ ৫ পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করল যোগী সরকার
Next articleভাল আছি, জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here