দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ভারতের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে মে মাস থেকে সংঘাত চলছে চিনের। একের পর এক আলোচনার পরেও কোনও সমাধান বেরোচ্ছে না। সীমান্তে আগ্রাসী মনোভাবের জন্য লাল ফৌজকেই দায়ী করছে ভারত। এর মধ্যেই চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দাবি করলেন, চিন কোনও দেশের সঙ্গে ঠান্ডা যুদ্ধ বা যুদ্ধ চায় না। কোনও দেশের এলাকা অধিকার করে শান্তি ভঙ্গ করতে চায় না। উলটে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করতেই তৎপর তারা।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রপুঞ্জের ৭৫ তম সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে চিনের প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমরা ক্রমাগত আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই অন্য দেশের সঙ্গে ব্যবধান কমানো ও সমস্যা সমাধানের কাজ চালিয়ে যাব। আমরা চাই না কোনও দেশের এলাকা অধিকার করে তাদের শান্তি বিঘ্নিত করতে। কোনও দেশের প্রভাব বিস্তার করতে চাই না আমরা। কোনও দেশের সঙ্গে ঠান্ডা যুদ্ধ বা যুদ্ধ করার মানসিকতা আমাদের নেই।”
৪ জুলাই লাদাখ সফরে গিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, আগ্রাসনের যুগ শেষ হয়েছে। ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে যারা আগ্রাসনের চেষ্টা করে তারা নিজেরাই মুছে যায়। এই বক্তব্য চিনকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
চিনের রাষ্ট্রপতি হওয়ার পাশাপাশি চিনের সেনাবাহিনীর কম্যান্ডার ইন চিফও জিনপিং। নিজের বক্তব্যে তিনি বলেন, বন্ধ দেওয়ালের মধ্যে উন্নয়নে বিশ্বাসী নয় তাঁর দেশ। তিনি বলেন, “আমরা চাই আমাদের দেশের যা কিছু ভাল জিনিস তা গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ুক। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আদান প্রদানের মাধ্যমেই আরও বেশি সুযোগ তৈরি হবে। এর ফলেই চিন- সহ গোটা দুনিয়ার অর্থনৈতিক উন্নতি হবে।”
করোনাভাইরাস নিয়ে বিভিন্ন দেশ যে চিনের দিকেই আঙুল তুলেছে তারও জবাব দেন শি জিনপিং। তিনি বলেন, “এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে আমাদের একসঙ্গে লড়তে হবে। আমাদের বিজ্ঞানের নির্দেশ মানতে হবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গুরুত্বকে স্বীকার কররে হবে ও এই অতিমারীর বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়তে হবে। এই বিষয় নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।”
তার আগেই করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য চিনকে আরও একবার আক্রমণ করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, “যখন আমরা এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছি, তখন বিশ্বে এই ভাইরাসকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য চিনকে দায়ী করতে হবে।
চিন সরকার ও তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষণা করেছিল মানুষ থেকে মানুষে এই ভাইরাস ছড়ানোর কোনও প্রমাণ নেই, যা সম্পূর্ণ মিথ্যে। তারপরে তারা বলল, উপসর্গহীন আক্রান্তরা এই ভাইরাস ছড়াতে পারে না, সেটাও মিথ্যে। এভাবে মিথ্যে বলার জন্য চিনকে দোষী সাব্যস্ত করা উচিত রাষ্ট্রপুঞ্জের।”
একদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ, অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাত আন্তর্জাতিক বিশ্বে বারবার কোণঠাসা হচ্ছে চিন। তার মাঝেই নিজের বক্তব্যে সব অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। যদিও তাঁর এই দাবি কতটা কার্যকরী হয় এখন সেটাই দেখার বিষয়।