দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়ে চলায় ফের কড়া লকডাউন হতে চলেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায়। প্রশাসন সূত্রে একথা জানা গেছে। ১৪ দিনের জন্য লকডাউন হতে পারে জেলায়। এব্যাপারে ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নবান্নে প্রস্তাব পাঠান হয়েছে। তবে জেলাশাসকের নির্দেশে মঙ্গলবার সকাল থেকে কড়াকড়ি শুরু করেছে পুলিশ।
ইতিমধ্যেই জেলা সদর বারাসতের পাশাপাশি বনগাঁ, বসিরহাট, বিধাননগর ও ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসকদের কাছে এবং জেলা পুলিশ সুপার ও কমিশনারেটের আধিকারিকদের কাছে লিখিত নির্দেশিকা পাঠিয়ে দিয়েছেন জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী। নির্দেশিকা মতো মঙ্গলবার সকাল থেকেই পুলিশ বিভিন্ন দোকান বন্ধ করে দিয়েছে বিশেষ করে খাবারের দোকান, চায়ের দোকান এবং পান বিড়ি ও সিগারেটের দোকান।
দোকান বন্ধ করার সময় পুলিশের তরফে জানানো হয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাঁরা দোকানদারদের বুঝিয়ে সেগুলি বন্ধ করেছেন। দোকানদাররা অবশ্য প্রশাসনের সিদ্ধান্তে খুশি নন। তাঁদের কথায়, “দীর্ঘদিন ধরে লকডাউন চলায় রুটিরুজি বন্ধ ছিল। সপ্তাহ খানেক হল আমরা দোকান খুলেছি। আবার যদি দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে আমরা খাব কি!” ব্যবসায়ীরা এদিন দৃশ্যতই অখুশি ছিলেন।
নবান্নে পাঠানো প্রস্তাবে জেলা প্রশাসন চেয়েছে করোনা নিয়ন্ত্রণে জেলার সবকটি বাজার ও মাছের বাজার বন্ধ রাখা হোক। তবে মুদিখানার দোকান এবং যাঁরা একক ভাবে বাজার ও মাছ বিক্রি করেন তাঁদের সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তা খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হবে। ই-কমার্সে ছাড় দেওয়া হলেও চায়ের দোকান বন্ধ রাখা হবে। অটো ও টোটো থেকে বাস – সব ধরনের গণপরিবহণ ফের বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে তবে জরুরি পরিষেবা দেওয়ার জন্য এগুলি চালানো যেতে পারে। পণ্যবাহী গাড়িকে ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
অফিস থেকে কারখানা এবং যে কোনও শিল্পোৎপাদন ক্ষেত্র ২০ শতাংশ পর্যন্ত কর্মী নিয়ে চালু রাখা যেতে পারে। ব্যাঙ্ক, এটিএম, টেলিকম-সহ পেট্রোল পাম্প, দমকলের মতো বিভিন্ন জরুরি পরিষেবা চালু থাকবে। পণ্যবাহী বিমান চলাচল বাদে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর পুরোপুরি বন্ধ রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ধর্মীয় স্থান সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ঠিকাকর্মীদের দিয়ে নির্মাণকাজ চালু রাখা যেতে পারে তবে সে ক্ষেত্রে শুধুমাত্র স্থানীয় লোকজনকে দিয়েই কাজ করানো যাবে। শহর ও গ্রামাঞ্চলে মাস্কের ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব কঠোর ভাবে বজায় রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রস্তাবে জানানো হয়েছে, এব্যাপারে ব্যারাকপুর ও বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার, বারাসত পুলিশ জেলা, বনগাঁ পুলিশ জেলা, বসিরহাট পুলিশ জেলা ও বনগাঁ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার, উত্তর ২৪ পরগনা ও বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।