দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দেশে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াই চলছে। টানা লকডাউনের শেষে আনলক পর্বে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ছাড় মিললেও দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এরই মধ্যে সীমান্তে ভারত-চিন সংঘাতের পরিস্তিতি। চিন্তা পাকিস্তনকে নিয়েও। এমন আবহেই রবিবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাইসিনা হিলসের পক্ষে জানানো হয়েছে এদিনের আলোচনায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যু ছিল।
রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে বৈঠকের একটি ছবি টুইট করা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, প্রায় ৩০ মিনিট ধরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন রাষ্ট্রপতি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে ঠিক কী কী বিষয়ে আলোচনা সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি।
Prime Minister @narendramodi called on President Kovind and briefed him on the issues of national and international importance at Rashtrapati Bhavan today. pic.twitter.com/yKBXCnfboE
— President of India (@rashtrapatibhvn) July 5, 2020
লাদাখে প্রধানমন্ত্রীর আচমকা সফরের পরে এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। ভারত-চিন সীমান্ত সংঘাতের আবহে একের পর এক সামরিক স্তরের বৈঠকে যখন কোনও সমাধান সূত্র বের হচ্ছে না তখনই শুক্রবার সকলকে চমকে দিয়ে লাদাখে চলে যান নরেন্দ্র মোদী। ১৪ কোরের অন্তর্গত নিমু ফরওয়ার্ড পোস্টে গিয়ে জওয়ানদের সঙ্গে সময় কাটান। জওয়ানদের উদ্দেশে বক্তব্য পেশ করেন। তাঁদের উদ্বুদ্ধ করেন। আর তখনই নাম না করে চিনকে কড়া বার্তাও দেন নরেন্দ্র মোদী।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের পরেই ভারতীয় সেনার তৎপরতাও বেড়েছে লাদাখ সীমান্তে। মোদী যান শুক্রবার। আর শনিবারই দিনভর চিনা সীমান্তের গাঁ ঘেষা ভারতীয় বায়ুসেনা ফরওয়ার্ড এয়ারবেসে তৎপরতা শুরু করেছে। একদিকে যখন উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়ছে গালওয়ান উপত্যকায় নিজেদের গতিবিধি বাড়াচ্ছে চিন, অন্যদিকে তখন প্রস্তুতি সেরে রাখছে ভারতও। লাদাখের আকাশে দেখা যাচ্ছে ভারতীয় যুদ্ধবিমানের মহড়া। চিনকে বার্তা দিচ্ছে ভারতীয় বায়ুসেনা, ‘তৈরি আছি আমরা’।
রাশিয়ায় তৈরি সুখোই-৩০ এমকেআই ও মিগ-২৯ বিমানের গতিবিধি দেখা যাচ্ছে আকাশে। এছাড়া মালবাহী বিমান আমেরিকার সি-১৭ ও সি-১৩০জে এবং রাশিয়ায় তৈরি ইউশিন-৭৬ ও আন্তোনভ-৩২ প্রতিদিনই সেনার জন্য সরঞ্জাম পৌঁছে দিচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। এছাড়া দরকার পড়লে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সেনা মোতায়েনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারবে এই বিমানগুলি।
সীমান্ত লাগোয়া ক্যাম্পগুলিতে প্রস্তুতি রয়েছে চরমে। তৈরি রয়েছে আমেরিকায় তৈরি অ্যাটাক চপার অ্যাপাচেও। সবথেকে সামনের বেসে তাদের রাখা হয়েছে। দরকার পড়লে সবার আগে ঝাঁপিয়ে পড়বে তারা। পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় এই অ্যাপাচে ও চিনুক যুদ্ধবিমানের উপরেই ভরসা রাখছে ভারত।
শুধু চিনের উপরেই নয়, পাকিস্তানের উপরেও কড়া নজর রাখতে হচ্ছে। কারণ, ইতিমধ্যেই গিলগিট, বালটিস্তানে সেনা বাড়াচ্ছে পাকিস্তান। এমনই এক পরিস্থিতির মধ্যে রবিবার রাষ্ট্রপতি ভবনে হওয়া শীর্ষ বৈঠক নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।